Translate

দেওয়ানী কার্যবিধি-১৯০৮

বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ধারার বিষয় আলোচনা
দেওয়ানী কার্যবিধি-১৯০৮

ধারা-২: সংজ্ঞা।
ধারা ২ (১): বিধি (Code)
ধারা ২ (২): ডিক্রি।
ধারা ২(৩): ডিক্রিদার (Decree holder): 
ধারা ২ (৪): জেলা (District)
ধারা ২ (৫): বিদেশী আদালত (Foreign Court)
ধারা ২ (৬): বিদেশী রায় (Foroign Judgment)
ধারা ২ (৭):  সরকারি উকিল (Government Ploader)
ধারা ২ (৮):  বিচারক (Judge)  
ধারা ২(৯) রায় (Judgment), 
ধারা ২ (১০): দায়িক (Judgment debtor): 

ধারা- ২ (১১): বৈধ প্রতিনিধি ( Legal Representative) 
ধারা- ২ (১২): অন্তবর্তীকালিন মুনাফা (Mesne Profit)

ধারা ২(১৩): অস্থাবর সম্পত্তি (Movable Property)
ধারা- ২ (১৪): আদেশ (Order)
ধারা ২(১৫): উকিল ( Pleader)  
ধার ২(১৭): সরকারি কর্মকর্তা (Public Officer)
ধারা ২(১৮): বিধিমালা (Rules)  
ধারা  ২(১৯): কপোরেশনের শেয়ার (Share in Corporation)
ধারা ২(২০):  স্বাক্ষরিত (Signed)

দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার: ধারা ৬,৯,১৫      
দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ারকে নিম্ন বর্ণিত ভাবে বিভক্ত করা যায়ঃ
১। বিষয়গত এখতিয়ার, ধারা: ৯
২ । আর্থিক এখতিয়ার, ধারা: ৬
৩। আঞ্চলিক এখতিয়ার, ধারা ১৬ থেকে ২০
৪। আদি এখতিয়ার,
৫ । আপিল এখতিয়ার,


যদি পরীক্ষা প্রশ্ন করা হয় এখতিয়ার কত প্রকার, তখন বলতে হবে এখতিয়ার তিন প্রকার। যথা:

১। বিষয়গত এখতিয়ার। ধারা: ৯
২ । আর্থিক এখতিয়ার। ধারা: ৬
৩। আঞ্চলিক এখতিয়ার। ধারা ১৬ থেকে ২০

দেওয়ানী প্রকৃতির মোকদ্দমার অর্থ: ৯
ধারা-৯: নিষেধ না থাকলে আদালত সকল প্রকার দেওয়ানী মামলার বিচার করবেন। (Right to Property or Right to Office) 
আদালতের (এখানে বর্ণিত বিধানাবলী সাপেক্ষে) সকল দেওয়ানী প্রকৃতির মামলা বিচার করার এখতিয়ার থাকবে, কেবল সে সকল মামলা ব্যতিত যেগুলির বিচারার্থে গ্রহণ (cognizance) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বারিত হয়েছে।
ব্যাখ্যাঃ যে মামলায় সম্পত্তি বা পদের অধিকার সম্পর্কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়, সে মামলা দেওয়ানী প্রকৃতির, যদিও অধিকার সম্পূর্ণরূপে ধর্মীয় আচার বা উৎসব সম্পৰ্কীত প্রশ্নের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করতে পারে।
যখন কোন মামলা সম্পত্তি বা পদের অধিকার সম্পর্কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় এবং উক্ত অধিকার যদি ধৰ্মীয় আচার বা আনুষ্ঠানিক বিষয়ক প্রশ্নের মীমাংসার উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করলে ও তা দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা।
সুতরাং মামলার বিষয়বস্তু দেওয়ানি প্রকৃতির না হলে দেওয়ানি আদালতে উক্ত মামলার বিচার করা যাবে না।


দেওয়ানি আদালতসমূহের এখতিয়ার: ধারা ৬,৯,১৫ 
ধারা ৬। আর্থিক এখতিয়ারঃ
অন্যত্র সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত না থাকলে। ধারা ৬ অনুসারে, কোন আদালত তার জন্য নির্ধারিত আর্থিক এখতিয়ারের বাইরে বেশি মূল্য সম্পন্ন বিষয়বস্তু বিষয়ক মামলার বিচার করবে না।
১। সহকারী জজ আদালতের আর্থিক এখতিয়ারঃ ২,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত (দুই লক্ষ টাকা।
[কিন্তু ২০১৬ সালের সংশোধনীর পর সহকারী জজের বর্তমান আর্থিক এখতিয়ার ১৫,০০,০০০ (পনের লক্ষ) টাকা পর্যন্ত। (সিভিল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৮৮৭ এর ধারা ১৯)]

২. সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের আর্থিক এখতিয়ারঃ ২,০০,০০১ টাকা থেকে ৪,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত (দুই লক্ষ এক টাকা থেকে চার লক্ষ টাকা পর্যন্ত)। 
[কিন্তু ২০১৬  সালের সংশোধনীর পর সিনিয়র সহকারী জজের বর্তমান আর্থিক এখতিয়ার ১৫,০০০০০১ (পনের লক্ষ এক) থেকে ২৫,০০,০০০ (পঁচিশ লক্ষ) টাকা পর্যন্ত। ✓সিভিল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৮৮৭ এর ধারা ১৯]

৩। যুগ জেলা জজ আদালতের আর্থিক এখতিয়ারঃ সীমাহীন। [সিভিল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৮৮৭ এর ধারা ১৮]


রেস জুডিকাটা এবং রেস সাব- জুডিস ধারা ১০,১১,১২
ধারা-১০: মামলা স্থগিত রাখা (সাব সুডিস)।
মামলা স্থগিতকরণ (stay of suit)/Res-subjudice):
যখন পূর্বে দায়েরকৃত বিচারধীন মামলার পক্ষসমূহ ও বিচার্য বিষয় এবং পরবর্তীতে দায়েরকৃত মামলার পক্ষসমূহ ও বিচার্য বিষয় একই হয়, তখন পরবর্তীতে দায়েরকৃত মামলাটির বিচারকার্য আদালত স্থগিত বা মূলতবি (stay of suit / Res-Subjudice) করে দিবেন।
তবে পূর্ববতী মামলা যদি কোন বিদেশী আদালতে দায়ের করা হয়ে থাকে, তখন মামলার কারণ একই হওয়ার সত্ত্বেও বাংলাদেশের কোন আদালতে পরবর্তী মামলা বিচারে বাধা সৃষ্টি করবেনা।


উদাহরণ:
স্ত্রী "ক" বিচ্ছেদ ও নাবালক সন্তানের  চেয়ে মামলা করে স্বামীর "খ” বিরুদ্ধে।
পরবর্তীতে "খ" নাবালক সন্তানের অভিভাবক হওয়ার জন্য আরেকটি মামলা দায়ের করায় "খ" এর মামলার বিচারকার্য স্থগিত রাখা হয়।

শর্ত:
১। পূর্ববর্তী মামলায় পক্ষসমূহ ও পরবর্তী মামলার পক্ষসমূহ অবশ্যই এক হতে হবে।
২। পূর্ববতী মামলার বিষয়বস্তু ও পরবর্তী মামলার বিষয়বস্তু অবশ্যই সরাসরি ভাবে ও বস্তুনিষ্ঠভাবে এক হতে হবে।
৩। প্রথম মামলাটি যে আদালতে দায়ের করা হয়েছে উক্ত আদালতটির পরবর্তী মামলায় উক্ত বিষয়ে প্রতিকার দানের ক্ষমতা থাকতে হবে।



ধারা-১১: পূর্ব-বিচার সিদ্ধান্ত (রেস জুডিকেটা)।।
দোবরা দোষ /প্রাক সিদ্ধান্ত (Res-judicata):
যে মামলাটি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত কর্তৃক একবার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে, পরবর্তীতে যদি পুনরায় একই বিচার্য বিষয় নিয়ে এবং একই পক্ষসমূহ মামলা দায়ের করে, তাহলে আদালত মামলাটি বিচার করবে না, এই নীতিটি হচ্ছে রেস জুডিকাটা।


সুতরাং, একবার চূড়ান্ত ভাবে নিম্পত্তিকৃত কোন মামলা, পুনরায় বা দ্বিতীয় বার বিচার করা যায় না।
অর্থাৎ যার বিচার একবার করা হয়েছে, সে একই বিষয়ে পূনরায় মামলা করলে রেস জুডিকাটা নীতি প্রয়োগ হবে।


উদাহরণঃ
ক", "খ" এর বিরুদ্ধে স্বত্ব ঘোষণার মামলা করে। আদালত
 মামলাটি "খ" এর পক্ষে রায় দেয়। এখন “ক” যদি উক্ত বিষয়ে পুনরায় মামলা দায়ের করে তাহলে পরবর্তীতে দায়েরকৃত মামলাটি আদালত খারিজ করে দিবে। কারণ পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী মামলার বিচার্য বিষয় এবং পক্ষসমূহ একই।

শর্ত:
১। পূর্ববর্তী মামলা এবং পরবর্তী মামলার বিচার্য বিষয় একই হতে হবে ।
২। পূর্ববর্তী মামলা এবং পরবর্তী মামলার পক্ষসমূহ একই হতে হবে।
৩। পূর্ববতী মামলাটি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত কর্তৃক চূড়ান্ত ভাবে নিম্পত্তিকৃত।

প্রকারভেদঃ ২ প্রকার
১। প্রত‍্যক্ষ রেসজুডিকাটা (Direct Res-judicata),
২। পরোক্ষ রেসজুডিকাটা (constructive Res-judicata)।

