সূচি পত্র

Wednesday, August 28, 2019

চাণক্য শ্লোক !


  • চাণক্য শ্লোক !
‘চাণক্য’ প্রাচীন ভারতের রাজনীতির ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নাম। পাঞ্জাব প্রদেশের অন্তর্গত তক্ষশীলায় চণক-ঋষির ঔরসে মহামতি চাণক্য তিন হাজার বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন। চণক-ঋষির পুত্র বলেই তাঁর নাম হয় ‘চাণক্য’, তাঁর জন্মগ্রাম ‘চানকা’ থেকে ‘চাণক্য’ নাম হয়েছে বলেও অনুমান করা হয়। এছাড়া ‘বিষ্ণুগুপ্ত’ নামেও তিনি পরিচিত। চাণক্যের বিখ্যাত ছদ্মনাম ‘কৌটিল্য’। সেকালে মগধে ‘নন্দবংশ’ নামে রাজবংশের শেষ রাজা ছিলেন ধনানন্দ। ধনানন্দের সৎভাই ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত। পিতার মৃত্যুর পর তিনি দাসীমাতা মুরা ও সৎভাই চন্দ্রগুপ্তকে রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেন। চন্দ্রগুপ্ত তার ভাই ধনানন্দকে পরাজিত করে মগধের সিংহাসন দখলের চেষ্টা করেন। কিন্তু সে চেষ্টায় তিনি ব্যর্থ হন এবং জীবন বাঁচাতে জঙ্গলে গিয়ে নির্বাসিত জীবন-যাপন করতে থাকেন। এদিকে ধনানন্দের পিতৃশ্রাদ্ধে পৌরহিত্য করার জন্য একজন ব্রাহ্মণের প্রয়োজন হয়। ব্রাহ্মণ সংগ্রহের দায়িত্ব পড়ে মন্ত্রী শকটার উপর। তিনি চাণক্যকে মহারাজ ধনানন্দের পিতৃশ্রাদ্ধে পৌরহিত্য করার অনুরোধ জানান। সে অনুরোধ অনুযায়ী চাণক্য যথাসময়ে রাজপ্রাসাদে উপস্থিত হয়ে পুরোহিতের আসন গ্রহণ করেন। চাণক্যের চেহারা খুব ভাল ছিল না। পুরোহিতের আসনে কদাকার ব্রাহ্মণ চাণক্যকে দেখে মহারাজ ধনানন্দ ভীষণ ক্রুদ্ধ হন এবং তাকে তিরস্কার করে সেখান থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। পণ্ডিত চাণক্য মহারাজাকে হিতবাক্যে বুঝাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু রাজা ধনানন্দ কোন প্রবোধ না মেনে চাণক্যকে অপমান করে প্রাসদ থেকে বের করে দেন। চন্দ্রগুপ্ত যখন জঙ্গলে পলাতক ও নির্বাসিত জীবন যাপন করছিলেন, তখন ঘটনাচক্রে চাণক্যের সাথে তার সাক্ষাত হয়। চন্দ্রগুপ্ত তার সমস্ত কথা চাণক্যের কাছে খুলে বলেন এবং ধনানন্দকে পরাজিত করে মগধের সিংহাসন দখলে চাণক্যের পরামর্শ ও সাহায্য কামনা করেন। চাণক্য ছিলেন প্রখর প্রতিভাধর পণ্ডিত। চন্দ্রগুপ্ত চাণক্যকে তার উপদেষ্টা ও মন্ত্রণাদাতা নিয়োগ দেন। চাণক্যের সক্রিয় সহযোগিতায় চন্দ্রগুপ্ত ক্রমে একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন