Introduction to Chunking:
[শব্দ] এ সপ্তাহে আমরা চাঙ্ক (Chunk) সম্পর্কে কথা বলব, চাঙ্ক হোল জ্ঞান টুকরা (ভাণ্ডার ), যেখানে থেকে দরকার মত তথ্য নিয়ে কাজে ব্যবহার করা যায়। আমার কথা বলব কিভাবে চাঙ্ক তৈরি করতে হয়, আর কোন বিষয় ভালভাবে বুঝতে, ঐ বিষয়ে নতুন নতুন সমস্যা সমাধানে কিভাবে চাঙ্ক ব্যবহার করতে হবে, কিভাবে চাঙ্ক পরীক্ষায় ভাল করতে সাহায্য করে তা শিখব। মিথ্যা শেখা বা শেখা ছলনা নিয়েও কিছু কথা বলব । শেখা ছলনা হোল অকার্যকর উপায়ে শেখার চেষ্টা করে ব্রেনকে ভোলানো যে শেখা হচ্ছে, আসলে সময় নষ্ট করা ছাড়া কিছু হচ্ছে না। আমাদের আলোচনায় ঐসব বাজে শিক্ষা পদ্ধতি চিনিয়ে দেব, একই সাথে গবেষণায় পরীক্ষিত এমন কিছু শেখার নিয়ম সম্পর্কে বলব যা শিখতে সাহায্য করবে। শেষে আমরা শেখা পোক্ত করা ( Overlearning) বিষয়েও জানব শেখা পোক্ত করলে ঐ তথ্য মনের গভীরে গেঁথে যায় ঠিকই, তবে কাদায় আটকানো গাড়ীর চাকা ঘুরলেও যেমন সামনে আগায় না তেমনি পড়াশনাও অকার্যকর বা বিফল হতে পারে। পড়াশোনায় আরো তাৎপর্য আনা যায় পর্যায়ক্রম নিয়মে পড়ে পর্যায়ক্রম নিয়মে ( interleaving) একই বিষয়ের বিভিন্ন পাঠ একের পর এক শিখে শেখায় বৈচিত্র্য যোগ করা যায়। আমী বার্বরা ওক্লী। শেখার পদ্ধতি সেকার জন্য ধন্যবাদ।
What is a Chunk?
এই ভিডিওতে আমরা একটা প্রশ্নের উত্তর দেব। প্রশ্নটা হোল চাঙ্ক ( chunk) কি ? এমন প্রায়ই হয় যে প্রথমবার নতুন কোন কথা শুনে, নতুন কিছু দেখে সব গোলমেলে লাগে, ঠিক এই এলোমেলো পাজল টুকরাগুলোর মত। চাঙ্কিং বলতে আমরা মস্তিস্কের ঐ ক্ষমতা বুঝি যাদ্বারা ছোট ছোট তথ্যকে অর্থ দিয়ে একসাথে করা হয় । যুক্তি দিয়ে গাঁথা তথ্য ভান্ডার (chunk) মনে রাখা সহজ, এছাড়া এটা শেখার সময় আরেকটা বড় তথ্যর মানে বুঝতে অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। কোন কিছু্র মূল বিষয় না বুঝে শুধু মুখস্থ করলে, আমরা বুঝতে পারব না কি পড়া হচ্ছে, কেন এবং কিভাবে এটা নতুন আরেকটা ধারণা শিখতে আমাদের সাহায্য করবে। ছবিতে মাঝখানে যে পাজলের টুকরাটা দেখছেন খেয়াল করুন এতে অন্য পাজলের সাথে জোড়া লাগার মত কোন খাঁজ নেই।
0:54
এর আগে আমরা ঘটনাকালীন স্মৃতির কথা বলেছি দেখুন ব্রেনের ভিতরে কপালের পিছনের অংশ যাকে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স বলা হয় এখানে কিভাবে চারটা খোপে ঘটনাকালীন বা কাজের তৎক্ষণাৎ স্মৃতি জমা থাকে। যখন আমরা কোন কাজ নিয়ে নিবিষ্টভাবে চিন্তা করি তখন মনোযোগ অক্টোপাসের মত আচরণ করে। অক্টোপাসের শুঁড়ের মত মনোযোগের লম্বা হাত ওই চার খোপ থেকে বেড়িয়ে এসে যখন যেমন প্রয়োজন তেমনি ব্রেনের যেখানে যা তথ্য রাখা আছে তা নিয়ে ঘটনার সময়ে নতুন পাওয়া তথ্যের সাথে মিলিয়ে দেখে।
1:27
মনে রাখতে হবে, এ ধরণের স্নায়ু সংযোগ ডিফিউজ মোডে এলোমেলো সংযোগ থেকে আলাদা। ফোকাসড মোড বা নিবিষ্ট মনোযোগে শেখার একটা বিশেষ দিক হলো গভীর চিন্তা করে ব্রেনের বিভিন্ন অংশে রাখা প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পাওয়া এবং দরকার মত ব্যবহার করা। অনেক সময় চাঙ্ক বা তথ্য ভান্ডার তৈরি করার এটাই প্রথম ধাপ। জেনে অবাক হবেন যে মানুষিক চাপে থাকা অবস্থায় মনোযোগের অক্টোপাসের মত শুঁড় বাড়িয়ে তথ্য সংযোগ ঘটানোর ক্ষমতা কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়। এ জন্য দেখি যে রেগে থাকা, চাপে থাকা বা ভয়ের অবস্থায় ব্রেন ভাল মত কাজ করে না।