ব্যাখ্যা (Explanations)
১১ ধারায় মোট ৬টি ব্যাখ্যা আছে । যথা:
১। “পূর্ববতী মামলা" বলতে এমন প্রকৃতির মামলাকে বুঝাবে, যার বিচার বর্তমান মামলার পূবেই হয়েছে, তা পূর্বে দায়ের করা হয়েছে কিনা, সে সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উথাপন করা।যাবে না|Former Suit]
২। এই ধারার উদ্দেশ্যে কোন আদালতের বিচার করার ক্ষমতা বিবেচনা করতে হবে, তার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অধিকার সম্পর্কিত ব্যবস্থা বাদ দিয়ে । [Competency of a Court]
৩। প্রত্যক্ষ ও মূল বিষয়টি পূর্ববর্তী মামলায় এক পক্ষ কর্তৃক দাবীকৃত এবং অপর পক্ষ কর্তৃক প্রত্যক্ষ  বা পরোক্ষ ভাবে 
স্বীকৃত হয়ে থাকতে হবে ।[Direct Res-judicata)
8। পূর্ববর্তী মামলায় যে বিষয় আত্ম পক্ষ সমর্থন বা বিপক্ষের যুক্তি খন্ডনের জন্য ব্যবহৃত।
হতে পারতো বা হওয়া উচিৎ ছিল, তা উক্ত মামলার প্রত্যক্ষ ও মূল বিবেচ্য-বিষয় ছিল বলে ধরে নিতে হবে। (Indirect or Constructive Res-judicata) 
৫। আর্জিতে যে প্রতিকর প্রার্থনা করা হয়েছে, ডিক্রিতে তা সুস্পষ্টভাবে আনয়ন না করার
জন্য আদালত কর্তৃক না মঞ্জুর হয়ে থাকলে, এই ধারার উদ্দেশ্যে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। [Relief Claimed in the plaint, which not expressly granted by the decree]

৬। যেক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি কোন সাধারণ অধিকারের জন্য অথবা সকলের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোন ব্যাক্তিগত অধিকারের জন্য সরল বিশ্বাসে মামলা করে, সেক্ষেত্রে উক্ত স্বার্থের সাথে
সংশ্লিষ্ট সমস্ত লোক এই ধারার উদ্দেশ্যে মামলা-আনয়নকারীদের সূত্রে স্বত্ব দাবি করছে বলে বিবেচনা করতে হবে। (Litigation for Public Rights)

যেক্ষেত্রে রেস জুডিকাটা নীতিটি প্রযোজ্য নয়ঃ
১। যেক্ষেত্রে পূর্ববর্তী আদেশটি পরবর্তী মামলার সময় কার্যকর নাই।
২ । যেক্ষেত্রে মামলার রায় প্রতারণামূলে প্রাপ্ত।
৩। যেক্ষেত্রে মামলার রায় দোবরা দোষের মূলনীতির অপরিহার্য শর্তগুলি পূরণ করে না।
৪। যেক্ষেত্রে মামলাটি গুণাগুনের উপর নিষ্পত্তি হয় নাই। পক্ষান্তরে অনুপস্থিতিজনিত ত্রুটি জন্য খারিজ হয়।
৫। মামলাটি না চালানোর জন্য খারিজ হয়।
৬। মামলাটি পুনরায় দায়ের করার শর্তে উঠিয়ে নেয়া হলে।


ধারা-১২: পুনরায় মামলা করার বাধা (Bar to Further Suit): 
যখন বাদী কোন বিধি অনুসারে কোন বিশেষ কারণে পুনরায় মামলা দায়ের করা নিষিদ্ধ হয়, তখন যে আদালতের প্রতি এই আইন প্রযোজ্য, সেরুপ কোন আদালতে তিনি সে একই কারণে পুনরায় মামলা দায়ের করতে পারবে না।

ধারা-১৩: বিদেশী রায়ের বিষয়ে মামলাতে বাধা: 
বিদেশী রায় চূড়ান্ত হিসাবে গণ্য হলে উক্ত রায়ের বিষয়ে নতুন করে মামলা করা যাবে না।
তবে নিজে বর্ণিত ক্ষেত্রে বিদেশি  রায়কে চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে না:
ক) আদালতের রায় প্রদানের এখতিয়ার না থাকলে।
খ) মামলার গুনাগুনের ভিত্তিতে রায় না দিলে।
গ) অন্তর্জাতিক আইনের ভুল ব্যাখ্যা করে বা বাংলাদেশী আইন অস্বীকার রায় দিলে।
ঘ) প্রবঞ্চনার মাধ্যমে রায় সংগ্রহ করলে।
ঙ) বাংলাদেশী আইনের বিরোধী কোন দাবি রায়ে স্বীকার করলে।


তথ্য কণিকা
ধারা ১৪: বিদেশী রায়ের সহি মোহরকৃত নকল আদালতে পেশ করলে আদালত ধরে নিবে  (Shall presume) রায়টি এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের। 

ধারা-১৫:  যে আদালতে মামলা দায়ের করতে হবেঃ
বিচার করার ক্ষমতা সম্পন্ন সর্বনিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।


আঞ্চলিক এখতিয়ার (Territorial Jurisdiction) ধারা-১৬-২০
দেওয়ানি মামলা রুজু: ধারা ১৬-২০
ধারা-১৬: যেখানে বিষয়বস্তু অবস্থিত সেখানে মামলা দায়ের করতে হবে।
মামলার বিষয়বস্তু যে নিদিষ্ট আদালতের আঞ্চলিক সীমানার মধ্যে অবস্থিত। উক্ত নির্দিষ্ট আদালতে মামলা দায়েরের আদালত।

ধারা-১৭: ভিন্ন ভিন্ন আদালতের এখতিয়ারে অবস্থিত স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে মামলাঃ 
একাধিক আদালতের এখতিয়ারে স্থাবর সম্পত্তি থাকলে তাদের ভিতর যে কোন একটি আদালতে মামলা দায়ের করে যাবে। তবে উক্ত আদালতে অর্থিক এখতিয়ার থাকতে হবে।

ধারা-১৮: স্থানীয় সীমানার এখতিয়ার অনিশ্চিত (Uncertain of local Limit) 
কোন স্থাবর সম্পত্তি যখন দুই বা ততোধিক আদালতের কোনটির স্থানীয় সীমানার এখতিয়ারে অবস্থিত, সে সম্পর্কে অনিশ্চতা দেখা দেয়, তখন যে কোন একটি আদালতে মামলা দায়ের করা যায়।

ধারা-১৯: ব্যক্তির বা অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করলে, ক্ষতিপূরণের মামলা।
কোন ব্যক্তি বা কোন অস্থাবর সম্পত্তির  প্রতি এক  আদালতের এখতিয়ারের স্থানীয় সীমারেখার ভিতর ক্ষতিসাধন করা হলে, এবং বিবাদী অপর আদালতের এখতিয়ারে স্থানীয় সীমারেখার ভিতর :
ক) বসবাস করলে বা
খ) ব্যবসা করলে বা
গ) লাভজনক কাজ করলে। 
ফরিয়াদি বা বাদী দুই আদালতের যে কোন একটিতে ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারে।
উদাহরণ:
“এ " চট্টগ্রামে বসবাস করে এবং সে “বি" কে ঢাকায় মারধর করে। বি ঢাকায় বা চট্টগ্রামে “এ” এর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে।

ধারা-২০: অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে:
অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে যেখানে বিবাদীগণ বাস করে বা যেখানে নালিশের কারণ উদ্ভব হয়। এই দুই জায়গায় মধ্যে যেকোন একটি জায়গায় মামলা দায়ের করতে হবে। 

ধারা- ২১: এখতিয়ারের আপত্তি: 
আদালতের এখতিয়ারের বিষয়ে কোন পক্ষের আপত্তি থাকলে যে আদালতে প্রথম মামলা করা হয়, সে আদালতে প্রথম সম্ভব‍্য সুযোগ এবং বিচার্য বিষয় নির্ধারণ করার সময় বা পূর্বে উথাপন করতে হবে।
আদালতের আর্থিক এখতিয়ার সম্পর্কে শীঘ্রতম সন্ধিক্ষণে বা প্রথম সম্ভাব্য সুযোগে (as earliest as possible opportunity) আপত্তি উথাপন না করলে তা পরিত্যক্ত (waived) হয়েছে বলে গণ্য করা হবে। এমনকি পরিবর্তীতে আপিল বা রিভিশন
আদালত মামলা দায়েরের স্থান সম্পর্কে কোন আপত্তি মঞ্জুর করবে না। তবে ন্যায় বিচার বিঘ্ন হলে বা ন‍্যায় বিচারের স্বার্থে  আপিল বা  রিভিশন আদালত দায়েরের স্থান সম্পর্কে আপত্তি করতে পারে।


মোকদ্দমা স্থানান্তর ক্ষমতা ধারা: ২২-২৪
ধারা-২২ যে মামলা একাধিক আদালতে দায়ের করা যায়। সেই মামলা স্থানান্তরের ক্ষমতা।
দুই বা ততোধিক আদালতের যে কোন একটিতে যখন কোন মামলা দায়ের করা যায় এবং মামলাটি তার মধ্যে যে কোন একটি আদালতে দায়ের করা হয়, 
তখন যে কোন বিবাদী অপর পক্ষকে নোটিশ দিয়ে প্রথম সম্ভাব্য সুযোগ ও বিচার্য বিষয় নির্ধারণের সময় বা পূর্বে অপর একটি আদালতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে।


ধারা-২৩: মামলা স্থানান্তরের জন্য কোন আদালতে আবেদন করতে হবে। 
১। যখন এখতিয়ার সম্পন্ন একাধিক আদালত একই আপিল আদালতের অধীন হয়, তখন উক্ত আপিল আদালতে ২২ ধারা অনুসারে আবেদন পেশ করতে হবে।
২। যখন এখতিয়ার সম্পন্ন একাধিক আদালত ভিন্ন ভিন্ন আপিল আদালতের আওতাধীন হয়, তখন হাইকোর্ট ডিভিশনে আবেদন পেশ করতে হয়।

দেওয়ানি মামলার আপিল আদালত দুটিঃ
১। জেলা জজ আদালত;
২। হাইকোর্ট বিভাগ;
একই জেলার অধীন এক আদালত থেকে অন্য আদালতে মামলা স্থানান্তর করতে হলে আপিল আদালতের নিকট আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে কখনো কখনো জেলা জজ বা হাইকোর্ট বিভাগে মামলা স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে। কারণ দেওয়ানী মামলার আপিল আদালত হচ্ছে জেলা জজ বা হাইকোর্ট বিভাগ।
অপরদিকে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় দেওয়ানী আদালতে মামলা স্থানান্তর জন্য আবেদন করতে হবে হাইকোর্ট বিভাগের নিকট।