এবং গুরু চাণক্যের সুনিপুণ পরিকল্পনা অনুসারে ধনানন্দকে পরাজিত করে মগধের সিংহাসন দখল করেন। এবং পণ্ডিত চাণক্যকে করেন তার রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাণক্য অবলীলায় বিলাসবহুল জীবন কাটাতে পারতেন জাঁকজমকপূর্ণ প্রাসাদে। কিন্তু তিনি তা না করে একটি শ্মশানে কুড়েঘরে সন্ন্যাসীর মত জীবন-যাপন করতেন। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের চেহারা যেমন সুন্দর ছিল না, চাণক্যের চেহারাও তেমনি সুন্দর বা আকর্ষণীয় ছিল না। তাছাড়া স্বাস্থ্যেও তিনি ছিলেন দুর্বল। তিনি বিশ্বাস করতেন ‘দেহের সৌন্দর্যের চাইতে চিন্তার সৌন্দর্য অধিকতর মোহময় ও এর প্রভাব যাদুতুল্য।’ ক্ষমতার দৃশ্যপট থেকে দূরে থেকেও তিনি সর্ববিধ পরামর্শ দিয়ে রাজা চন্দ্রগুপ্তকে পরিচালনা করতেন। রাজা চন্দ্রগুপ্তের জীবনে চাণক্য ছিলেন সত্যিকার বন্ধু, দার্শনিক, গুরু এবং স্বর্গীয় দূততুল্য অভিভাবক। শ্মশানে থেকে (রাজ্য পরিচালনার পরামর্শদানের পাশাপাশি) অসংখ্য ভক্তদেরকে নৈতিক ও আর্থ-সামাজিক বিষয়েও তিনি জ্ঞানদান করতেন। চাণক্যের অর্থবিষয়ক জ্ঞানের সংকলন হচ্ছে অর্থশাস্ত্র, যা ‌’চাণক্যের অর্থশাস্ত্র’ নামে পরিচিত একটি কালোত্তীর্ণ গ্রন্থ। তিনিই অর্থশাস্ত্রের প্রথম প্রবক্তা বলে অভিহিত। চাণক্যের অর্থশাস্ত্র উপবেদের অন্তর্ভুক্ত। এ শাস্ত্রে আছে শাসকের উদ্দেশ্যে পরামর্শ, প্রজাদের নিরাপত্তা, কল্যাণ ও জীবনমান উন্নতকরার কৌশল। চাণক্য তার অর্থশাস্ত্রে রাজাকে এভাবে পরামর্শ দিয়েছেন-
‘যে রাজা শত্রুর গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা করতে পারে না এবং শুধু অভিযোগ করে যে তার পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাকে সিংহাসনচ্যুত করা উচিত।’
‘সকল উদ্যোগ নির্ভর করে অর্থের উপর। সে জন্য সবচেয়ে অধিক মনোযোগ দেওয়া উচিত খাজাঞ্চিখানার দিকে।
তহবিল তসরুপ বা অর্থ আত্মসাতের চল্লিশটি পদ্ধতি আছে।
জিহ্বার ডগায় বিষ রেখে যেমন মধুর আস্বাদন করা সম্ভব নয়, তেমনি কোন রাজকর্মচারীর পক্ষে রাজার রাজস্বের সামান্য পরিমাণ না-খেয়ে ফেলার ঘটনা অসম্ভব ব্যাপার।
পানির নিচের মাছের গতিবিধি বোঝা যেমন অসম্ভব, রাজকর্মচারীর তহবিল তসরুপ বোঝাও তেমনি অসম্ভব।
আকাশের অতি উঁচুতেও পাখির উড্ডয়ন দেখা সম্ভব, কিন্তু রাজকর্মচারীর গোপন কার্যকলাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া অসম্ভব।’