2:04
স্নায়ু বিজ্ঞানের ভাষায় চাঙ্ক হলো তথ্য ভান্ডার বা তথ্য টুকরা যেখানে তথ্যগুলোকে কোন অর্থ দিয়ে বা ব্যবহার অনুযায়ী একত্র করা হয়েছে। আমরা তিনটা অক্ষর নেই, গ, র, ম, এরপর এদেরকে মনে রাখা সহজ এমন অর্থ দিয়ে একটা চাঙ্ক বানাই, শব্দটা গরম। ব্যাপারটা যেন এলোমেলো একটা কম্পিউটার ফাইলকে জিপ করা। গরম নামের চাঙ্ক সৃষ্টির সাথে সাথে নিউরনগুলো ঐ শব্দ সুরে সুমধুর তালে গেয়ে উঠে। আমাদের বিক্ষিপ্ত চিন্তা-ভাবনাগুলো সুন্দর ভাবে সাজিয়ে সহজে তথ্য আদান প্রদানের উপযুক্ত ব্যবস্থা করার জন্য বেশ জটিল স্নায়ুবিক প্রক্রিয়া কাজ করে। বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার, লেখকের রচণা অথবা শিল্পীর ছবি যাই দেখিনা কেন সব কিছুর ভিত্তি হলো অক্ষর, ধারণা আর জ্ঞানের সমন্বয়ে তৈরি বিভিন্ন চাঙ্ক। আমরা একটা শিশুর স্প্যানিশ শেখার কথা আলোচনা করি। যে শিশুটা স্প্যানিশ ভাষী পরিবারে বড় হচ্ছে তার জন্য স্প্যানিশ শেখা নিঃশ্বাস নেওয়ার মত স্বাভাবিক। মা শিশুকে মামনি ( স্প্যানিশে মামা ) বলে ডাকেন। শিশুও মাকে মামনি বলে উত্তর দেয়। শিশুর মস্তিস্কের নিউরনগুলো জ্বলে উঠে এবং জ্বলন্ত অবস্থায় অন্য নিউরনের সাথে যুক্ত হয় এভাবে মামনি শব্দের সাথে মায়ের মিষ্টি হাসির সম্পর্ক ব্রেনে সুদৃঢ় ভাবে গেঁথে যায়। এটি মানুষের জীবনের একটা উজ্জ্বল স্মৃতির উদাহরণ, সাধারণত একটা স্মৃতির সাথে এরকম আরও অনেক স্মৃতি এসে জড়ো হয়।
3:29
পৃথিবীর অন্যতম সেরা ভাষাশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটা হলো আমেরিকার সামরিক ভাষাশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এখানে আমি রাশিয়ান ভাষা শিখেছি, এই ইনস্টিটিউটে ভাষা শেখানোর জন্য ফোকাসড মোডে মুখস্থ এবং পুনরাবৃত্তি করানো হয় এর পাশাপাশি ডিফিউজ মোডে ঐ ভাষাভাষী লোকদের সাথে স্বাভাবিক কথাবার্তা অনুশীলনের সুযোগ থাকে। এই কৌশলের উদ্দেশ্য হলো ভাষার সবচেয়ে ব্যবহৃত শব্দ এবং কথার ধরণগুলো মাথায় গেঁথে দেয়া যেন শিক্ষার্থী সহজে এবং সৃষ্টিশীলভাবে নতুন শেখা ভাষায় কথা বলতে পারে যেভাবে সে নিজ ভাষায় বলে থাকে। দেখা গেছে যে একাডেমিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হওয়ারও প্রথম পদক্ষেপ হলো ছোট ছোট বিক্ষিপ্ত তথ্য তাৎপর্য অনুযায়ী একত্র করে সংশ্লিষ্ট তত্ত্ব -তথ্যের চাঙ্ক তৈরি করে মনস্তাত্ত্বিক পূর্ণ দখল প্রতিষ্ঠা করা। পারদর্শিতা অর্জন করা সম্ভব এমন যেকোনো বিষয়ের ক্ষেত্রে মস্তিস্কে তথ্য চাঙ্ক গঠনের ধারণা প্রযোজ্য হতে পারে যেমন খেলাধুলা, সংগীত, নৃত্য ইত্যাদি। আসলে চাঙ্ক বলতে যা বোঝাচ্ছে তা হলো একগুচ্ছ নিউরন একসঙ্গে জ্বলে ওঠা এরফলে একটা জটিল চিন্তা অথবা শারীরিক কসরত সাবলীলভাবে এবং অনায়াসে করা যায়। চাঙ্ক তৈরির পরীক্ষিত পদ্ধতি হলো নিবিষ্ট মনোযোগে অনুশীলন এবং পুনরাবৃত্তি করে বিষয়গুলো স্মৃতিতে গেঁথে ফেলা। চাঙ্ক গড়ে ওঠে ছোট ছোট প্রচেষ্টায়, ছোট চাঙ্ক আরও বড় হয়, সব চাঙ্ক মিলে বিষয়কে নতুন সৃষ্টিশীল দৃষ্টিতে দেখতে, বুঝতে সাহায্য করে এভাবে একজন ধীরে ধীরে ঐ প্রসঙ্গে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন।
তবে এই কোর্সের অন্য অংশে আপনারা জানবেন যে কোন বিষয়ে সত্যি সত্যি সৃজনশীল গুরু হওয়ার জন্য অনুশীলন এবং পুনরাবৃত্তি একমাত্র নয়, তবে একটা দরকারী কৌশল। চাঙ্কিং ব্রেনকে অনায়াসে চলতে সাহায্য করে। একবার যদি কোন ধারণা, মতামত বা কাজ চাঙ্কে পরিণত করে নেয়া যায় তারপর আর ঐ ব্যাপারে খুঁটিনাটি মনে রাখার দরকার হয় না। চাঙ্ক হয়ে গেছে মানে মূল জিনিসটা মস্তিস্কে আয়ত্তে এসে গেছে।