ধারা-২৪: স্থানান্তর ও প্রত্যাহারের সাধারণ ক্ষমতা।
হাইকোর্ট বিভাগ বা জেলা জজ আদালত যে কোন সময় তার নিকট বিচারের জন্য বা নিম্পত্তির জন্য বিচারাধিন কোন মামলা আপিল এবং যে কোন কার্যক্রম তার অধীনস্থ এখতিয়ার সম্পন্ন কোন আদালতে স্থানান্তরিত করতে পারেন অথবা কোন অধীনস্থ আদালত থেকে মামলা আপিল বা যে কোন কার্যক্রম প্রত্যাহার করে তা নিজে বিচার করতে পারেন অথবা এখতিয়াসম্পন্ন অন্য কোন আদালতে স্থানান্তরিত করতে পারেন। এই ধারার উদ্দেশ্যে জেলা জজকে জেলা জজের অধীঃস্থন ধরা হবে ।




 দেওয়ানি মোকদ্দমা কার্য প্রণালী ধারা ২৬ আদেশ  ৪   ৪      
ধারা-২৬:  মামলা দায়ের/ মোকদ্দমা রুজু করা।( Institution of Suits)
প্রত্যেকটি মামলা আরজি পেশ করার মাধ্যমে বা নির্ধারিত অন্য কোন পদ্ধতিতে দেওয়ানি মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে।


সমন(summon) ধারা ২৭,২৯,৩১,৩২, আদেশ ৫   ৫ 
ধারা-২৭: বিবাদীর প্রতি সমন।/বিবাদীর বিরুদ্ধে সমন জারী।

যেখানে মামলা সঠিক ভাবে দায়ের করা হয়েছে, সেখানে বিবাদীকে উপস্থিত এবং দাবির জবাব দেওয়ার জন্য সমন দেওয়া যেতে পারে।

ধারা ২৯। বিদেশী সমন জারী।
বাংলাদেশের বাইরে অবস্থিত দেওয়ানী বা রাজস্ব আদালত কর্তৃক প্রদত্ত সমন এবং অন্যান্য পরোয়ানা বাংলাদেশের আদালতসমূহে প্রেরণ করা যেতে পারে এবং উহাকে বাংলাদেশী আদালতের সমন বলে ধরে নিয়ে জারী করা যেতে পারেঃ তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারী করে এরূপ আদালতের প্রতি এই ধারার শর্তসমূহ প্রযোজ্য বলে ঘোষণা করবেন।

[ধারা-৩০: উদঘাটন ও অনুরুপ বিষয়ের উপর আদেশ দিবার ক্ষমতা: 
কোন আদালত কোন কোন সময় স্বপ্রণোদিত হয়ে বা কোন পক্ষের আবেদনক্রমে-
ক) প্রশ্নবলী প্রদান এবং জবাবদান, দলিল এবং তথ্যবলীর স্বীকৃতি এবং উদঘাটন পরিদর্শন, দাখিল, দলিল বা অন্তরীন ফেরত সম্পর্কে বা সাক্ষ্য হিসাবে দাখিলযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী বিষয়ক প্রয়োজনীয় ও যুক্তিপূর্ণ হতে পারে এরুপ আদেশ দান করতে পারেন।
থ) সাক্ষ্যদান বা
দলিল দাখিল বা
উপরোক্ত অন্য উদ্দেশ্যে।
যাদের হাজির হওয়ার প্রয়োজন, তাদের প্রতি সমন প্রেরণ করতে পারেন:
গ) কোন তথ্য এফিডেভিট (শপথ পত্র) দ্বারা প্রমাণের আদেশ করতে পারেন।]

ধারা-৩১: সাক্ষীর প্রতি সমন।
আদালত সাক্ষীর প্রতি সমন জারি করতে পারেন।
সাক্ষ্যদান, দলিল পেশ ও অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে ২৭ ও ২৯ ধারার বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।


ধারা-৩২: সমন অমান্যের জন্য সাজা: 
৩০ ধারা অনুসারে আদালত যাকে সমন প্রদান করেন, সে ব্যক্তি উক্ত সমন অমান্য করলে অথবা উক্ত ব্যক্তি কে হাজির হওয়ার জন্য নিম্নের আদেশের মাধ্যমে বাধ্য করতে পারে-
ক) গ্রেফতারের এর জন্য পরোয়ানা ইস্যু করতে পারেন;
খ) সম্পত্তি ক্রোক ও বিক্রয় করতে পারেন;
গ) অনধিক ৫০০/- (পাঁচশত টাকা) জরিমানা করতে পারেন;
ঘ) হাজিরার জন্য তাকে জামানত দেওয়ার আদেশ প্রদান করতে পারেন ও জামানত না দিলে তাকে কারাগারে পাঠাতে পারেন।

ধারা-৩৩: রায় এবং ডিক্রি।
মামলার শুনানি হওয়ার পর আদালত ৭ দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা করবে এবং এরূপ রায়ের ভিত্তিতে ৭ দিনের মধ্যে ডিক্রি প্রণীত হবে।

[ধারা ৩৫: খরচ (Cost)]
মোকাদ্দামায় ব্যয় ও আনুষঙ্গিক খরচ আদালত বিবেচনায় উপর নির্ভর করে। মোকাদ্দামায় শেষে যে পক্ষ জয় লাভ করে, সাধারণত সে পক্ষ মোকাদ্দামায় খরচ পায়। আদালত মোকাদ্দামায় খরচের  উপর অনাধিক শতকরা বার্ষিক ৬% সুদ প্রদানের নির্দেশ দিতে পারেন।]

ধারা ৩৫ক। মিথ্যা বা বিরক্তিকর দাবী বা জবাব সম্পর্কে ক্ষতিপূরণমূলক খরচঃ
 মোকাদ্দমায়, মোকাদ্দমার কোন পক্ষ মোকাদ্দমার দাবিকে মিথ্যা ও বিরক্তিকর বলে আপত্তি উত্থাপন করলে এবং আদালত কর্তৃক সেই আপত্তি আংশিক বা সম্পূর্ণ নামঞ্জুর হলে আদালত আপত্তি উত্থাপনকারীকে অনধিক ২০,০০০/=  টাকা ক্ষতিপূরণের খরচ(Cost) প্রদানের আদেশ দিবেন।
[বিঃ দ্রঃ এইরূপ ক্ষেত্রে আপত্তি উত্থাপনকারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও দায়ের করা যাবে।]

ডিক্রি জারী Execution of Decree ধারা ৩৬  থেকে ৭৪ আদেশ ২১
ধারা ৩৬। আদেশের ক্ষেত্রে প্রয়োগঃ
ডিক্রি জারী সম্পর্কে/ মতো আদেশ জারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এই আইনের বিধানগুলি যথাসম্ভব।

ধারা ৩৮। যে আদালত কর্তৃক ডিক্রি জারী করা যায়ঃ/ কোন আদালত ডিক্রি জারি করে:
১। যে আদালত ডিক্রি প্রদান করেছে।
২। যে আদালতে ডিক্রি জারি করার জন্য পাঠানো বা স্থানান্তর করা হয়েছে।
ডিক্রি জারীকারি আদালতের ডিক্রির বিষয় বস্তুর বাইরে কোন বিষয় বিবেচনা করার এখতিয়ার থাকবে না।


ধারা- ৩৯: ডিক্রি জারির জন্য স্থানান্তর: 
নিম্ন বর্ণিত ক্ষেত্রে ডিক্রি প্রদানকারী আদালত ডিক্রি জারীর জন্য স্থানান্তর করতে পারেন:-
১। যার বিরুদ্ধে ডিক্রি দেয়া হয়েছে, সে যদি অন্য আদালতের স্থানীয় এখতিয়ারে বসবাস বা ব্যবসা বা ব্যক্তিগত লাভজনক কাজ করেন।
২। ডিক্রিদানকারী আদালতের স্থানীয় সীমানার মধ্যে ডিক্রির দাবি পূরণের জন্য উক্ত ব্যক্তির পর্যাপ্ত সম্পত্তি না থাকলে এবং অন্য আদালতের এখতিয়ারে সম্পত্তি থাকলে।
৩। ডিক্রিতে অন্য আদালতের এখতিয়ারে থাকা সম্পত্তি বিক্রয়ের বা প্রদানের নির্দেশ থাকলে।
৪ । ডিক্রি দানকারি আদালত অন্য যেকোন কারণে স্থানান্তর করতে পারে।

ডিক্রি স্থানান্তরের আবেদন কে করবেন:
১। মামলার পক্ষসমূহ অথবা
২। আদালত নিজেই (Suo motu/Own motion)।

ধারা ৪০। বাতিল।
ধারা ৪১ ৷ জারী কার্যক্রমের ফলাফল অবহিত করতে হবেঃ
যে আদালতের নিকট ডিক্রি জারী হওয়ার বিষয় অথবা জারী না হলে তার কারণ ও পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবে অবহিত করবেন।/
তবে উক্ত আদালত ডিক্রি জারি করতে ব্যর্থ হলে ডিক্রি প্রদানকারী আদালতকে অবহিত করবেন।


ধারা ৪২। স্থানান্তরিত ডিক্রিজারিকারী আদালতের ক্ষমতা:
এইক্ষেত্রে ডিক্রি প্রদানকারী আদালত এবং স্থানান্তরিত ডিক্রিজারিকারী আদালতের ক্ষমতা  একই থাকবে। 


[ধারা ৪৩। যেখানে অত্র জারীর বিধান প্রযোজ্য নহে সেই বিদেশী ভূমিতে ডিক্রি জারীঃ
বাংলাদেশের যে এলাকায় ডিক্রি জারী সম্পর্কিত বিধানগুলি প্রযোজ্য নহে, সেই এলাকার কোন দেওয়ানী আদালত কোন ডিক্রি প্রদান করলে এবং উহা উক্ত আদালতের স্থানীয় এখতিয়ারের সীমার মধ্যে জারী করা না গেলে, উহা বাংলাদেশের অন্য কোন আদালতের এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে, অতঃপর এতে বর্ণিত পদ্ধতিতে জারী করা যাবে।]