♥ অ ♥

  • অতি পরিচয়ে দোষ আর ঢাকা থাকে না।
  • অধমেরা ধন চায়, মধ্যমেরা ধন ও মান চায়। উত্তমেরা শুধু মান চায়। মানই মহতের ধন।
  • অনেকে চারটি বেদ এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করলেও আত্মাকে জানে না, হাতা যেমন রন্ধন-রস জানে না।
  • অন্তঃসার শূন্যদের উপদেশ দিয়ে কিছু ফল হয় না, মলয়-পর্বতের সংসর্গে বাঁশ চন্দনে পরিণত হয় না।
  • অবহেলায় কর্মনাশ হয়, যথেচ্ছ ভোজনে কুলনাশ হয়, যাচ্ঞায় সম্মান-নাশ হয়, দারিদ্র্যে বুদ্ধিনাশ হয়।
  • অভ্যাসহীন বিদ্যা, অজীর্ণে ভোজন, দরিদ্রের সভায় বা মজলিশে কালক্ষেপ এবং বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা বিষতুল্য।
  • অহংকারের মত শত্রু নেই।

♥ আ ♥

  • আকাশে উড়ন্ত পাখির গতিও জানা যায়, কিন্তু প্রচ্ছন্নপ্রকৃতি-কর্মীর গতিবিধি জানা সম্ভব নয়।
  • আদর দেওয়ার অনেক দোষ, শাসন করার অনেক গুণ, তাই পুত্র ও শিষ্যকে শাসন করাই দরকার, আদর দেওয়া নয়।
  • আপদের নিশ্চিত পথ হল ইন্দ্রিয়গুলির অসংযম, তাদের জয় করা হল সম্পদের পথ, যার যেটি ঈপ্সিত সে সেই পথেই যায়।
  • আড়ালে কাজের বিঘ্ন ঘটায়, কিন্তু সামনে ভাল কথা বলে, যার উপরে মধু কিন্তু অন্তরে বিষ, তাকে পরিত্যাগ করা উচিত।

♥ ই ♥

  • ইন্দ্রিয়ের যে অধীন তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয়।

♥ উ ♥

  • উপায়জ্ঞ মানুষের কাছে দুঃসাধ্য কাজও সহজসাধ্য।
  • উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু।
♥ ঋ ♥
  • ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, কারণ তারা আবার বেড়ে যেতে পারে।

♥ এ ♥

  • একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে।
  • একটি কুবৃক্ষের কোটরের আগুন থেকে যেমন সমস্ত বন ভস্মীভূত হয়, তেমনি একটি কুপুত্রের দ্বারাও বংশ দগ্ধ হয়।
  • একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়, তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কুল ধন্য হয়।
  • একশত মূর্খ পুত্রের চেয়ে একটি গুণী পুত্র বরং ভাল। একটি চন্দ্রই অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না।

♥ ক ♥

  • কর্কশ কথা অগ্নিদাহের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
♥ খ ♥
  • খেয়ে যার হজম হয়, ব্যাধি তার দূরে রয়।
♥ গ ♥
  • গুণবানকে আশ্রয় দিলে নির্গুণও গুণী হয়।
  • গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না। নীচকুলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়, তবে দেবতারাও তাঁকে সম্মান করেন।
  • গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন, তবে পৃথিবীতে এমন কোনও জিনিস নেই, যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ করতে পারে।
  • গৃহে যার মা নেই, স্ত্রী যার দুর্মুখ তার বনে যাওয়াই ভাল, কারণ তার কাছে বন আর গৃহে কোনও তফাৎ নেই।
♥ চ ♥
  • চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না, যন্ত্রে ইক্ষু নিপিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না, যে সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও সে চরিত্রগুণ ত্যাগ করে না।
♥ ছ ♥
♥ জ ♥
♥ ত ♥
  • তিনটি বিষয়ে সন্তোষ বিধেয়: নিজের পত্নীতে, ভোজনে এবং ধনে। কিন্তু অধ্যয়ন, জপ, আর দান এই তিন বিষয়ে যেন কোনও সন্তোষ না থাকে।

♥ থ ♥

♥ দ ♥

  • দারিদ্র্য, রোগ, দুঃখ, বন্ধন এবং বিপদ- সব কিছুই মানুষের নিজেরই অপরাধরূপ বৃক্ষের ফল।
  • দুর্জনের সংসর্গ ত্যাগ করে সজ্জনের সঙ্গ করবে। অহোরাত্র পুণ্য করবে, সর্বদা নশ্বরতার কথা মনে রাখবে।
  • দুর্বলের বল রাজা, শিশুর বল কান্না, মূর্খের বল নীরবতা, চোরের মিথ্যাই বল।
  • দুষ্টা স্ত্রী, প্রবঞ্চক বন্ধু, দুর্মুখ ভৃত্য এবং সসর্প-গৃহে বাস মৃত্যুর দ্বার, এ-বিষয়ে সংশয় নেই।

♥ ধ ♥

  • ধর্মের চেয়ে ব্যবহারই বড়।

♥ ন ♥

  • নানাভাবে শিক্ষা পেলেও দুর্জন সাধু হয় না, নিমগাছ যেমন আমূল জলসিক্ত করে কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও কখনও মধুর হয় না।