5:32
সকালে তৈরি হয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়া, এই ভাবনাটার কথাই ধরুন। একটা অতি সাধারণ ভাবনা, আমি তৈরি হব, ভেবে দেখুন এর সাথে সাথে কতগুলো জটিল কাজ একের পর এক আমরা করতে থাকি, এই সবগুলো আমি বাইরে যেতে তৈরি হব এই একটা চাঙ্কের অধীনে ব্রেনে সুরক্ষিত ছিল। এর পরের পাঠে আমরা শিখব কিভাবে চাঙ্ক তৈরি করতে হয়। আমী বার্বরা ওক্লী। শেখার পদ্ধতি সেকার জন্য ধন্যবাদ। [শুন্য শব্দ]
How to Form a Chunk - Part 1
এই ভিডিওতে আমরা চাঙ্ক সম্পর্কে জানব।
প্রথমে ব্যাখ্যা দিচ্ছি, কিভাবে চাঙ্ক তৈরি করবে।
ধর তুমি গিটারে একটা কঠিন গান বাজাতে শিখছ
সম্পূর্ণ গানটা কিভাবে বাজাতে হবে, মস্তিস্কে
স্নায়ুর মধ্যে এটার স্পষ্ট ধারনাকে একটা বড় তথ্য ভান্ডার ভাবতে পার।
তুমি প্রথমে গানটা শুনবে।
তুমি অন্য কাউকে গানটা বাজাতে দেখতেও পার, বিশেষ করে তুমি যদি
একেবারেই আনকোরা হও, যে কেবলমাত্র শিখছ কিভাবে গিটার ধরতে হবে।
নতুন যে জিনিসটা শিখতে চাচ্ছ সেটা সম্পর্কে প্রাথমিক
ধারণা নেয়া প্রায় একই রকম, অন্য যেকোন কিছু শিখতে যেমন লেগেছে।
অনেকসময় গানের ছোট অংশগুলো তোমাকে দখলে আনতে হবে যেগুলো হবে
ছোট ছোট স্নায়ুবিক চাঙ্ক, এসব পরে একসঙ্গে জুড়ে দিলে বড় চাঙ্ক হবে।
উদাহরণ দেই, ধর কয়েকদিন ধরে, তুমি হয়ত একটা গানের একটা অন্তরা
সুন্দরভাবে গিটারে বাজাতে শিখলে, আর যখন এটা শেখা হয়ে গেল
তুমি আরো নতুন অন্তরা শুরু করতে পার, আগের অন্তরার সাথে মিলিয়ে বাজাতে পার
এভাবে ধীরে ধীরে সব অন্তরাগুলো শিখে একবারে পুরো
গানটা তুমি বাজাতে পারবে।
খেলা শেখার সময়, বাস্কেটবল, ফুটবল, বা গলফ, যাই হোক
দক্ষতাগুলো ছোট ছোট অংশে বুঝে নিয়ে ওগুলোতে কুশলী হয়ে উঠতে হয়।
এভাবে ছোট ছোট স্নায়বিক চাঙ্ক তৈরি করছ, তারপর
ধীরে ধীরে অনেক ছোট ছোট চাঙ্ক জুড়ে বড় স্নায়বিক চাঙ্ক বানাবে।
পরে তুমি ঐ বড় চাঙ্ক ভেঙ্গে আরও বড় আরো
বানিয়ে প্রয়োজনে মুহূর্তের মধ্যে ব্যবহার করবে
ধর যেভাবে একজন ফুটবল খেলোয়াড় ছুটে আসা একটা বল দেখে
সামান্য সরে, পা ঘুরিয়ে কিভাবে ওটাতে জোরসে লাথি মারে।
সব থেকে ভাল চাঙ্ক ওগুলো যেগুলো মাথায় এতটাই ঢুকে থাকে যে
তোমার দরকারই হবে না সচেতনভাবে ভাবার
যে কিভাবে স্নায়বিক প্যাটার্নগুলো জোড়া লেগে কাজ হবে।
এজন্য আসলে জটিল ধারণা, আমাদের চলাফেরা, কিছুতে
প্রতিক্রিয়াকে এসব একটা চাঙ্কে বেঁধে ফেলতে হয়।
ভাষা শিক্ষাতেও এর প্রমাণ দেখতে পাবে।
শুরুর দিকে অনেক সময় একটামাত্র শব্দ বলতে গেলেও ঠিক ঠাক
অর্থ, স্বর আর আঞ্চলিকতার টান এসব নিয়ে অনেক অনুশীলন করতে হয়।
বিনা প্রসতুতিতে অনেক কথা বলার জন্য দরকার পড়ে নতুন ভাষার নানান জটিল ছোট ছোট
চাঙ্ক আর অন্যান্য চাঙ্ক জোড়া লাগানোর সৃজনশীল ক্ষমতা ।
কি বলতে চাইছি বোঝার জন্য চেষ্টা কর
ভারতের আঞ্চলিক ভাষা কন্নড়েতে এই দাঁত ভাঙা শব্দগুলো বলতে।
হাই, আমি শিল্পা কঙ্কনি।
কন্নড় আমার মাতৃভাষা আর এটা
ভারতের সব থেকে পুরানো ভাষাগুলির মধ্যে একটা।
আজকে আমি তোমাদের একটা দাঁত ভাঙা কন্নড়ে কথামালা শোনাব।
তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
তেরিকেরে য়েরই মলে মুরু করি কুরিমারি মেয়ুথিদ্দায়ু-সোজা না, তাই না?