ধারা- ৪৬: লিখিত হুকুমনামা/ বিচারকের আদেশ পত্র/আদেশ নামা (Precepts):
Decree Holder এর আবেদনক্রমে ডিক্রিদানকারী আদালত ডিক্রিজারি করতে পারে অন্য কোন উপযুক্ত আদালত কে Judgment debtor (যার বিরুদ্ধে ডিক্রি দেয়া হয়) এর মালিকানাধীন সম্পত্তি ক্রোক করার জন্য আদেশপত্র জারি করতে পারেন।
আদেশনামার আওতাধীন কোন ক্রোক আদেশ ২ মাসের বেশি  কার্যকর থাকবে না।


ধারা ৪৮: ডিক্রি জারির তামাদি বা সময়সীমা: 
১। নিষেধাজ্ঞার ডিক্রি ছাড়া অন্যান্য ডিক্রি জারির আবেদন করতে হয়-সবোচ্চ ১২ বছরের মধ্যে।
২। সাব্যস্থ দেনাদার বা দায়িক (Judgment Debtor) যদি প্রতারণা বা প্রবঞ্চনা বা শক্তি প্রয়োগ  করে ডিক্রিজারীতে বাধা দেয় তাহলে ১২ বছরের পরও ডিক্রিজারীর আবেদন করা যাবে।
৩। জারীর দরখাস্ত ডিক্রির ২ বছর পর দায়ের করা হলে দায়িকের উপর নোটিশ জারি  করতে হবে।[বিধি-২২, আদেশ-২১]
৪। দেওয়ানি আদালতের যে ডিক্রিজারী বা আদেশ কার্যকর সম্পর্কে তামাদি আইনের ১৮৩ অনুচ্ছেদে বা দেওয়ানি কার্যবিধির ৪৮ ধারায় কোন বিধান নাই তা জারি বা কার্যকর কারার জন্য দরখাস্ত ৩ বছরের মধ্যে করতে হবে। তবে যেখানে ডিক্রি বা আদেশের কপি রেজিস্টার করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ডিক্রি জারীর আবেদনটি ৬ বছরের মধ্যে দাখিল করতে হবে।
[অনুচ্ছেদ ১৮২, তামাদি আইন ১৯০৮]
৫। ডিক্রি জারীর প্রথম দরখাস্ত ৩ বছরের মধ্যে করতে হবে।
৬। তামাদি আইন, ১৯০৮ এর ১৮৩ অনুচ্ছেদ মতে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক সাধারণ আদি দেওয়ানি এখতিয়ার প্রয়োগের সময় যে রায়, ডিক্রি বা আদেশ বা সুপ্রিম কোর্টের কোন আদেশ কার্যকর করার জন্য ১২ বছরের মধ্যে দরখাস্ত দায়ের করতে হবে।



ডিক্রি জারীর পদ্ধতি। ধারা ৫১ থেকে ৫৪ 
ডিক্রি জারীর পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আদেশ ২১ এ  বর্ননা করা হয়েছে।
ধারা-৫১: ডিক্রিজারী কার্যকর করার ব্যাপারে আদালতের ক্ষমতা। আদেশ ২১ বিধি ১১
আদালত ডিক্রি দারের আবেদনক্রমে নিম্ন বর্ণিত ৫টি উপায়ে ডিক্রিজারী কার্যকর করতে পারেন:
১। ডিক্রিভুক্ত সম্পত্তি অর্পণের মাধ্যমে।
২। কোন সম্পত্তি ক্রোক ও বিক্রয় এর মাধ্যমে।
৩। দেনাদারকে গ্রেফতার ও কারাগারে আটকের মাধ্যমে।
৪। রিসিভার নিয়োগের মাধ্যমে।
৫। প্রয়োজন মোতাবেক অন্য কোন উপায়ে।

ডিক্রিটি অর্থ পরিশোধের জন্য হলে দেনাদারকে কারাগারে সোপর্দ বা আটক করা হবে না।
তবে আদালত নিম্নে বর্ণিত কারণে দেনাদারকে দেওয়ানি কারাগারে আটকের আদেশ দিতে পারেন
১। দেনাদার ডিক্রি জারীতে বিলম্ব বা বাধা দেয়।
২। আত্মগোপন বা আদালতের এখতিয়ারের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে।
৩। সম্পত্তি অসাদুপায়ে স্থানান্তর বা অপসারনের চেষ্টা করলে।
৪। ডিক্রির টাকা পরিশোধের অর্থ থাকার পরও পরিশোধ করতে অবহেলা বা অস্বীকার করলে।



অন্তবর্তীকালীন আদেশ সমূহ: ধারা ৫৫, ৭৫ আদেশ: ২৬,৩৮,৩৯,৪০,
রায়ের পূর্বে ক্রোক ও গ্ৰেফতার, তত্ত্বাবধায়ক (রিসিভার), নিয়োগ, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, কমিশন, নিরাপত্তা জনিত খরচাদি।
১। আদালতে খরচের জমা প্রদান। আদেশ ২৪
২। খরচের জন্য জামানত। আদেশ ২৫ 
৩। কমিশন নিয়োগ। আদেশ ২৬ 
৪। রায়ের পূর্বে আটক।  আদেশ ৩৮
৫। রায়ের পূর্বে ক্রোক। আদেশ ৩৮
৬। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা। আদেশ ৩৯
৭। রিসিভার নিয়োগ। আদেশ ৪০

গ্রেফতার ও আটক মাধ্যমের ডিক্রিজারী: ধারা- ৫৫-৫৬
ধারা ৫৫। গ্রেফতার ও আটকঃ
ডিক্রি জারির জন্য সাব্যস্ত দেনাদারকে(Judgment Debtor) যে কোন দিন যে কোন সময় গ্রেফতার করে দেওয়ানি কারাগারে আটক রাখা যাবে। আটক আদেশদানকারি আদালত যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার দেওয়ানি কারাগারে তাকে আটক রাখা যেতে পারে।

তবে উক্ত ব্যক্তিকে আটক করার জন্য, 
কোন বাস গৃহের সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের  মধ্যবর্তী সময় প্রবেশ করা যাবে না;
কোন বাস গৃহের দরজা ভেঙে ফেলা যাবে না; এবং 
কোন বাসগৃহে কোন ধার্মিক মহিলা থাকলে উক্ত মহিলাকে সরে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত সময় এবং সুযোগ প্রদান না করে প্রবেশ করা যাবে না।

ধারা-৫৬ : মহিলা দেনাদারকে গ্রেফতার ও আটকে এ বাধা।
আদালত টাকা পরিশোধের জন্য ডিক্রি জারির জন্য কোন মহিলাকে গ্রেফতার বা আটক রাখার আদেশ প্রদান করবেন না। 


ধারা ৫৮: আটক ও মুক্তি
ডিক্রি জারির জন্য সাব্যস্ত দেনাদারকে আটক করার ক্ষেত্রে ২টি ভাগ রয়েছে। যথা:
ডিক্রির প্রদত্ত টাকার পরিমান ৫০ টাকা বা তার কম হলে ৬ সপ্তাহ আটক রাখা যাবে; এবং 
ডিক্রির প্রদত্ত টাকার পরিমান ৫০ টাকার বেশি হলে ৬ মাস আটক রাখা যাবে।
 তবে উক্ত ব্যক্তিকে আটকের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মুক্তি দেয়া যাবে যদি- যেকোন উপায়ে ডিক্রির দেনা পরিশোধ করে দেয় কিংবা যাহার আবেদনের প্রেক্ষিতে আটক রাখা হয়েছে তিনি অনুরোধ করলে বা তিনি খোরপোষ ভাতা দেঢয়া বন্ধ করে দিলে।
[বি: দ্র: এই ক্ষেত্রে যে ডিক্রি জারিতে মুক্তি দেয়া হবে সেই বিষয়ে তাকে পুনরায় আটক করা যাবে না।]

ধারা ৫৯: অসুস্থতার কারণে মুক্তি: 
ডিক্রি জারির জন্য সাব্যস্ত দেনাদারের বিরুদ্ধে পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পরে যে কোনো সময় উক্ত ব্যক্তিকে গুরুতর অসুস্থতার কারণে আদালত উহা বাতিল করতে পারবেন এবং উক্ত ব্যক্তিকে দেওয়ানি কারাগারে আটক করা হলে মুক্তি দিতে পারবেন।
[বি: দ্র: এই ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিকে পুনরায় আটক করা যাবে না।]

ক্রোকের মাধ্যমে ডিক্রিজারী: ধারা ৬০-৬১

ধারা ৬০:ডিক্রি জারির জন্য সম্পত্তি ক্রোক ও বিক্রি:
ডিক্রি জারির জন্য যে সকল সম্পত্তি  ও বিক্রি করা যাবে তা হলো:
জমি, বাসগৃহ বা অন্যান্য দালানকোঠা, মালপত্র, নগদ টাকা, ব্যাংক নোট, চেক বিল অফ এক্সচেঞ্জ, হুন্ডি, প্রমিজরি নোট, গভর্নমেন্ট সিকিউরিটি, কোম্পানির শেয়ার।

যে সকল সম্পত্তি ক্রোক ও বিক্রি করা যাবে না তা হলো:
দেনাদার বা তাহার স্ত্রীর বা সন্তানের পরিধেয় বস্ত্র, রান্নার  বাসনপত্র, এমন গহনা যা ধর্মীয় বিধানমতে খুলে ফেলা উচিত নহে, দেনাদার কারিগর  হলে কারিগরের হাতিয়ারপত্র বা চাষি হলে চাষের হাতিয়ার পত্র, গো- মহিষাদি, বীজ, হিসাবের খাতা-পত্র ইত্যাদি।


ধারা ৭৫ ৷ কমিশন প্রেরণের জন্য আদালতের ক্ষমতাঃ
যেরূপ নির্ধারণ করা হয়, সেরূপ শর্তাবলী ও সীমাবদ্ধতা সাপেক্ষে, আদালত—
ক) কোন ব্যক্তির সাক্ষ্য নিবার জন্য;
খ) স্থানীয় তদন্ত অনুস্থানের জন্য;
গ) হিসাব পরীক্ষা বা সমন্বয় করার জন্য; অথবা
ঘ) বাটোয়ারা করার জন্য— কমিশন প্রেরণ করতে পারবেন।