♥ প ♥

  • পরস্ত্রীকে যে মায়ের মত দেখে, অন্যের জিনিসকে যে মূল্যহীন মনে করে এবং সকল জীবকে যে নিজের মত মনে করে, সে-ই যথার্থ জ্ঞানী।
  • পাপীরা বিক্ষোভের ভয় করে না।
  • পাঁচ বছর বয়স অবধি পুত্রদের লালন করবে, দশ বছর অবধি তাদের চালনা করবে, ষোল বছরে পড়লে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করবে।
  • পুত্র যদি হয় গুণবান, পিতামাতার কাছে তা স্বর্গ সমান।
  • পুত্রকে যারা পড়ান না, সেই পিতামাতা তার শত্রু। হাঁসদের মধ্যে বক যেমন শোভা পায় না, সভার মধ্যে সেই মূর্খও তেমনি শোভা পায় না।

♥ ব ♥

  • বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
  • বিদ্বান সকল গুণের আধার, অজ্ঞ সকল দোষের আকর। তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
  • বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না। রাজা কেবল নিজদেশেই সমাদৃত, বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
  • বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ, তা দিয়ে সে গুহ্য-অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না।
  • বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
  • বিদ্যার চেয়ে বন্ধু নাই, ব্যাধির চেয়ে শত্রু নাই। সন্তানের চেয়ে স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
  • বিনয়ই সকলের ভূষণ।
  • বিষ থেকেও অমৃত আহরণ করা চলে, মলাদি থেকেও স্বর্ণ আহরণ করা যায়, নীচজাতি থেকেও বিদ্যা আহরণ করা যায়, নীচকুল থেকেও স্ত্রীরত্ন গ্রহণ করা যায়।
  • ভোগবাসনায় বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়।
  • মিত ভোজনেই স্বাস্থ্যলাভ হয়।
  • যশবানের বিনাশ নেই।
  • যারা রূপযৌবনসম্পন্ন এবং উচ্চকুলজাত হয়েও বিদ্যাহীন, তাঁরা সুবাসহীন পলাশ ফুলের মত বেমানান।
  • যে অলস, অলব্ধ-লাভ তার হয় না।
  • যে গাভী দুধ দেয় না, গর্ভ ধারণও করে না, সে গাভী দিয়ে কী হবে! যে বিদ্বান ও ভক্তিমান নয়, সে পুত্র দিয়ে কী হবে!
  • রাতের ভূষণ চাঁদ, নারীর ভূষণ পতি, পৃথিবীর ভূষণ রাজা, কিন্তু বিদ্যা সবার ভূষণ।
  • শাস্ত্র অনন্ত, বিদ্যাও প্রচুর। সময় অল্প অথচ বিঘ্ন অনেক। তাই যা সারভূত তারই চর্চা করা উচিত। হাঁস যেমন জল-মিশ্রিত দুধ থেকে শুধু দুধটুকুই তুলে নেয়, তেমনি।
  • সত্যনিষ্ঠ লোকের অপ্রাপ্য কিছুই নাই।
  • সত্যবাক্য দুর্লভ, হিতকারী-পুত্র দুর্লভ, সমমনস্কা-পত্নী দুর্লভ, প্রিয়স্বজনও তেমনি দুর্লভ।
  • সাপ নিষ্ঠুর খলও নিষ্ঠুর, কিন্তু সাপের চেয়ে খল বেশি নিষ্ঠুর। সাপকে মন্ত্র বা ওষধি দিয়ে বশ করা যায়, কিন্তু খলকে কে বশ করতে পারে?
  • সুবেশভূষিত মূর্খকে দূর থেকেই দেখতে ভাল, যতক্ষণ সে কথা না বলে ততক্ষণই তার শোভা, কথা বললেই মূর্খতা প্রকাশ পায়।
  • হাতি থেকে একহাজার হাত দূরে, ঘোড়া থেকে একশ হাত দূরে, শৃঙ্গধারী প্রাণী থেকে দশহাত দূরে থাকবে। অনুরূপ দুর্জনের কাছ থেকেও যথাসম্ভব দূরে থাকবে।