যদি তুমি কন্নড়ে
ভাষী না হও,
জান তো, ভাষা কিনতু
অল্প করে শেখা হয়।
অঙ্ক আর বিজ্ঞান শিখতেও একই নিয়ম।
অঙ্ক আর বিজ্ঞানে নতুন কিছু শেখার সময়
দেখবে নমুনা সমস্যা, সাথে সমাধান করে দেওয়া থাকে।
এর কারণ, একদম শুরুতে সমস্যা বুঝতে চেষ্টা করার সময়
মাথায় চিন্তার বেশ একটা চাপ অনুভূত হয়।
তখন উদাহরণ সহযোগে করতে শুরু করলে অনেক সহজ হয়।
এটা অনেকটা কোন গান নিজে বাজানোর আগে প্রথমে গানটা শুনে নেওয়ার মত।
অঙ্ক করতে যেসব ধাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে সেটাই সমাধানে দেখান হয়,
তোমার কাজ হোল শুধু বুঝে নেয়া, কেন ধাপগুলো এভাবে করেছে।
সমাধান তোমাকে অঙ্কের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো, আর বিশেষ নিয়মগুলো বিশদ ভাবে দেখায়।
অঙ্ক আর বিজ্ঞানে, সমাধান ব্যবহার করে চাঙ্ক তৈরি করার নিয়মে সমস্যা আছে, তাহোল
মনোযোগ ভুল দিকে যেতে পারে, ছাত্রদের জন্য ভাবা সহজ, আচ্ছা, এভাবে উত্তর
পাওয়া যাবে, তারা এক ধাপের সাথে পরের ধাপের সংযোগ বোঝার চেষ্টা না করতেও পারে।
তোমাদের
জানতে হবে কেন এই ধাপের পরে ঐ বিশেষ ধাপটা করতে হবে।
মনে রেখ, আমি কোন হাল্কা কথা বলছি না,
উদাহরণে করে দেয়া অঙ্ক দেখে দেখে শেখা, কুকি কাটার
ব্যবহার বিধির মত চিন্তাভাবনাহীন সহজ কাজ না।
এটা অনেকটা রাস্তার ম্যাপ ব্যবহার করে নতুন কোন একটা জায়গায় যাওয়ার মত।
ম্যাপ ব্যবহার করার সময় চারদিকে কি হচ্ছে তাতে নজর রাখতে হয়,
আর শিঘ্রীই আবিষ্কার করবে যে জায়গা মত নিজে পৌঁছে যাচ্ছ।
একসময় নতুন সব রাস্তাও তুমি হয়ত বের করে ফেলতে পারবে।
এরপরে, আমরা তোমাকে চাঙ্ক তৈরির সত্যিকারের ধাপগুলো দিয়ে নিয়ে যাব।
আমী বার্বরা ওক্লী।
শেখার পদ্ধতি সেকার জন্য ধন্যবাদ।
[যন্ত্র সংগীত]
ওগো ছোট্ট মেয়ে, কখনও সময় বড় কঠিন, কিনতু জেনো
ঝড় কেটেই যাবে, আর তুমি আবার খেলবে, সবুজ উঠোনে ।
ওগো ছোট্ট মেয়ে, কখনো তুমি দুঃখ পাবে, কিনতু শোন
বুঝবে কষ্টের, ছিল না তো দিন, এভাবে শৈশব হবে বিলীন।
[যন্ত্র সংগীত]
How to Form a Chunk - Part 2:
এই ভিডিওতে আমি তোমাদের হাত ধরে নিয়ে দেখাব
চাঙ্ক তৈরির পেছনের মূল ধাপগুলো কি কি।
প্রত্যেকটা বিষয় শেখার আলাদা নিয়ম আছে।
উদাহরণ হিসাবে বলছি, ইতিহাস বিষয়ের জন্য চাঙ্ক তৈরি,
রসায়ন বা ক্যারাতের জন্য চাঙ্ক তৈরি থেকে অনেকটাই আলাদা।
এখানে আমার ব্যাখ্যাগুলোতে, শারীরিক অঙ্গ চালানোর চাঙ্ক
তৈরির চেয়ে, আমি, মানসিক ধারণার চাঙ্ক বানানর ব্যাপারে, বেশী মনোযোগ দেব।
কিনতু তোমরা দেখবে যে দুটো পন্থাই খুব কাছাকাছি সম্পর্কিত।
সুতরাং, তুমি মানসিকভাবে কিছু শিখতে থাকলে অথবা
শারীরিকভাবে শিখলেও, কিছু সাহায্যকারী ধারণা এখানে পাবে।
চাঙ্ক তৈরির প্রথম পদক্ষেপ স্রেফ মনোযোগ দেয়া
যে তথ্যগুলোকে চাঙ্ক বানাতে চাইছ, সেটাতে তোমার অখন্ড মনোযোগ দাও।
যেখানে কাজ করছ সেখানে যদি টেলিভিশন চলতে থাকে, অথবা তুমি যদি
কয়েক মিনিট অন্তর তোমার ফোন বা কম্পিউটারের মেসেজ দেখ আর উত্তর দাও
তাহলে চাঙ্ক তৈরি করা তোমার জন্য বেশ কষ্টকর হবে
কেননা তোমার ব্রেন চাঙ্ক করার নতুন তথ্যগুলোতে ঠিক মত মনঃসংযোগ করছে না।
তুমি যখন নতুন কিছু শিখছ, তখন নতুন স্নায়ুবিক সংযোগ তৈরি করছ আর
সেগুলোকে জুড়ে দিচ্ছ ব্রেনের নানান জায়গায় ছড়িয়ে থাকা
এর আগে তৈরি অন্যান্য অনেক সংযোগের সাথে।
বোঝানোর জন্য বলছি, মনোযোগের অক্টোপাস পাগুলো ভালভাবে সব জায়গায়
যেতে পারে না যখন কার্যকর স্মৃতির সীমিত খোপ অন্যান্য চিন্তায় আটকে থাকে ।
চাঙ্ক বানানর দ্বিতীয় পদক্ষেপ হলো, যেটা চাঙ্ক করতে চেষ্টা করছ, সেই মূল ধারণাকে
বোঝা, সেটা আত্মস্থ করার ব্যাপার হতে পারে
যেমন মহাদেশগুলোর সরে যাওয়া , গল্পের ঘটনার সাথে
তার মূল উপাদানগুলোর যোগসূত্রটা ধরতে পারা, চাহিদা আর যোগানের অর্থনৈতিক
তত্বটা বুঝে ফেলা বা একটা বিশেষ ধরণের অঙ্কের
মূল সমস্যা উপলব্ধি করা, এসব।
ছাত্ররা খুব স্বাভাবিকভাবে পাঠের মূল বক্তব্য বা
ধারণাগুলো ধরে ফেলে আর সারকথার বুঝতেও তাদের দেরী হয় না।
অবশ্য বোঝার জন্য তাদেরকে ফোকাসড এবং ডিফিউজ মোডের
সাহায্য নিয়ে পালাক্রমে ভেবে ঘটনা বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
বুঝে ফেলাটা অনেকটা শক্ত আঠার মত যেটা
মূল স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখতে সাহায্য করে।
পরে এটা জোরালো স্মৃতিতে পরিণত হয়, তারপরে অন্যান্য স্মৃতির সাথে যুক্ত হয়।
তুমি যদি না বোঝ, তাহলে কি চাঙ্ক তৈরি করতে পারবে?