কতিপয় ক্ষেত্রে মোকাদ্দমা ধারা ৮৩ থেকে ৮৭,৯১,৯২

ধারা ৮৩ ৷ কখন বিদেশী ব্যক্তি মামলা করতে পারেঃ

ধারা ৮৪। কখন বিদেশী রাষ্ট্র মামলা করতে পারেঃ

ধারা ৮৫৷ বিদেশী শাসনকর্তার পক্ষে মামলা পরিচালনা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিশেষভাবে নিযুক্ত ব্যক্তিঃ

ধারা ৮৬৷ শাসকের বিরুদ্ধে মামলাঃ

ধারা ৮৬ক। কূটনৈতিক প্রতিনিধির বিরুদ্ধে মামলাঃ

ধারা ৮৭ ৷ মামলার পক্ষ হিসেবে শাসনকর্তার উপাধিঃ

ধারা ৯১ ৷ গণউপদ্রবঃ

ধারা ৯২। জন দাতব্য প্রতিষ্ঠানঃ


ইন্টাপ্লিডার স‍্যুট: ধারা-৮৮, আদেশ ৩৫
ধারা ৮৮। যখন ইন্টারপ্রিডার মামলা দায়ের করা যায়ঃ
ইন্টাপ্লিডার স‍্যুট বলতে এমন এক ধরনের মামলাকে বুঝায়, যেখানে মামলা সংঘটিত হয়  বিবাদী গণের মধ্যে এবং মামলার বাদী মামলার খরচ ছাড়া মামলার বিষয়বস্তুর উপর কোন দাবি থাকে না। বাদী মামলা দায়ের করে মাত্র, কিন্তু মামলা পরিচালনা করেন না।

তথ্য কণিকা
১। ইন্টারপ্লিডার স‍্যুট একটি বিশেষ মামলা। এরুপ মামলার ক্ষেত্রে বাদীর বিরুদ্ধে বিবাদী সাধারণ মামলা করলে তা স্থগিত হয়ে যাবে।



[বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ধারা ৮৯ ক থেকে ৮৯ ঙ]

[ধারা ৮৯ ক: মধ্যস্থতা ( Mediation)

ধারা ৮৯ খ: সালিশ (Arbitration)
ধারা ৮৯ গ: আপীলে মধ্যস্থতা।]


আপিল (Appeal)  ধারা ৯৬ থেকে ১১২, আদেশ ৪১ থেকে ৪৩
আদেশ-৪১
আপিল
নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোন মামালার রায়ের বিরুদ্ধে যে কোন সংক্ষুব্ধ পক্ষ উক্ত মামলার রায় বাতিল বা সংশোধন বা বিচারিক পর্যালোচনার জন্য উচ্চ আদালতে মেমোরেন্ডামের আকারে যে দরখাস্ত দাখিল করা হয়, তাকে আপিল বলে।


আপিল করা যায়:
১। মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল (ধারা ৯৬-৯৯, আদেশ ৪১)
২। আদেশের বিরুদ্ধে আপিল (ধারা ১০৪-১০৬, আদেশ ৪৩)


কে আপিল করতে পারে:
১। ডিক্রি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ বা তার বৈধ প্রতিনিধি।
২। রায় বা ডিক্রি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ গ্রহীতা।
৩। স্বার্থ আছে এমন যে কোন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি আদালতের অনুমতি নিয়ে।
৪। নাবালকের ক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক নিযুক্ত আইনগত অভিভাবক।


ধারা- ৯৬: মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল: 
১। মূল এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের প্রত্যেক ডিক্রি বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। [৯৬ (১)]
২। একতরফা ভাবে প্রদত্ত মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল চলবে। [৯৬(২)]


কখন আপিল চলবে না:
১। পক্ষগণের সম্মতির ভিত্তিতে প্রদত্ত ডিক্রি অর্থাৎ সোলে ডিক্রির (Compromise Decree) বিরুদ্ধে। [ধারা ৯৬(৩)]
১। ক্ষুদ্রবিষয়ক আদালতের ডিক্রির বিরুদ্ধে।
৩। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারার অধীনে প্রদত্ত আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে।


ধারা ৯৭। প্রাথমিক ডিক্রি হতে আপীল দায়ের না করলে চূড়ান্ত ডিক্রি হতে আপীলঃ
প্রাথমিক ডিক্রিতে যে বিষয় নিষ্পত্তি হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আপিল না করলে চুড়ান্ত ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করে উক্ত বিষয়ে আপত্তি বা সংশোধন করা যাবে না।

ধারা ৯৮: দুই বা ততোধিক বিচারক আপিল শ্রবন করলে।
যখন দুই বা ততোধিক বিচারক দ্বারা গঠিত বেঞ্চ আপিল শ্রবণ করেন তখন দুজনের বা সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামত অনুযায়ী আপীলের  সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। উল্লেখ্য- সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারক যদি একমত হতে না পারে তাহলে নিম্ন আদালতের ডিক্রিটি বহাল থাকবে।
[বি: দ্র:  ডিক্রিটি কারণে ক্ষতিগ্রস্ত তৃতীয় ব্যক্তি আপিল করতে পারে।]


ধারা-৯৯: ডিক্রি পরির্বতন বা সংশোধন:  
মামলার Merit বা আদালতের এখতিয়ারকে ক্ষুন্ন না করলে সাধারণ ভুল, ত্রুটির জন্য বা অনিয়মের জন্য ডিক্রি পরিবর্তণ বা সংশোধন করা যায় না।


আদেশের বিরুদ্ধে আপিল। ধারা- ১০৪, ১০৬ এবং আদেশ ৪৩
ধারা ১০৪: যে সকল আদেশ থেকে আপিল করা যায়: 
১। ৩৫ক ধারার আওতায় প্রদত্ত আদেশ ।
২। ১৫ ধারার আওতায় প্রদত্ত আদেশ ।
৩। ডিক্রি জারিতে গ্রেফতার বা দেওয়ানি কারাগারে আটকের আদেশ ছাড়া এই আইনের যে কোন বিধানের আওতায় জরিমানার বা কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার বা দেওয়ানি কারাগারে  আটক করার নির্দেশ মূলক আদেশ ।
৪। যেখানে নিয়মাবলীর দ্বারা আপিল ব্যক্ত ভাবে মঞ্জুর করা হয়।
[ধারা-১৫:  যে আদালতে মামলা দায়ের করতে হবেঃ
বিচার করার ক্ষমতা সম্পন্ন সর্বনিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।
ধারা ৩৫ক। মিথ্যা বা বিরক্তিকর দাবী বা জবাব সম্পর্কে ক্ষতিপূরণমূলক খরচঃ]

ধারা-১০৫: অন্যান্য আদেশ।
ধারা ১০৭: আপিল আদালতের ক্ষমতা:আদেশ-৪১
১। মামলা চূড়ান্তভাবে নিম্পত্তি করার ।
২। মামলা পূর্নবিচারে প্রেরণ করার।
৩। বিচার্য বিষয় গঠন ও সেগুলি বিচারের জন্য প্রেরণ করার।
৪। অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ বা অনুরুপ সাক্ষ্য গ্রহণ করার জন্য তলব করার ক্ষমতা।
মনে রাখুন: Remand মানে To send back/মামলা পূর্নবিচারের জন্য পাঠানো।

ধারা-১০৯: কখন সুপ্রিম কোর্টের নিকট আপিল চলবে/ 
(আপীল বিভাগের নিকট আপীল)

সাধারণত ৩ টি ক্ষেত্রে আপিলের বিভাগের নিকট আপীল করা যায়। যথা- 

ক) হাইকোর্ট বিভাগ বা চূড়ান্ত আপিল এখতিয়ার সম্পন্ন অন্যকোন আদালতের ডিক্রি বা চূড়ান্ত আদেশের বিরুদ্ধে;
খ) হাইকোর্ট বিভাগের মৌলিক দেওয়ানী এখতিয়ার প্রয়োগকালে প্রদত্ত ডিক্রি বা চূড়ান্ত আদেশের বিরুদ্ধে; এবং 

গ) কোন মোকাদ্দমা সম্পর্কে, আপিল বিভাগের নিকট আপীল যোগ্য বলে, কোন আইনে সুর্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকলে উত্তরূপ মোকাদ্দমার ডিক্রি বা চূড়ান্ত আদেশের বিরুদ্ধে। 


ধারা ১১০: বিষয়বস্তু মূল্য: 
মোকদ্দমার বিষয়বস্তুর মূল্য ২০,০০০/=  টাকা বা তদূর্ধ্ব হলেই কেবল আপিল বিভাগের নিকট আপীল দায়ের করা যাবে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রায় বা ডিক্রি যদি নিম্ন আদালতের রায় বা ডিক্রিকে অনুমোদন করে থাকে তাহলে আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করতে হলে অবশ্যই দেখাতে হবে, ঐ মোকদ্দমায় গুরুত্বপূর্ণ আইনের প্রশ্ন জড়িত আছে। 


আপিল কোন আদালতে করতে হবে।
S, 21, The Civil Court Act,1887
১। সহকারী জজ, সিনিয়র সহকারী জজ এবং যুগ্ম সহকারী জজ আদালতের ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করতে হবে জেলা জজের আদালতে।
২। যুগ্ম জেলা জজের ডিক্রি বা আদেশের মূল্যমান ৫ লক্ষ টাকার অধিক হলে আপিল দায়ের করতে হবে হাইকোর্ট বিভাগে। তবে সিভিল কোর্ট অ্যাক্ট, ২০১৬ সালে সংশোধনীর
ফলে বর্তমানে আপিল এখতিয়ার ৫ লক্ষের পরিবর্তে ৫ কোটি টাকা অধিক হলে আপিল করা হবে হাইকোর্ট বিভাগে।
৩। জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের রায় বা ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল যাবে হাইকোর্ট বিভাগে।