  • ১। বিদ্বান ও রাজা কখনই সমান নহেন। রাজা নিজ দেশেই পূজা পাইয়া থাকেন, কিন্তু বিদ্বান সকল স্থানেই পূজা পান। রাজা অপেক্ষা বিদ্বানই বড়।
  • ২। উচ্চকূলে জন্মিয়াও নির্গুণ হইলে কোন লাভ হয় না, অর্থাৎ কোথাও সে আদর পায় না, কিন্তু নীচবংশে জন্মিয়া শাস্ত্রজ্ঞান লাভ করিলে দেবতারাও সম্মান করিয়া থাকেন। লোকসমাজে তো অবশ্যই আদরণীয় হইয়া থাকে।
  • ৩। শিমুল ফুল গন্ধবিহীন বলিয়া সুন্দর হইলেও তাহাকে কেহই আদর করে না, সেইরূপ উচ্চবংশজাত সুন্দর পুরুষ জ্ঞানহীন হইলে তাহাকেও কেহ যত্ন করে না।
  • ৪। বিদ্যাহীনের জীবনে কোন ফল নাই, মিত্রহীনের পক্ষে সকল দিক শূন্যময়, পুত্রহীনের গৃহই শূন্য, দরিদ্রের পক্ষে জগৎই শূন্য।
  • ৫। বিদ্যা কামধেনুর ন্যায়, অর্থাৎ সব সময় ঈপ্সিত ফল প্রদান করিয়া থাকে। বিদ্যা মাতার ন্যায় বিদেশে পালন করে। বিদ্যা অতি গুপ্তধন, তাহাকে কেহই চক্ষে দেখিতে পায় না।
  • ৬। জ্ঞাতিরা ইহা ভাগ করিয়া লইতে সমর্থ হয় না; চোরও চুরি করিয়া নিতে পারে না। বিদ্যা দানে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না বরং বর্দ্ধিতই হয়, অতএব বিদ্যাই শ্রেষ্ঠ ধন।
  • ৭। পণ্ডিতের সকলই গুণ, মুর্খের সকলই দোষ। সেইহেতু হাজার হাজার মুর্খ অপেক্ষা একজন পণ্ডিত ভাল।
  • ৮। ফলযুক্ত বৃক্ষ ফলভারে নত হয়; গুণিগণও নিজগুণে নত হইয়া থাকেন, কিন্তু শুষ্ক কাষ্ঠ ও মুর্খ ভাঙ্গিয়া যাইবে, নত হইবে না।
  • ৯। যিনি পরস্ত্রীকে নিজের মায়ের মত জ্ঞান করেন এবং পরের জিনিসকে ঢিলের মত তুচ্ছজ্ঞান করেন ও সকল প্রাণীকেই নিজের মত মনে করেন, তিনিই প্রকৃত পণ্ডিত।
  • ১০। শত মুর্খ পুত্র অপেক্ষা একটি গুণবান পুত্রও বরং ভাল অগণিত তারাগণ অন্ধকার দূর করিতে সমর্থ হয় না, কিন্তু এক চন্দ্র জগতের অন্ধকার দূর করে।
  • ১. অকর্মারা সদাই ক্ষুধার্ত।
  • ২. অকৃতজ্ঞের নরক বাস হয়। ৩. অখণ্ডিত রত্ন মেলে না।
  • ৪. অতিদর্পে লঙ্কার পতন ঘটেছে, অতিমানে কৌরবদের পতন ঘটেছে, অতিদানে বালির পাতাল বাস ঘটেছে, অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ।
  • ৫. অতি পরিচয়ে দোষ আর ঢাকা থাকে না।
  • ৬. অতিরিক্ত ভার পুরুষকে অবসন্ন করে দেয়।
  • ৭. অধমেরা ধন চায়, মধ্যমেরা ধন ও মান চায়। উত্তমেরা শুধু মান চায়। মানই মহতে ধন।
  • ৮. অনেকে চারটি বেদ এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করলেও আত্মাকে জানে না, হাতা যেমন রন্ধন-রস জানে না।
  • ৯. অন্তঃসার শূন্যদের উপদেশ দিয়ে কিছু ফল হয় না, মলয়-পর্বতের সংসর্গে বাঁশ চন্দনে পরিণত হয় না।
  • ১০. অন্যে যার গুণগান করে সে নির্গুণ হলেও গুণী। নিজের গুণগান নিজে করলে ইন্দ্রও ছোট হয়ে যান।
  • ১১. অবহেলায় কর্মনাশ হয়, যথেচ্ছ ভোজনে কুলনাশ হয়, যাচ্ঞায় সম্মান নাশ হয়, দারিদ্র্যে হয় বুদ্ধি নাশ।