হতে পারে , কিনতু সেটা কোন কাজের না
তোমার কোন লেখাপড়ায়, কোথাও তুমি ব্যবহার করতে পারবে না।
একথা বলার পরে, এটা বুঝে নেওয়া দরকার যে
একটা অঙ্ক কিভাবে সমাধান করা হয়েছে সেটা বুঝলেই
যে চাঙ্ক তৈরি হবে, আর পরে তুমি সহজেই সেটা মনে
করতে পারবে সেটা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
হঠাৎ বুঝে ফেলার 'আহা"র সাথে, দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে গুলিয়ে ফেল না।
এ কারণে ক্লাসে শিক্ষক বোঝানো মাত্র তুমি
আইডিয়াটা ধরে ফেল, কিনতু এই বোঝানোর পরে, যদি নিজে আবার
পড়ে ঝালিয়ে না নাও, তাহলে ভুলে যাবে
আর পরীক্ষা প্রসতুতির আগে ঐ ধারণাটাই দুর্বোধ্য মনে হতে পারে।
অঙ্ক আর বিজ্ঞান বিষয়গুলোতে, বই বন্ধ করে
পরীক্ষা করে দেখতে হবে, যা তোমার মনে হয় বুঝেছ
নিজে নিজেই সেসবের সমস্যা সমাধান করতে পারো কিনা,
এই পরীক্ষা তোমার শেখার গতিবেগ বাড়িয়ে দেবে।
অনেক সময়েই তুমি উপলব্ধি করবে যে, সত্যি,
তখনই প্রথম বুঝেছ, যখন তুমি নিজে কাজটা করেছ।
বেশীভাগ বিষয়ের ক্ষেত্রেই এটা খাটে, কারো আঁকা ছবির দিকে
তাকিয়ে থাকা মানে এই না যে তুমিও অমন ছবি আঁকতে পারবে।
একটা গান শোনা মানে এই না যে গানটা
একইরকম সুরে গাইবার ক্ষমতা পেয়ে গেলে।
[সঙ্গীত]
তুমি দেখলে বলে বা তুমি কিছু বোঝ বলে
এই না যে তুমি এটা সত্যি সত্যিই করতে পারবে।
কেবলমাত্র নিজে করলে প্রকৃত দক্ষতার
ভিত্তি ঐ স্নায়ুবিক প্যাটার্নগুলো তৈরিতে হবে।
চাঙ্ক তৈরির তৃতীয় ধাপ হলো প্রসঙ্গ বুঝতে পারা, শুধু কেমন করে
তা-ই না, কখন চাঙ্ক ব্যবহার করবে, তাও বুঝবে।
প্রসঙ্গ মানে, প্রাথমিক সমস্যা অতিক্রম করে আরও দেখা
ব্যাপকভাবে, বারবার অনুশীলন করে, সম্পর্কযুক্ত বা অসম্পর্কিত
বিষয় সাপেক্ষে, যাতে তুমি দেখতে পাও, কখন চাঙ্ক
ব্যবহার করবে সেটা, কখন ব্যবহার করবে না তা-ও।
নতুন চাঙ্ক তোমার অন্য সবকিছুতে কিভাবে সাহায্য করবে তা বুঝতেও প্রসঙ্গ জানা চাই।
মনে কর, তোমার সমস্যা সমাধান টুলবক্সে
একটা যন্ত্র আছে বা তুমি একটা চমৎকার কৌশল জান,
কিনতু তুমি যদি না জান, কখন সেটা ব্যবহার করতে হবে, তাহলে তোমার কি লাভ হবে বল।
জেনে রাখ, অনুশীলন চাঙ্কের সাথে নিউরন সংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে, একই সাথে
সংযোগগুলো যেন মজবুত হয়, আর বিভিন্ন দিক থেকে
যেন চাঙ্কগুলোতে পৌছান যায় সেটাও নিশ্চিত করে।
ওপর থেকে নীচ, আর নীচ থেকে ওপর
চিহ্নিত এই ছবি থেকে বুঝতে পারবে মানুষ দু'ভাবে শেখে।
নীচ থেকে ওপর চাঙ্ক তৈরির পদ্ধতিতে,
অনুশীলন ও পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে চাঙ্ক তৈরি হয়
এরপর ওগুলো শক্তিশালী হয়, ফলে যখনই দরকার পড়বে তখনই ব্যবহার করতে পারবে।
ওপর থেকে নীচ চাঙ্ক তৈরির পথকে বলা যায় বড় দৃষ্টিকোন পদ্ধতি, যা
তোমাকে বুঝতে সাহায্য করবে, কি শিখছ আর সেটা কোথায় কাজে লাগবে।
কোন বিষয়ের দক্ষতা পেতে হলে দুটো পদ্ধতিই জরুরী।
ওপর-নীচ আর নীচ-ওপরের শেখা, প্রসঙ্গে এসে সম্পূর্ণ হয়।
আরো বুঝিয়ে বলছি, কোন বিশেষ সমস্যা সমাধান
কৌশল শেখা হলো চাঙ্ক করা বা চাঙ্কিং।
প্রসঙ্গ মানে, এটা শেখা যে, কখন, অন্য কিছু না করে, ওই কৌশলটাই ব্যবহার করতে হবে ।
কোন বই পড়া শুরু করার আগেই যদি দু মিনিট সময় নিয়ে
চটপট ভিতরের ছবিগুলো আর অধ্যায়ের শিরোনামগুলোয়
চোখ বুলানো যায়, তাহলে বইয়ে কি বলা হতে পারে
সে সম্পর্কে একটা আন্দাজ করা সহজ হয়।
ভালভাবে বানান লেকচার শুনলেও মূল ব্যাপারটা বোঝা যায়।