আপিল দায়েরের তামাদি ।
১। জেলা জজের নিকট কোন রায় ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। [অনুচ্ছেদ ১৫২, তামাদি আইন ১৯০৮]।
২। হাইকোর্ট বিভাগে কোন রায় ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে হয় ৯০ দিনের মধ্যে। [অনুচ্ছেদ ১৫৬, তামাদি আইন ১৯০৮]

ধারা ১১৩: রেফারেন্স (Referance) আদেশ ৪৬

অভিমত/ Referance
অধস্তন কোন আদালত কোন সময়ে যদি প্রয়োজন মনে করে, তাহলে মোকদ্দমার বিষয়ে মতামতের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করতে পারেন। হাইকোর্ট বিভাগে এরুপ অভিমত চাওয়াকে  Referance বলে।


রেফারেন্স সম্পর্কিত বিধান
দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ১১৩ ও আদেশ ৪৬।

রেফারেন্সের আবেদন কে করতে পারে?
হাইকোর্ট বিভাগের অধ:স্তন আদালত।

কি বিষয়ে রেফারেন্স চাওয়া যায়।
তথ্যগত ও আইনগত জটিল প্ৰশ্ন বিষয়ে।

রেফারেন্স চাওয়া হয় কোন আদালতে
হাইকোর্ট বিভাগে রেফারেন্স চাওয়া হয়।


ধারা ১১৪: রিভিউ (Review)  আদেশ ৪৭
সংজ্ঞা:
সাধারণত রিভিউ বলতে বুঝায় যে আদালত  রায় প্রদান করেছে, উক্ত আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায় পূর্ণ বিবেচনা বা পুনরায় দেখা বা বিচারক পর্যালোচনা কে রিভিউ বলে।

রিভিউ সম্পর্কিত বিধান
দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ১১৪ এবং আদেশ ৪৭ রিভিউ সম্পর্কিত বিধান নিয়ে । আলোচনা করে।


কে রিভিউ আবেদন করবে?
যে পক্ষ আদালতের ডিক্রি বা আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হয়, সেই পক্ষ রিভিউ আবেদন করতে  পারে।

কোথায় রিভিউ আবেদন করতে হয়?
যে আদালত ডিক্রি বা আদেশ প্রদান করে, সেই একই আদালতে রিভিউর আবেদন করতে হয়।


কখন রিভিউ আবেদন করা যায়।
১। যে ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা চলে কিন্তু আপিল করা হয় নাই।
২। যে ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল চলে না।
৩। ক্ষুদ্র বিষয়ক আদালতে রেফারেন্স প্রদত্ত সিদ্ধান্ত।


রিভিউ আবেদন করার শর্তসমূহ:
১। মামলা সম্পর্কে নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয় আবিষ্কার হলে।
২। মামলার নথিতে ভুল বা স্পষ্টত কোন ভ্রান্তি থাকলে।
৩। অন্য কোন পর্যাপ্ত কারণে।


রিভিউ আবেদনের সময়সীমা
ডিক্রি বা আদেশ প্রদানের তারিখ থেকে তামাদি আইন ১৯০৮ সালের ৯০ দিনের মধ্যে  রিভিউ আবেদন করতে হয়। তামাদি আইন ১৯০৮ এর অনুচ্ছেদ ১৭৩।

প্রতিকার
১। রিভিউ আবেদন  মঞ্জুর করলে তার বিরুদ্ধে আপিল চলে। [আদেশ ৪৩]
তবে রিভিউর আবেদন না মঞ্জুর করলে রিভিশন চলবে।


তথ্য কণিকা
১। কোন পক্ষ যদি কোন ডিকি বা অদেশের বিরুদ্ধে আপিল না করে, তবে সে পক্ষ অন্য পক্ষের আপিল বিচারধীন থাকা স্বত্বেও রায় পুনরীক্ষন করার জন্য দরখাস্ত করতে পারবেন।


২। কিন্তু যেক্ষেত্রে আপিলের কার্যক্রমের শর্তসমূহ দরখাস্তকারী ও আপিলকারীর জন্য একই   বা‌ যেক্ষেত্রে উত্তরদায়ক হিসাবে আদালতে হাজির হয়ে উক্ত ব্যক্তি স্বীয় বক্তব্য পেশ করতে  পারবে, সেক্ষেত্রে রিভিউ এর দরখাস্ত করা চলবে না।
৩। রিভিউ শুধু দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।


ধারা ১১৫: রিভিশন (Revision)
সংজ্ঞা
রিভিশন বলতে বুঝায়, নিম্নে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ডিক্রি বা আদেশ উচ্চ আদালত কর্তৃক বিচারিক প্রতিকার সংশোধন করা।

রিভিশন সম্পর্কিত বিধান:
দেওয়ানি কার্যবিধির ১১৫ ধারায় রিভিশন সম্পর্কিত বিধান আছে।

কে রিভিশন আবেদন করবে?
ডিক্রি বা আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ যে কোন পক্ষ।

কোথায় রিভিশন আবেদন করতে হয়?
নিম্নে আদালতের ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিভিশন দায়ের করতে হয়।

কোন আদালতগুলোকে রিভিশন এখতিয়ার দেওয়া আছে।
২টি আদালতকে যথা:-
১। হাইকোর্ট বিভাগ।
২। জেলা জজ আদালত।


রিভিশন দায়েরে শর্তসমূহ:
১। নিম্ন আদালত কর্তৃক ডিক্রি বা আদেশ প্রদত্ত হবে।
২। ডিক্রি বা আদেশ আপিলযোগ্য নয়।
৩। গুরুত্বপূর্ণ আইনগত প্রশ্নে ভুল ও ন্যায় বিচার বিঘ্ন ঘটে।

হাইকোর্ট বিভাগে যখন রিভিশন দায়ের করতে হয়: ধারা-১১৫ (১)
হাইকোর্ট বিভাগে নিম্নে বর্ণিত ক্ষেত্রে রিভিশন দায়েরের আবেদন করা যাবে:
ক) জেলা জজ আদালত বা অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের ডিক্রি বা আদেশের বিরুদ্ধে ।
খ) সহকারি জজ আদালত বা সিনিয়র সহকারী জজ আদালত বা যুগ্ম জেলা জজ  আদালতের ডিক্রির বিরুদ্ধে।


জেলা জজ আদালতে যখন রিভিশন দায়ের করতে হয়: ধারা-১১৫ (২)
নিম্নে বর্ণিত আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করা যায় জেলা জজ  আদালতে:
ক) সহকারী জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে
খ) সিনিয়র সহকারি জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে
গ) যুগ জেলা-জজের আদেশ বিরুদ্ধে।


অতিরিক্ত জেলা জজের রিভিশন এখতিয়ার: ধারা-১১৫ (৩)
অতিরিক্ত জেলা জজ জেলা জজের রিভিশন এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারবেন।

দ্বিতীয় রিভিশন দায়ের: ধারা-১১৫ (৪)
দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে ২য় রিভিশন দায়ের করা যায় কিন্তু ২য় আপিল করা যায় না। তবে ২য় রিভিশন সাধারণত দায়ের করা যায় হাইকোর্ট বিভাগে। জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা
জজ কর্তৃক রিভিশন মামলায় প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ পক্ষ হাইকোর্ট বিভাগে অনুমতি সাপেক্ষে রিভিশন দায়ের করতে পারে। অর্থাৎ রিভিশন দায়ের করতে হলে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমতি প্রয়োজন।


তথ্য কণিকা।
১। রিভিউ আবেদন করতে হয় একই আদালতে।
২। রিভিশন ও আপিল দায়ের করতে হয় উচ্চ আদালতে।
৩। যেখানে আপিল চলে না সেখানে রিভিশন করা যায়।
৪। জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজ কর্তৃক প্রদত্ত রিভিশন মামলায় প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে সংস্কুদ্ধ পক্ষ হাইকোর্ট বিভাগে অনুমতি সাপেক্ষে রিভিশন দায়ের করতে পারে।
৫। দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে ২য় রিভিশন দায়ের করা যায় কিন্তু ২য় আপিল করা যায় না।
৬। ১১৫ ধারায় মোট ৫টি উপধারা আছে।
৭। তবে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে খালাস ও অপর্যাপ্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ২য় আপিল করা যায়।
৮। দেওয়ানিতে রিভিউর বিধান আছে কিন্তু ফৌজদারিতে নেই।
৯। জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজ কর্তৃক রিভিশন মামলায় প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ পক্ষ হাইকোর্ট বিভাগে অনুমতি সাপেক্ষে রিভিশন দায়ের করতে পারে।
১০। অতিরিক্ত জেলা জজেরও রিভিশনাল এখতিয়ার আছে। [ধারা ১১৫(৩)]


ধারা ১৪৪: পুনরুদ্ধারেরর জন্য আবেদন
Restitution (প্রত্যর্পণ):
১। যদি কোন ডিক্রি বা আদেশ পরিবর্তন বা রদ করা হয় এবং অনরুপ ডিক্রি বা আদেশের দ্বারা (যার পক্ষে ডিক্রি বা আদেশ পরিবর্তন বা রদ করা হয়) ঐ পক্ষ কোন সুবিধা পাবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে, তিনি তা ফিরে পাবার জন্য প্রত্যর্পণের দরখাস্ত করতে  পারেন।
২। দখল  প্রত্যর্পণের আদেশ আদালতের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা নয় বরং আইনানুগভাবে  আদালতের উপর ন্যাস্ত ।
৩। প্রত্যর্পণের দরখাস্তে ১৪৪ ও ১৫১ ধারা উল্লেখ করা যেতে পারে।


দেওয়ানি আদালতের সহজাত ক্ষমতা।
Inherent Power of the Court
ধারা-১৫১: অন্তনিহিত সহজাত ক্ষমতা:
কোন দেওয়ানি আদালত কর্তৃক ন্যায় সংগতভাবে  বিচারকার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে উক্ত  আদালতের উপর অর্পিত বিশেষ এখতিয়ার সম্পন্ন ক্ষমতা প্রয়োগ করার অধিকারকে সহজাত ক্ষমতা বলে।