  • ১২. অবিশ্বস্তকে বিশ্বাস করবে না, বন্ধুকেও বিশ্বাস করবে না, বন্ধু যদি কখনও ক্রুদ্ধ হয়, সমস্ত গুপ্তকথা প্রকাশ করে দিতে পারে।
  • ১৩. অভ্যাসহীন বিদ্যা, অজীর্ণে ভোজন, দরিদ্রের সভায় বা মজলিশে কালক্ষেপ, এবং বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা বিষতুল্য।
  • ১৪. অমৃত ও বিষ উভয়েরই আকর হল জিভ।
  • ১৫. অর্থলাভ জীবন ধারণের জন্য।
  • ১৬. অর্থলাভের বাসনা কুকাজে সিদ্ধ হয় না।
  • ১৭. অর্থ যার আছে সে মিত্র, স্বজন, সংসারে পুরুষ, সে-ই পণ্ডিত।
  • ১৮. অসতর্ক লোকের প্রায় সকল কাজই সমুদ্রে বিদীর্ণ জলযানের মতো নিশ্চিত বিনষ্ট হয়।
  • ১৯. অহংকারের মতো শত্রু নেই।
  • ২০. আকাশে উড়ন্ত পাখির গতিও জানা যায়, কিন্তু প্রচ্ছন্নপ্রকৃতির কর্মীর গতিবিধি জানা সম্ভব নয়।
  • ২১. আদর দেওয়ার অনেক দোষ, শাসন করার অনেক গুণ, তাই পুত্রকে ও শিষ্যকে শাসন করাই দরকার, আদর দেওয়া নয়।
  • ২২. আপদের নিশ্চিত পথ হল ইন্দ্রয়গুলির অসংযম, তাদের জয় করা হল সম্পদের পথ- যার যেটি ঈপ্সিত সে সেই পথেই যাক।
  • ২৩. আপন চরিত্র কখনও দূষিত করবে না।
  • ২৪. আহারের সংস্থান ও আহারের শক্তি, রমণীয় পত্নী ও রতিশক্তি, ঐশ্বর্য ও দানশক্তি- এসব অল্প তপস্যার ফল নয়।
  • ২৫. আড়ালে কাজের বিঘ্ন ঘটায়, কিন্তু সামনে ভালো কথা বলে, উপরে দুধ আর ভিতরে বিষ কলসির মতো, তাকে পরিত্যাগ করা উচিত।
  • ২৬. আয়ু, কর্ম, ধন, বিদ্যা ও মৃত্যু- মানুষ মাতৃগর্ভে থাকাকালে এই পাঁচটি তাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে যায়।
  • ২৭. ইন্দ্রিয়ের যে অধীন তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয়।
  • ২৮. ইন্দ্রের মন্ত্রিপরিষদ হল সহস্র ঋষি, ওই সহস্র ঋষিই তাঁর চোখ। তাই দুটিমাত্র চোখ থাকলেও তাঁকে সহস্রা বলা হয়।
  • ২৯. উপায়জ্ঞ মানুষের কাছে দুঃসাধ্য কাজও সহজসাধ্য।
  • ৩০. উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে সে-ই বন্ধু।
  • ৩১. ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, কারণ তারা আবার বেড়ে যেতে পারে।
  • ৩২. ঋণকারী পিতা, দুঃশীলা মা, রূপবতী স্ত্রী, মূর্খ পুত্র- এরা সকলেই শত্রু।
  • ৩৩. একই জিনিস কিন্তু, শব কামিনী ও মাংস- এই তিনটি জিনিসকে যোগী, কামী ও কুকুর তিনভাবে দেখে।
  • ৩৪. একটা কাজ শেষ করে পরবর্তী কাজ ধরতে বেশি দেরি করা উচিত নয়।
  • ৩৫. একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে।
  • ৩৬. একটি কুবৃক্ষের কোটরের আগুন থেকে যেমন সমস্ত বন ভস্মীভূত হয়, তেমনি একটি কুপুত্রের দ্বারাও বংশ দগ্ধ হয়।
  • ৩৭. একটি গাছে ছিল নানা রঙের পাখিরা, ভোরের বেলায় তারা দশ দিকে উড়ে গেল এতে দুঃখের কি আছে?
  • ৩৮. একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়, তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কূল ধন্য হয়।
  • ৩৯. একবার বললেই যিনি বুঝে নিতে পারেন, যাঁর তাড়াতাড়ি হাত চলে, যাঁর হস্তাক্ষর সুন্দর এবং সর্বশাস্ত্রে যিনি সমদৃষ্টি তিনিই যথার্থ লেখক হতে পারেন।
