বাংলাদেশ অনেক শান্তিপূর্ণ ভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারে আন্তর্জাতিক আদালতে মাধ্যমে।
আন্তর্জাতিক আদালত দুইটি ভাগে বিভক্ত:
১) আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত: আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এবং আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত ১৯৪৫ প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০০২ সালের আগে, সকল প্রকার অপরাধের বিচার এবং দুইটি দেশের মধ্যে বিবাদ মিমাংসা শুধু আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত পরিচালিত হয়েছিল।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত শুধু অপরাধ জনিত অপরাধের বিচার হয়ে থাকে। যেমন: গণহত্যা, যোদ্ধ অপরাধ ইত্যাদি।
এবং
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত:
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত শুধু দুইটি দেশের মধ্যে বিবাদ মিমাংসা করে থাকে। যেমন: রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে নাগরিক পাবে কিনা। আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত দুই পক্ষের কথা লিখিতভাবে ও মৌখিক ভাবে শুনে যা ন্যায় সঙ্গত হবে তার পক্ষে রায় দিয়ে থাকে।
জাতিসংঘের সকল দেশের বিচার আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত করতে পারবে। আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে বিচার করা ক্ষমতা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে থেকে অনেক বেশি।
কারণ আন্তর্জাতিক অপরাধ রায় অনেক দেশের জন্য মাথা ব্যথা হতে পারে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে রায় সকল দেশের জন্য স্বস্তিদায়ক কারণ আন্তর্জাতিক আদালতে রায় সবদা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে থাকে।
বাংলাদেশ মায়ানমারে বিপক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করতে পারে:
মায়ানমার জাতিসংঘের সদস্য হয় ১৯ এপ্রিল ১৯৪৮ এবং বাংলাদেশও জাতিসংঘের সদস্য হয় ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ মায়ানমারে বিপক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করতে পারে। নিচে এর রেফারেন্স দেওয়া হলো:
CHARTER OF THE UNITED NATIONS:
Article :94
1. Each Member of the United Nations undertakes to comply with the decision of the International Court of Justice in any case to which it is a party.
2. If any party to a case fails to perform the obligations incumbent upon it under a judgment rendered by the Court, the other party may have recourse to the Security Council, which may, if it deems necessary, make recommendations or decide upon measures to be taken to give effect to the judgment.
অনুচ্ছেদ ৯৪:
"1. জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারের যে কোনও ক্ষেত্রে এটির সিদ্ধান্ত মেনে চলতে থাকে।
2. যদি আদালত কোনও মামলায় কোর্টের রায় অনুযায়ী এটির উপর দায়বদ্ধতা সম্পাদন করতে ব্যর্থ হয়, তবে অন্য পক্ষের নিরাপত্তা কাউন্সিলের আশ্রয় নিতে পারে, যদি এটি প্রয়োজনীয় মনে হয় তবে সুপারিশগুলি বা সিদ্ধান্তের উপর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। রায় কার্যকর করার জন্য নেওয়া হবে।"
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে ১৫ জন ন্যায় বিচারক থাকে যার মধ্যে তিন জন এশিয়া, তিন জন আফ্রিকার, পাঁচ জন পশ্চিম ইউরোপের, দুই জন পূর্ব ইউরোপের, দুই জন ল্যাটিন আমেরিকার।
বাংলাদেশ উচিত সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে যাওয়া। এবং মামলার বিচার্য বিষয় হওয়া উচিত, “রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে নাগরিক দেওয়া”
এই মামলায় করা জন্য বিশ্বে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের থেকে আর্থিক সাহায্য নেওয়া উচিত। কারণ এই সব ব্যাপারে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিভিন্ন স্থান থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে থাকে প্রয়োজনে আরব দেশ থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়া উচিত এই মামলায় পরিচালনা করার জন্য।
আমি জানি আল্লাহ রহমতে বাংলাদেশ এই মামলায় পরিচালনা করার জন্য কোন রূপ আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন নেই। কিছু যদি বাংলাদেশের বিভিন্ন উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে এই মামলা পরিচালনা করে তাহলে বাংলাদেশ পক্ষে অনেক সংস্থা কাজ করবে। কারণ তারা অনুভব করবে বাংলাদেশ সাথে এই মামলায় তাদের ও অংশগ্রহণ আছে।
বাংলাদেশ সবপ্রথম আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার উচিত নয় কারণ রোহিঙ্গাদের উপর যে গণহত্যা হয়েছে সেই বিষয়ে বিচার পূর্বে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ব্যাপারটি আগে মিমাংসা করা উচিত।
যদি রোহিঙ্গারা মায়ানমারে নাগরিক হতে পারে, তাহলে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যার বিচার হওয়া সম্ভবনা আরো বহু গুণে বৃদ্ধি পাবে। তখন রোহিঙ্গারা সরাসরি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত মামলার করবে। এর ফলে বাংলাদেশের সাথে মায়ানমারে সম্পর্কে অবনতি হওয়ায় সম্ভব না অনেক কমে যাবে। যাকে বলে মাছের তেল মাছ ভাজা।
বাংলাদেশ পররাষ্ট্রনীতি হলো ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। বাংলাদেশ এই নীতিতে বিশ্বাস করে।
লেখক: যুবাইর মাহমুদ।
No comments:
Post a Comment