কোন বিষয়কে বড় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শিখলে বুঝবে
নতুন চাঙ্কগুলোকে কোথায় রাখতে হবে, এক চাঙ্কের সাথে
কখন অন্য চাঙ্ক মিলে কাজ করবে, যেমন দেখছ
গাড়ীর মধ্যে বসা মানুষের এই ছবিটাতে।
প্রথমে জেনে নাও, শিখে নাও মূল ধারণাগুলো
ছাত্রদেরকে মূল কথাটা বোঝানোই একজন ভাল শিক্ষকের কাজ
বইয়ের ভূমিকা, ফ্লো চার্ট, সারণী বা ধারণা চিত্র মূল কথাগুলোই বলে।
এটা বোঝার পরে অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয় শেখ।
যদি ধাঁধার কয়েকটা টুকরো একবারে নাও পাওয়া যায়
তোমার পড়া শেষ হয়ে গেলে, পুরো বিষয়টা পরিষ্কার দেখতে পাবে।
অতএব এইভাবে এগোও।
সারকথা হল, ভাল চাঙ্ক তৈরি হয় যখন
মন কেন্দ্রীভূত করে খেয়াল করা হয় আর মূল ধারাণাকে বোঝা হয়।
অনুশীলন দরকার দক্ষতার জন্য এবং বড় দৃষ্টিকোণ থেকে পুরো ব্যাপারটাকে বোঝার জন্য।
তাহলে এই হলো চাঙ্ক বানানর জন্য একেবারে প্রয়োজনীয় ধাপগুলো
আর কিভাবে চাঙ্ককে শিক্ষার বৃহত্তর প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গে মেলাবে তা-ও জানলে।
তবে আরো জানতে হবে।
আমী বার্বরা ওক্লী।
শেখার পদ্ধতি সেকার জন্য ধন্যবাদ।
[শুন্য শব্দ]
Illusions of Competence:
[শব্দ]
এই ভিডিওতে আমরা আলোচনা করব কিছু জরুরী
বিষয় নিয়ে, তাহলো কিভাবে শেখার গতি ধরে রাখতে হবে।
আমরা জানব, পড়া মনে করার গুরুত্ব এবং শেখা ছলনা ব্যাপারটা চিনব।
ছোট ছোট পরীক্ষা এবং ভুল করার অবদান বুঝে নেব।
কোন বই বা নোটে লেখা বিষয়গুলো শিখতে হলে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো
একটু একটু করে, বারবার ওগুলো পড়া।
কিন্তু মনোবিজ্ঞানী জেফ্রি কারপিকে গবেষণায় দেখিয়েছেন যে এই পদ্ধতিটা
আসলে অপেক্ষাকৃত কম কার্যকরী, এর চেয়ে আরেকটা বেশ সহজ কৌশল আছে, যেটা কাজের।
পড়া মনে করা।
পড়া হয়ে গেলে বই থেকে চোখ সরিয়ে নাও এবং দেখ এই মাত্র যা পড়লে
সেই বিষয়ের কি মনে আছে, তা থেকে কতটুকু মনে রাখতে পারছ।
বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত কারপিকের গবেষণা
এই মতে জোর সমর্থন দেয় যে, বারবার না পড়ে মনে করা উচিত।
গবেষণাটা এমন ছিল, শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান বিষয়ে কিছু একবার
পড়ে, দেখবে মনে থেকে কতখানি পড়া বলতে পারে, সেটা বলবে।
তারপর তারা আবার পড়বে এবং আবার একই ভাবে স্মরন করবে।
অর্থাৎ, তারা আসলে মূল বিষয়টা বারবার স্মরণ করার চেষ্টা করছে।
ফলাফলে কি পাওয়া যায়, ছাত্ররা একটা নির্দিষ্ট সময়ে,
পড়া বারবার পড়ে এবং মনে করার চেষ্টা করে, বিজ্ঞানের ঐ বিষয়
আরও অনেক বেশি গভীর ভাবে শিখতে পেরেছিল
আর অন্য কোন নিয়মে পড়ে এত তারা ভালভাবে শেখেনি।
অন্য নিয়মের মধ্যে একটা ছিল বারবার শুধু পড়ে যাওয়া, অথবা
মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের ছবি এঁকে ফেলা, বলা হয় যে
concept map শেখা বিষয়টাকে আরো পরিষ্কার করে।
পড়া বিষয় আরো ভাল ভাবে জানা হয়,আত্মস্থ হয় যখন ছাত্ররা
আনুষ্ঠানিক ভাবে পরীক্ষা দেয় বা এমনি নিজেই পরীক্ষা দেয়
পরীক্ষা দিলেও পড়া মনে করা হয়।
যখন আমরা পড়া মনে করি তখন আমরা শুধু নির্বোধ রোবটের মত এই কাজটা করি না।
পড়া মনে করা, শেখা বা জ্ঞান গভীর করার একটা সুন্দর উপায়,
এবং আমাদেরকে চাঙ্ক তৈরিতে সাহায্য করে।
ব্যাপারটা এমন যে, স্মরন করার প্রক্রিয়া স্নায়বিক সংযোগ
গড়ে তুলতে সাহায্য করে, ওখান থেকে চিন্তা আরো গভীরে যায়।
