• দুর্নীতি বাজ হুজুর :
সে যখন ক্লাস ফোর পাশ করে। তার পর সে একটি নতুন হাফেজি(যে মাদ্রাসা কুরআন শরীফ মুখস্থ করানো হয়) মাদ্রাসার ভর্তি হয়। ছাত্রটি মনের অজান্তেই গভীর ইচ্ছা পোষণ করে সে আল্লাহর কুরআন মুখস্ত করবে। ছাত্রটি তার বাসার সাথে নতুন একটি হাফেজি মাদ্রাসা ভর্তি হয়। একদিন সে একজন মানুষ কাছ থেকে শুনেছিল যে ,সে যদি হাফেজ হতে চায় তাহলে তাকে তার বাবা-মা থেকে অনেক দূরে একটি হাফেজি মাদ্রাসা পড়তে হবে। তখন ছাত্রটি তার বাবাকে বলল যে বাবা আমি দূরের মাদ্রাসা ভর্তি হতে চাই ।আমি যদি দূরের মাদ্রাসা ভর্তি হই তাহলে আমি হাফেজ হতে পারব। বাবা তার ছেলে কে জানত , বাবা তার ছেলেকে বলল যে তুমি তোমার বাড়ির নিকট মাদ্রাসা থেকে হাফেজ হতে পারবে। কিন্তু ছেলে তার বাবাকে নানা ভাবে বোঝাতে চেষ্টা করে ।বাবা তার ছেলেকে অনেক ভালোবাসাত তাই তার ছেলেকে দূরের একটি মাদ্রাসা ভর্তি করাতে চায়নি কিন্তু এক পর্যায়ে বাবা তার অনুরোধ রাখে ।
ছেলেটি যখন প্রথম বার দূরের একটি মাদ্রাসা গেল তখন সে সারাক্ষন কুরআন পড়তে থাকত এই আশায় যে সে হাফেজ হতে পারবে এমনকি সেই ছেলেটি আশরের নামাজের পর যখন ছাত্ররা মাঠে খেলতে যেত তখন পাগল ছাত্রটি কুরআন শরীফ পড়িত।
ছাত্রটি দূরের মাদ্রাসা যাওয়ার আগের একটি ঘটনা শুনলে আপনি এই ছাত্রের পাগলামির একটি নমুনা বুঝতে পারবেন। একদিন ছাত্রটি যখন আসরের নামাজের পর মাঠে খেলতে ছিল। তখন একটি বল মাঠের সাথে থাকা একটি নোংরা পুকুরে পড়ে গেল । মাঠে উপস্থিত থাকা খেলোয়াড়রা তাকে বলল যে তুমি যদি ওই নোংরা পানি থেকে বল তুলে আনতে পারো তাহলে তুমি হাফেজ হতে পারবে। তখন ছেলেটি হাফেজ হওয়ার আশায় নোংরা পানিতে নেমে গেল বলটি উঠানোর জন্য। ছেলেটি যেহেতু সাঁতার পারত না সেহেতু ছেলেটি নোংরা পানিতে নেমে ভয় পেয়ে গেল। এখন আপনি বলতে পারেন ছেলেটি পুকুরে ডুবল না কেন। আরে ভাই নোংরা পুকুরে ময়লা জমে পুকুরের গভীরতা কমে যায় তাই ছেলেটি ডুবেনি। এখন চলেন আগে গল্পটিতে ফিরে যাই। ছাত্রটি যখন তার দূরের মাদ্রাসা পড়তে গিয়ে ছিল তখন ছেলেটি আরো অনেক পাগলামি করে ছিল। একজন মানুষ তাকে বলছিল যে হুজুরের হাতে মার খেয়ে অনেক মানুষ হাফেজ হয়েছে ।তাই যখন হুজুর তাকে মারত তখন সে এই ভেবে খুশি হত যে সে হাফেজ হতে পারবে।তাই ছেলেটি মার খেয়ে হাসত এই কথা ভেবে যে সে হাফেজ হতে পারবে। সত্য কথা হল যে সে ব্যথা পেত। কি পরিমান সে মার খেয়েছে তা বোঝার জন্য বলছি। তার হাতে একটি নির্দিষ্ট স্থানে মার খেয়ে রক্ত জমাট হয়ে সেই নির্দিষ্ট স্থানটি শক্ত হয়ে ছিল তা সে হাত দিয়ে কাটা চামড়া তুলতে পারত। সে ভাবত যে মাথার পিছনে কাটা দাগ থাকলে সে হাফেজ হতে পারবে। তার এই রকম মনে করার কারণ হলো অনেক হাফেজ সাহেবের মাথার পিছনে কাটা দাগ দেখে ছিল।তাই সে তার মাথা পিছনে কাটার জন্য চেষ্টা করত। যেহেতু ছেলেটি ভীত প্রকৃতির ছিল সেহেতু সে তার মাথা পিছনে কাটতে সফল হয়নি। এই মাদ্রাসা বিভিন্ন সংস্থা থেকে আথিক সহায়তা পেয়ে থাকত। সেই অর্থ দিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রদের শীতের পোশাক এবং ভাল খাবার ব্যবস্থাপনা করা বড় হুজুরের দায়িত্ব ছিল। মাদ্রাসার ফান্ডে ভালো পরিমাণ টাকা জমা করা হয় কিন্তু জবাবদিহিটা অভাবে সেই টাকা গরিব ছাত্রদের কাছে পরোক্ষ ভাবেও যেত না। একদিন ঐ বোকা ছাত্রটি দেখল যে মাদ্রাসার ছাত্রদের কে হুজুররা শিখিয়ে দিচ্ছে যে তারা যেন মিথ্যা কথা বলে ,আপনি এখন বলবেন কি রকম মিথ্যা কথা হুজুররা ছাত্রদের শিখিয়ে দিয়ে ছিল?