শর্ত সমূহ:
১। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে অথবা
২। আদালতের কার্য প্রণালীর অপব্যবহার রোধ করার জন্য

তথ্য কণিকা
১। সকল দেওয়ানি আদালতের সহজাত ক্ষমতা আছে। কিন্তু ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র হাইকোর্ট বিভাগের সহজাত ক্ষমতা আছে। [ধারা ৫৬১ক]
২। আদালত যে কোন সময় মোকদ্দমার কার্যধারার সংশোধন করতে পারে।
৩৷ ১৫১ ধারায় প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন করা যায়, কিন্তু আপিল করা যায় না।



ধারা-১৫২ রায়, ডিক্রি বা আদেশগুলোর সংশোধন: 
রায়, ডিক্রি বা আদেশ সংশোধন যে কোন সময় আদালত নিজস্ব উদ্যোগে (Own motion) বা কোন পক্ষের আবেদনে করতে পারে নিম্ন বর্ণিত কারণে-
১। কেরানীর ভুল (clarical Mistakes)
২। গানিতিকভুল (Arithmetical Mistakes)
৩। আকস্মিক ভুল (Accidental ship) বা বিচ‍্যূতির (omission) কারণে রায়, ডিক্রি বা আদেশে ভুল হলে।


ধারা ১৫৩: সংশোধন করার অসাধারণ ক্ষমতা:
জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাসাইনমেন্ট আদরের যেকোনো সময় যেকোনো মুকাদ্দামা কার্যক্রম সংক্রান্ত যেকোন ভুলভ্রান্তি সংশোধন করতে পারেন।




দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ ও বিধি
আদেশ-১: মামলার পক্ষসমূহ (Parties to the suit),
আদেশ ২: মামলা গঠন
আদেশ ৪: মামলা দায়ের করা
বিধি ১: আরজি দাখিলের মাধ্যমে মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে।
বিধি ২: মামলার নিবন্ধন বই।
আদেশ ৫: সমন প্রদান।
আদেশ ৬: প্লিডিংস ( আরজি ও জবাব)।
আদেশ ৭: আরজি।
আদেশ ৮: লিখিত জবাব ও পারস্পারিক দাবি পরিশোধ।


আদেশ ৯: পক্ষদ্বয়ের উপস্থিতি অনুপস্থিতি।
আদেশ ১০: আদালত কর্তৃক উভয়পক্ষে জবানবন্দি গ্রহণ।
আদেশ ১১: আবিষ্কার ও পরিদর্শন।
আদেশ ১২: স্বীকৃতি।
আদেশ ১৩: দলিল দাখিল, আটক ও ফেরত।
আদেশ ১৪: বিচার্য বিষয়।
আদেশ ১৫: প্রথম শুনানিতে মোকদ্দমা নিষ্পত্তিকরণ।
আদেশ ১৬:  সাক্ষীর প্রতি সমন এবং সাক্ষীর উপস্থিতি।
আদেশ ১৭: মুলতবি।
আদেশ ১৮: মুকাদ্দার শুনানী এবং সাক্ষীদের জবানবন্দি।

আদেশ ১৯: এফিডেভিট।
আদেশ ২০: রায় এবং ডিক্রি।
আদেশ ২১: ডিক্রি জারি এবং আদেশ জারি।
আদেশ ২২: পক্ষগণের মৃত্যু, বিবাহ ও  দেউলিয়া।
আদেশ ২৩: মোকাদ্দমা প্রত্যাহার ও মিটমাট।
আদেশ ২৪: আদালতে খরচের জমা প্রদান।
আদেশ ২৫ : খরচের জন্য জামানত।
আদেশ ২৬: কমিশন নিয়োগ।


আদেশ ২৭: সরকার কর্তৃক বা সরকারের বিরুদ্ধে মোকাদ্দমা।
আদেশ ২৭ ক: সাংবিধানিক ব্যাখ্যা জড়িত আছে এমন মোকাদ্দমা।
আদেশ ২৯: কর্পোরেশন কর্তৃক বা তার বিরুদ্ধে মোকদ্দমা।
আদেশ ৩১: ট্রাস্টি, নির্বাহক বা প্রশাসক কর্তৃক বা তার বিরুদ্ধে মোকদ্দমা।


আদেশ ৩২: নাবালক মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি কর্তৃক বা তাদের বিরুদ্ধে মোকাদ্দমা।
আদেশ ৩৩: নিঃসম্বল ব্যক্তি কর্তৃক মোকাদ্দমা।
আদেশ ৩৮: রায় ঘোষণার পূর্বে গ্রেপ্তারও ক্রোক।
আদেশ ৩৯:  অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও অন্তবর্তীকালীন আদেশ।
আদেশ ৪০:  রিসিভার নিয়োগ।


আদেশ ৪১: মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল।
আদেশ ৪২: আপিলের ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল।
আদেশ ৪৩: আদেশের বিরুদ্ধে আপিল।
আদেশ ৪৫: আপিল বিভাগের নিকট আপিল।
আদেশ ৪৬: রেফারেন্স (উচ্চতর আদালতে অভিমত)
আদেশ ৪৭: রিভিউ।

আদেশ-১: মামলার পক্ষসমূহ (Parties to the suit),
কারা মামলার বাদী হিসেবে সামিল হতে পারে।
মামলার প্রয়োজনীয় পক্ষ (Necessary Parties):
যে পক্ষের উপস্থিতি মামলা গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় এবং যার উপস্থিতি ছাড়া কোন ডিক্রি দেওয়া যায় না, তাকে প্রয়োজনীয় পক্ষ বলে ।

মামলার যথাপোযুক্ত পক্ষ (Proper Parties):
আদালত যে পক্ষর উপস্থিতি ছাড়া কার্যকরী আদেশ দিতে পারে, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ এবং চূড়ান্ত রায় দিতে পারে না, তাকে যথাপোযুক্ত পক্ষ বলে।

 বিধি-৮, প্রতিনিধিত্ব মূলক মামলা (Representative suit)
এক ব্যক্তি একই রকম স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে, অন্য সকলের পক্ষে মামলা দায়ের করতে বা জবাব দিতে পারে।

বিধি-৯: অ-সংযুক্ত এবং অপসংযোগ পক্ষসমূহ (Non Joinder and Mis Joinder of Parties):
 ভুল ভাবে মামলার পক্ষ করা এবং কাউকে পক্ষ হতে বাদ দেওয়া।

বিধি ১০: ভুল বাদী নামে মামলা।

বিধি-১৩: অপসংযোগ বা অ-সংযুক্ত সম্পর্কে আপত্তি (Objection as to  Non Joinder or Mis Joinder):
ভুল ভাবে কাউকে মামলায় পক্ষ করা হলে বা পক্ষ থেকে বাদ দেওয়া হলে সে সম্পর্কে আপত্তি।


আদেশ-২: মামলা গঠন।
বিধি-১: মামলা গঠন (Frame of suit):
কোন মামলার গঠন এমনভাবে কার্যকর করতে হবে, যাতে বিরোধভুক্ত বিষয়টি (The subject in dispute) সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়।

বিধি ২: সমগ্র দাবি মামলার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
দাবির অংশ পরিত্যাগ করলে বাদী পরে সে দাবির জন্য মামলা করতে পারবে না।

আদেশ ৪: মামলা দায়ের করা।
বিধি ১: আরজি দাখিলের মাধ্যমে মোকদ্দমা দায়ের করতে হবে।
বিধি ২: মামলার নিবন্ধন বই।


আদেশ-৫: সমন প্রদান। ২০১২ সালে সংশোধনের পর।
বিধি-১: সমন।

বিধি-২: সমনের সাথে সংযুক্ত নকল বা বিবৃতি:
প্রতিটি সমনের সাথে আরজির নকল বা যদি অনুমতি প্রদত্ত হয় তাহলে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি বিদ্যমান থাকতে হবে।

বিধি- ৯: সমন জারির জন্য অর্পণ বা প্রেরণ।
বিধি  ৯ক: বাদী কর্তৃক সমন জারি।
বিধি ১০: সমন জারীর পদ্ধতি।
বিচারক দ্বারা স্বাক্ষর বা বিচারক দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার স্বাক্ষর এবং আদালতের সীল মোহরাস্কিত সমনের একটি নকল প্রেরণের মাধ্যমে সমন জারি করা হয়।

বিধি ১১: বহুসংখ্যক বিবাদীর প্রতি সমন জারি:।
বিবাদীর সংখ্যা একাধিক থাকলে প্রত্যেকের উপর সমন জারি করতে হবে।

বিধি ১৩: বিবাদীর যে প্রতিনিধি তার ব্যবসা পরিচালনা করে, তার  উপর জারি।
বিবাদীর যে প্রতিনিধি তার ব্যবসা পরিচালনা করে, তার  উপর সমন প্রেরণ করলে উত্তম জারি (Duly Served) হিসেবে গণ্য হবে।

বিধি-১৪: স্থাবর সম্পত্তির জন্য মামলার দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধির উপর সমন জারি করা যাবে।

বিধি-১৫:  বিবাদীর পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক (Adult Member) ব্যক্তির উপর সমন জারি।
২০১২ সালে সংশোধনের পর যখন বিবাদীর বা সমন গ্রহণের ক্ষমতা প্রাপ্ত তার কোন প্রতিনিধির উপর ব্যক্তিগত ভাবে সমন জারি করা যায় না। তখন পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক (Adult Member) ব্যক্তির উপর সমন জারি করা যাবে। ভৃত্য (Servent) পরিবারের সদস্য হিসাবে গণ্য হবে না। ২০১২ সালের পূর্বে Adult Male Member এর নিকট সমন প্রদানের বিধান ছিল।

বিধি ১৬: সমন গ্রহণকারী প্রাপ্তি স্বীকার মূলক স্বাক্ষর।
সমন প্রেরণকারী কর্মকর্তা (Serving officer) সমন প্রেরণের পর সমন গ্রহনকারী ব্যক্তির থেকে প্রাপ্তি স্বীকার মূলক স্বাক্ষর গ্রহন করবে।