গবেষকদের কাছে আশ্চর্য লেগেছিল যে এমনকি ছাত্ররা নিজেরাই কাছে ব্যাপারটা ধরে ফেলেছিল যে
কেবল পড়া এবং তারপর আবার পড়া, কিছু শেখার বা জানার জন্য সবচেয়ে ভাল নিয়ম না।
বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে, কনসেপ্ট ম্যাপিং, মানে, ছবি এঁকে
বিভিন্ন বিষয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে সবচেয়ে ভাল ভাবে শেখা যাবে।
কোন বিষয়ের মূল জ্ঞানের চাঙ্কগুলো ব্রেনে ভাল ভাবে গাঁথার আগেই
বিভিন্ন চাঙ্কের মধ্যে সংযোগ করার চেষ্টা করলেও তেমন কাজ হবে না।
আমরা এভাবে তুলনা দিতে পারি যে, দাবার গুটি কিভাবে চালতে হয়,
সেটা শেখার আগে, জটিল চালের নিয়মকানুন শিখতে চেষ্টা করার মত ব্যাপার।
বারবার অলসভাবে শুধু পড়ার চেয়ে, বিষয়ের মূলবক্তব্য মনে করার চেষ্টা
করা, আবার পড়া, মনে করা, এটা শেখার প্রক্রিয়াকে নিবিষ্ট এবং কার্যকরী করে তোলে।
বারবার পড়েও কার্যকরী ভাবে শেখার একটা উপায় আছে, যদি পড়ার মধ্যে বিরতি দেয়া হয়।
মানে, পড়া, থামা, আবার পড়া, এভাবে চালিয়ে যাওয়া এতে বেশ ভাল কাজ হয়।
শেখা, মনে করা, এই প্রক্রিয়াকে, আমরা এখানে দেয়া ছবির সাথে তুলনা করতে পারি।
আগেই আমরা বলেছি যে, কার্যকরী স্মৃতিতে চারটা বা এরকম সংখ্যার খোপ আছে।
যখন তুমি প্রথমবারের মত কোন ধারণা অথবা সমস্যা সমাধানের কোন কৌশল শিখছ
তখন কার্যকর স্মরণশক্তির পুরো অংশ বোঝার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত হয়ে যায়।
দেখ এখানে যেমন জটিল প্যাঁচ লেগেছে
কার্যকরী স্মৃতির চার খোপের মধ্যে নানান রকম সংযোগ চলছে।
যখনি ধারণাটা চাঙ্ক হতে শুরু করবে, বুঝতে পারবে
কারণ তখন ব্যাপারগুলো খুব সহজ এবং পরিষ্কারভাবে ধরা দেবে।
একবার যখন ধারণা চাঙ্ক হয়ে যায়, কার্যকরী স্মৃতির এক খোপে তা জায়গা করে নেয়
এটা একটা তথ্যভান্ডরে পরিণত হয়, যা বোঝা একেবারে সাবলিল
আর নতুন সংযোগ তৈরিতে এই চাঙ্ক এখন ব্যবহার হবে।
তথ্য চাঙ্ক হওয়ায় কার্যকর স্মৃতিতে জায়গা খালি হল।
সেই ঝুলন্ত সুতার খন্ডটি কোনভাবে
কার্যকরী স্মৃতিতে আরো বেশি তথ্য জায়গা পাচ্ছে, কঠিন বিষয় বুঝতে এটা লাগে।
যেন, কার্যকর স্মৃতির একটা খোপ হাইপারলিংক হয়ে
একটা বড় ওয়েবপেজ এর সাথে সংযুক্ত হয়ে গেল, যেটায় তথ্য ভরা।
এখন তুমি বুঝতে পারছো যে সমস্যা সমাধান করা বা
কোন জটিল ধারণাতে দক্ষতা অর্জন করা, এসব কেন তোমারই করা উচিৎ।
যে বিষয় তুমি পড়ছ, তার সমাধান ম্যানুয়াল বা বই যে লিখেছে, সে অংক পারলে তোমার লাভ নেই।
যদি অন্যের করা সমাধান দেখে, মনে মনে ভাব আর নিজেকে আস্বস্ত কর,
হ্যাঁ আমি বুঝেছি, কেন এভাবে অংক করেছে।
এটা ভাবলেই ঐ সমাধান কখনো তোমার হবে না।
তোমার নিজের মস্তিস্কের নিউরাল সার্কিটে
ধারণা বুঝে নেয়া, চাঙ্ক ব্যবহার করা, এসব কিছুই তুমি করনি।
সমাধানের দিকে তাকিয়ে চিন্তা করবে যে এটা তুমিও নিজে করতে পার
এটাকেই আমরা বলছি মিথ্যা শেখা বা শেখা ছলনার সবচেয়ে বড় উদাহরণের একটা।
তুমি যা শিখেছ তা ব্যবহার করে পরীক্ষায় ভাল করতে চাইলে অথবা নিজেই নতুন
কিছু সৃষ্টি করতে চাইলে, শেখা জিনিষগুলো ব্রেনেই উপস্থিত রাখতে হবে, এটাই জানা বা শেখা অবস্থা।
এর কাছাকাছি একটা বিষয় জেনে তুমি অবাক হবে যে
হাইলাইট করা এবং বই দাগানো এসব কৌশল ভেবেচিন্তে ব্যবহার করা ভাল।
শেখার জন্য এটা তেমন কাজের না, বরং শেখা হয়েছে এমন ভুল ইঙ্গিত দেয়।
এভাবে এটা হয়, হাতে দাগানোর কাজ দিয়ে মস্তিস্ক তোমাকে