তাহলে শুনুন , হুজুররা ছাত্রদের কি ধরনের মিথ্যা কথা শিখিয়ে দিয়ে হয়ে ছিল। কয়েক জন অতিথি মাদ্রাসা দেখতে আসবে তারা যদি জিজ্ঞাসা করে যে তোমার বাবা কি জীবন আছে? তখন ছাত্ররা সকলে বলবে যে তাদের বাবা মারা গেছে। কিন্তু সত্য হল যে তাদের মধ্যে কিছু ছাত্রের বাবা জীবিত ছিল। অতিথি যদি জিজ্ঞাসা করে যে তোমাদেরকে কি খাবার দেয়া হয়।তখন ছাত্রদের বলতে হবে যে তাদের কে অনেক ভালো খাবার দেয়া হয় একটি মিথ্যা খাবারে তালিকা ছাত্রদেরকে মুখস্থ করানো হয়েছিল। কিন্তু সত্য কথা হল যে সেই খাবার তালিকার সাথে বাস্তব খাবারের তালিকা কোন মিল ছিল না। বোকা ছাত্রটি একটি খারাপ অভ্যাস ছিল যে সে মিথ্যা কথা বলতে পারতো না।
কিছুদিন পর হঠাৎ করে অতিথিগণ মাদ্রাসা উপস্থিত হল। তখন বোকা ছাত্রটি ঘুমাচ্ছিল। আপনাদের হয়ত জানেন না মাদ্রাসা ছাত্ররা অনেক সকালে ঘুম থেকে উঠতে হয় ।তাই তাদেরকে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমানোর জন্য দেয়া হয়। দিনটা ছিল শীতকাল একজন অতিথি বোকা ছেলেটিকে বলল তুমি শীতে কাঁপছে কেন। ছেলেটি উত্তর দেয়ার আগেই অতিথি আবার বলে উঠলো যে তোমাকে কি শীতের কাপড় দেয়া হয়নি। ছেলেটি উত্তর দিল না শীতের কাপড় দেয়া হয়নি। ছেলেটি মনের অজান্তেই সত্য কথা অতিথিকে বলে ফেলল।
প্রতিদিন রাতেই এশার নামাজের পর ঐ মাদ্রাসা একটি নিয়ম ছিল যে ছাত্রদের মধ্য থেকে কয়েক জন ছাত্র দাড়িয়ে সুরা মুলক মুখস্থ তেলোয়াত করবে। কয়েক জন্য ছাত্র মধ্যে ঐ বোকা ছাত্রটি ও ছিল। ঐ বোকা ছাত্রটি ছিল তোতলা তাই তেলোয়াত করার সময় তোতলা তো।
যেদিন অতিথিরা এসেছিল সেদিন রাতে এই বোকা ছেলেটি সুরা মুলক তেলাওয়াত করেছিল তখন ওই মাদ্রাসার বড় হুজুর তাকে কুরআন তেলাওয়াত থামিয়ে তার মতো করে তোতলামি অভিনয় করে তাকে তিরস্কার করলো এবং তারপর যে হাফেজ সাহেব তার মুখস্ত পড়া ধারতেন তাকে এই মাদ্রাসার বড় হুজুর নির্দেশ দিলেন যে সেই তোতলা ছাত্রটি মুখস্থ করা পড়া আর যেন না নেওয়া হয়। বোকা ছাত্রটি সেই ঘটনা পর যখন সে ঘুমাতে গেল তখন তার আর ঘুম আসছিল না । ছাত্রটি সারা রাত ধরে কেঁদে বালিশ ভিজিয়ে ফেলল। পরের দিন বোকা ছাত্রটি যখন পড়া মুখস্থ করে হুজুরের কাছে পড়া দিতে গেল। তখন হুজুর তার পড়া ধরো না। বোকা ছাএটি হুজুর কে অনুরোধ করলো। হুজুর তার কোন অনুরোধ রাখেনই। তারপর ছাত্রটি মাদ্রাসা থেকে চলে গেল।
লেখক:যুবাইর মাহমুদ তালুকদার ।
No comments:
Post a Comment