বিধি-১৭: বিবাদী সমন নিতে অস্বীকার করলে বা যখন বিবাদীকে খুঁজে পাওয়া যায় না।
সেক্ষেত্রে যে গৃহে বিবাদী সাধারণত বসবাস করে বা ব্যবসা করে সেখানকার কোন প্রকাশ্য স্থানে সমনের একটি নকল ঝুঁলিয়ে  বা টানিয়ে সমন জারি করা যাবে।

বিধি ১৯: ১৭ বিধি অনুসারে সমন ফেরত আসলে সমন জারি কারক কর্মকর্তাকে আদালত পরীক্ষা করতে পারেন। ।
যে ব্যক্তির উপস্থিতিতে সমনের নকল ঝুঁলিয়ে দেওয়া হয় বা বিবাদীর গৃহ শনাক্ত করা হয়, উক্ত ব্যক্তির নামও ঠিকানা লিখে নিতে হবে।

বিধি-১৯খ: ব্যক্তিগত জারীর অতিরিক্ত হিসেবে ডাকযোগে ও যুগপৎভাবে (Simultaneously) সমন ইস্যু হবে।
তবে আদালত না চাইলে তা দরকার হবে না।

বিধি-২০: ঝুঁলিয়ে জারি বা বিকল্প সমন জারি (Substituted Service):

বিধি-২১: বিবাদী অপর আদালতের এখতিয়ারে বসবাস করলে:
বিবাদী অপর আদালতের এখতিয়ারে বসবাস করলে, সমন জারীকারি আদালত বিবাদীর বাসস্থানের উপর এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের নিকট অথবা কোন কর্মচারীর মাধ্যমে অথবা ডাকযোগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সমন প্রেরণ করতে পারবেন ।

বিধি-২৪: বিবাদী কারাগারে থাকলে:
বিবাদী কারাগারে থাকলে সমন ইস্যু বা প্রেরণ করতে হবে কারাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে। অথবা ডাকযোগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বা অপর কোন উপায়ে কারাগারের ভারপ্রাপ্তর কাছে প্রেরণ করত হবে।

বিধি ২৫: বিবাদী বাংলাদেশে বাইরে থাকলে:
যেক্ষেত্রে বিবাদী বাংলাদেশের বাইরে বসবাস এবং তার কোন প্রতিনিধি থাকে না, সেক্ষেত্রে সমন জারি করতে হবে, বিবাদীর বাসস্থানে ঠিকানা বরাবর ডাকযোগে অথবা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে। এছাড়া ও আদালত আদেশ দিতে পারেন ফ্যাক্স বা ইমেলের মাধ্যমে।

বিধি ২৭: বেসরকারি কর্মকর্তা বা রেলওয়ে কর্মচারী বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উপর সমন জারি।
যেক্ষেত্রে বিবাদী একজন সরকারি কর্মকর্তা নয়। যেক্ষেত্রে বিবাদী একজন রেলওয়ের কর্মচারী অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কৰ্মচারী, সেক্ষেত্রে বিবাদীর উপর সমন জারীর জন্য বিবাদী যে অফিসে চাকরী করে, সে অফিসের প্রধান কর্মকর্তার বরাবরে প্রেরণ করবেন।

বিধি-২৮: সৈনিক, নাবিক বা বৈমানিকের উপর সমন জারি:
বিবাদী যদি সৈনিক, নাবিক বা বৈমানিক হয় তাহলে সমন প্রেরণ করতে হবে তার অধিনায়ক কর্মকর্তার (commading officer) নিকট।

বিধি-৩০: সমনের পত্র প্রেরণ।
substitution of letter for Summons (সমনের পত্র) আদালত বিবাদীর মর্যাদা বিবেচনা করে তার প্রতি সমন না দিয়ে তার পরিবর্তে পত্র প্রেরণ করতে পারেন। তবে পত্ৰটি সমন হিসেবেই গণ্য হবে।



আদেশ ১৬: সাক্ষীর প্রতি সমন এবং সাক্ষী হাজির করা ।

বিধি-১: সাক্ষ্য দান বা দলিল দাখিলের জন্য সমন দেওয়া।
বিধি-৪: অপর্যাপ্ত টাকা জমা দেওয়া হলে পদ্ধতি।
প্রয়োজন অপেক্ষা কম টাকা জমা দিলে বা কোন সাক্ষীকে একদিনের বেশি হাজির রাখা হলে, আদালত অতিরিক্ত টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিবেন এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষ উক্ত টাকা দিতে ব‍্যর্থ হলে তার অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও নিলাম বিক্রয় এর আদেশ বা উক্ত ব্যক্তিকে সাক্ষ্যদান থেকে অব্যাহতি বা উভয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

বিধি-৫: সমনে হাজিরার সময়, স্থান, উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে হবে।
বিধি-৬: দলিল দাখিলের জন্য সমন।
কোন ব্যক্তিকে সাক্ষ্যদানের জন্য সমন না দিয়েও শুধুমাত্র দলিল উপস্থিত করার জন্য সমন দেওয়া যাবে।
বিধি-৭: আদালত উপস্থিত কোন ব্যক্তিকে সাক্ষ্য দিতে বা দলিল দাখিল করার আদেশ দিতে পারেন।

বিধি-১০: সাক্ষী সমন অমান্য করলে:
ক) আদালত উক্ত সাক্ষীর প্রতি হুলিয়া জারি করতে পারবেন। হুলিয়ার একটি কপি তার বাসগৃহে বা প্রকাশ্য স্থানে ঝুলিয়ে দিতে হবে।
খ) গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং আদালত চাইলে সম্পত্তি ক্রোকাদেশ দিতে পারেন। তবে স্বল্প এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত স্থাবর সম্পত্তি  ক্রোকের কোন আদেশ দিতে পারবেন না।
বিধি-১১: সাক্ষী হাজির হলে ক্রোক আদেশ প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

বিধি-১২: সাক্ষী হাজির হতে ব্যর্থ হলে সে ক্ষেত্রে পদ্ধতি।
 সাক্ষী হাজির না হলে ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং জরিমানা ও খরচের টাকা আদায়ের জন্য ক্রোককৃত সম্পত্তি নিলাম বিক্রয়ের নির্দেশ দিতে পারেন।

বিধি-১৪:  আদালত মামলা আগন্তুক  সাথী কে সময় দিতে পারেন।
 মামলার পক্ষ নয় বা কোন পক্ষের সাক্ষীও নয় এমন ব্যক্তিকে সাক্ষী বা দলিল দাখিলের জন্য আদালত সমন দিতে পারেন।
 বিধি ১৯:  কোন নির্ধারিত সীমানার অধিবাসী না হলে কোন সাক্ষীকে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া যাবে না।
বিধি-১৯, আদেশ-১৬। এই নিয়ম মামলার পক্ষদের প্রতি প্রযোজ্য নয়।

বিধি ২১: সাক্ষী সম্পর্কিত বিধিসমুহ সনদপ্রাপ্ত পক্ষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
 আদালত উপস্থিত কোন পক্ষকে সাক্ষী তলব দান বা দলিল দাখিলের নির্দেশ দিলে, তা যদি অস্বীকার বা অমান্য করলে আদালত উক্ত পক্ষের বিরুদ্ধে মামলার রায় বা অন্য কোন উপযুক্ত আদেশ দিতে পারেন।







আদেশ ৬ রুল ১৭: আরজির জবাব সংশোধন।
আদেশ ৭ রুল নিয়ম ১: আরজীতে যে সকল বিষয় উল্লেখ করতে হবে।
আদেশ ৭ রুল ২: অর্থ আদায়ের মামলা।
আদেশ ৭ রুল ৩: যেক্ষেত্রে মামলার বিষয়বস্তু স্থাবর সম্পত্তি।
আদেশ ৭ রুল ১১: আরজি প্রত্যাখ্যান।
আদেশ ৮ রুল ১: লিখিত বিবৃতি।।
আদেশ ৮ রুল ২: নূতন ঘটনা অবশ্যই বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হবে।
আদেশ ৮ রুল ৩: অস্বীকৃতি সুস্পষ্ট হতে হবে।
আদেশ ৮ রুল ৪: এড়িয়ে যাবার উদ্দেশ্যে অস্বীকৃতি।
আদেশ ৮ রুল ৫: সুস্পষ্ট অস্বীকৃতি।
আদেশ ৮ রুল ৬: লিখিত বিবৃতিতে পারস্পরিক দায় শোধের বর্ণনা দান করতে হবে।
আদেশ ৮ রুল ৭: পৃথক অজুহাতের ভিত্তিতে পারস্পরিক দায় শোধের বিষয়কে অভিযোগের
জওয়াব হিসেবে উত্থাপন।
আদেশ ৮ রুল ৮: জবাবের নূতন অজুহাত।
আদেশ ২৩ রুল ১: মামলা প্রত্যাহার অথবা আংশিক দাবি বর্জন।
আদেশ ২৩ রুল ২: প্রথম মামলার দ্বারা তামাদি আইন প্রভাবিত হবে না।
আদেশ ৩৮ রুল ৫ রায় ঘােষণার পূর্বে সম্পত্তি ক্রোক।
আদেশ ৩৯ রুল ১: যে সকল মামলায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর হতে পারে।
আদেশ ৩৯ রুল ২: চুক্তিভঙ্গ কার্যের পুনরাবৃত্তি বা অব্যাহত রাখা বন্ধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা।
আদেশ ৩৯ রুল ৩: নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করার পূর্বে আদালত বিরুদ্ধ পক্ষকে নোটিশ দেবেন।
আদেশ ৩৯ রুল ৪: নিষেধাজ্ঞার আদেশ অবসান, পরিবর্তন বা রদ করা যাবে।
আদেশ ৪০ রুল ১: তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ।
আদেশ ৪১ নিয়ম ১: মূল ডিক্রির বিরুদ্ধে আপীল
আদেশ ৪৩ নিয়ম ১: আদেশের বিরুদ্ধে আপীল।
আদেশ ৪৭ রুল ১: রিভিউ-এর দরখাস্ত।

No comments:

জমি জমা

 = ''খতিয়ান'' কি? = ''সি এস খতিয়ান'' কি? = ''এস এ খতিয়ান'' কি? = ''আর এস খতিয়ান'...