বোকা বানাবে যে দাগানো হয়েছে মানে পড়াও তোমার মস্তিষ্কে ঢুঁকে গেছে।
পড়া দাগাতে চাইলে আগে তার মূল ধারণা খুঁজে বের কর, বোঝার চেষ্টা কর, তারপর দাগাও।
দাগ দিতে হলে অথবা হাইলাইট করতে হলে, যত কম পারা যায় দাগাও।
এক প্যারাতে একটা বাক্য অথবা তার কম।
এর বিপরীতে যদি, বই বা খাতার কিনারে সংক্ষপে
মূল ধারণা বা আসল কথাটা লেখা যায়, তাহলে খুব ভাল হয়।
জেফ কারপিকে, একই গবেষক, যিনি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন
করেছেন, ইনি কাছাকাছি বিষয়ে আরেকটা সফল গবেষণা করেছেন।
মিথ্যা শেখা বা শেখা ছলনার কারণে ক্ষতি।
ছাত্ররা যে কারণে তাদের নোট বা বই বারবার পড়তে চায়
কারণটা হল, যখন গুগল বা বই তাদের সামনে খোলা থাকে
মিথ্যা শেখা বা শেখা ছলনার বিভ্রম তাদেরকে ঘিরে রাখে
তারা সহজে ভেবে নেয় পড়া মস্তিষ্কে ঢুকে গেছে।
আসলে তো কিছু শেখা হয় নি,কারণ বই পড়ে মুখস্ত করা, তারপর মনে করার চেয়ে
বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকা সহজ, তাই এটাতেই ছাত্ররা নিজেদের
ভুলিয়ে রাখে, এটাতে কোন পড়া শেখা হয় না।
তোমাদের এটাই মনে করাতে চাই যে নিছক শিখতে চাওয়া এবং তার পিছনে
সময় ব্যয় করলেই এটা নিশ্চিত হওয়া যাবে না যে তুমি আসলেই তা শিখে ফেলতে পারবে।
তুমি যে সত্যি শিখছো এবং কোন শেখা ছলনা করে নিজেকে বোকা বানাচ্ছো না
তা বোঝার সবচেয়ে কার্যকরী এবং ভাল উপায় হচ্ছে
নিজেকে পরীক্ষা করা সে তুমি যাই শেখ না কেন।
পড়া মনে করার অনুশীলনের মতই পরীক্ষা হলো পড়া মনে করা।
তুমি আসলেই ব্যাপারটা ধরতে পেরেছো কি না তা বুঝতে সাহায্য করে
যদি তুমি তোমার কাজে ভুল কর, ব্যাপারটা আসলে খুবই ভাল ঘটনা।
অবশ্যই তুমি চাইবে এক ভুল আবার না করতে, তবে, মনে রেখ, নিজে নিজে নেয়া পরীক্ষাতে
ভুল করা কাজে দেয়, এভাবে অনুশীলন হওয়াতে, আসল পরীক্ষাতে ভাল করার সম্ভবনা বাড়ে।
ভুল করে শিখলে, ব্রেনের নিউরাল সংযোগ মেরামত হয়, প্রথমে কিছু সম্পর্কে ভুল ধারণা
হয়, ধীরে ধীরে ভুল থেকে চিন্তা শুধরে নেয়া হয়, এভাবে ভালভাবে শেখা যায়, পরীক্ষাও ভাল হয়।
তোমরা বুঝতে পেরেছ স্মরণ করা শেখার ভাল নিয়ম।
রুটিন পড়ার স্থানের বাইরে অন্য জায়গায় পড়া মনে করা আরেকটা ভাল নিয়ম,
অন্য কোথাও বসে পড়া মনে করার চেষ্টাতে শেখা বিষয়গুলো জোড়ালো এবং শক্তপোক্ত হয়।
ছাত্ররা বুঝতে পারে না, কিন্তু, নতুন পড়া শেখা বা
মুখস্ত করার সময়, তারা পড়ার ঘর বা ঐ পরিবেশ থেকে
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ইঙ্গিত বা সঙ্কেত
ঠিক করে নেয়, ফলে ওসবের দিকে তাকালে সাথে সাথে পড়া মনে পড়ে।
তাই দেখেছি অনেক সময় ছাত্ররা জানা জিনিষ পরীক্ষা হলে গিয়ে করতে পারে না
কারণ যেখানে বসে তারা শিখেছে তা থেকে পরীক্ষার হল অন্যরকম, কোন ইঙ্গিত নেই।
কাজেই তোমরা যদি পড়ার ঘর ছাড়া, অন্য কোন জায়গায় পড়া মনে কর, শারিরিকভাবে জায়গা
বদলের জন্য, পরিচিত সঙ্কেত বা ইঙ্গিত আর কাজ করবে না, এদের প্রভাবমুক্ত হয়ে যাবে।
এভাবে, পরীক্ষার স্থান অপরিচিত হওয়ার কারনে পরীক্ষা
খারাপ হওয়ার সমস্যা থেকে ছাত্রদের পক্ষে সহজে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব হতে পারে।
আমি বারবারা ওকলি, শেখার বিষয়ে শেখার জন্য ধন্যবাদ।
[শুন্য শব্দ]
কাজেই বুঝতে পারছ কেন বলেছি, ভুল করা বরং ভাল, ভুল থেকে শেখা যায়।
[হাসি]
ঠিক আছে।
এভাবে নতুন শেখা জ্ঞান জোড়ালো হয়।
No comments:
Post a Comment