  • ৪০. একশত মূর্খ পুত্রের চেয়ে একটি গুণী পুত্র বরং ভালো। একটি চন্দ্রই অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না।
  • ৪১. একা একা তপস্যা, দুইয়ে মিলে পাঠ, তিনে মিলে গান, চারে মিলে ভ্রমণ, আর পাঁচে মিলে (করলে) ক্ষেতের কাজ। বহুতে মিলে করা চলে যুদ্ধ। ৪২. একা চাকা চলে না।
  • ৪৩. এমনিতে কেউ কারও বন্ধু নয়, কেউ কারও শত্রু নয়, কারণেই শত্রু-মিত্র হয়ে থাকে।
  • ১. খন্তা দিয়ে খুঁড়ে খুঁড়ে মাটি থেকে জল পাওয়া যায়, সেই রকম যে শুশ্রূষু সে গুরুগত বিদ্যাকে লাভ করে।
  • ২. খারাপ সময় যতণ যাচ্ছে ততোণ শত্রুকে কাঁধে করে রাখবে, সুসময় এলেই পাথরের আঘাতে ঘটের মতো সে সখ্য ভেঙে ফেলবে।
  • ৩. খুব বেশি কাছে আসায় হানির সম্ভাবনা, খুব দূরে থাকলেও ফল নেই। রাজা, আগুন, আর স্ত্রী এদের মধ্যপন্থায় সেবা করা উচিত।
  • ৪. খেয়ে যার হজম হয়, ব্যাধি তার দূরে রয়।
  • ৫. গাছের ভয় বাতাসে, পদ্মের ভয় শিশিরে, পর্বতের ভয় বর্জ্রে, সজ্জনের ভয় দুর্জনে।
  • ৬. গুণবানকে আশ্রয় দিয়ে নির্গুণও গুণী হয়।
  • ৭. গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না। নীচকূলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়, তবে দেবতারাও তাঁকে সম্মান করেন।
  • ৮. গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন, তবে পৃথিবীতে এমন কোনও জিনিস নেই যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ করতে পারে।
  • ৯. গৃহে যার মা নেই, স্ত্রী যার দুর্মুখ তার বনে যাওয়াই ভালো, কারণ তার কাছে বন আর গৃহে কোনও তফাৎ নেই।
  • ১০. ঘরকুণোর বিদ্যা হয় না, মাংসখোরের দয়া হয় না, লোলুপের সত্যবোধ নেই, যে স্ত্রৈণ তার তেমনি পবিত্রতা নেই।
  • ৭৩. চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না। গজরাজ বৃদ্ধ হলেও বপ্রক্রীড়া ত্যাগ করে না, যন্ত্রে ইক্ষু নিপিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না, যে সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও সে চরিত্র গুণ ত্যাগ করে না।
  • ৭৪. চিন্তাই মানুষের জ্বর, বস্ত্রদের জ্বর হল রোদ, স্ত্রীলোকের জ্বর হল পতির অপ্রিয়তা, ঘোড়াদের জ্বর হল মৈথুন।
  • ৭৫. ছয় কানে (অর্থাৎ তিন জনের কানে) গেলে গুপ্তকথা প্রকাশ হয়ে যায়। ৭৬. ছেলের প্রশংসা করবে না।
  • ৭৭. জগতে ত্রুটিহীন কাজ দুর্লভ।
  • ৭৮. জন্মান্ধ দেখতে পায় না, কামান্ধও দেখতে পায় না, গর্বোদ্ধতও দেখতে পায় না, ধনবানও এদের মতো নিজের দোষ দেখতে পায় না।
  • ৭৯. জরুরি কাজ মন দিয়ে তখুনি করে ফেলা উচিত, সময় মতো না করলে তা কষ্টসাধ্য হয়, অথবা একান্ত অসাধ্য হয়।
  • ৮০. জলে তেল, খলে গোপন কথা, সৎপাত্রে সামান্য দান, প্রাজ্ঞে শাস্ত্র আপনা থেকেই বিস্তার লাভ করে। বস্তুর স্বভাবধর্ম অনুযায়ীই তা হয়ে থাকে।
  • ১৪৮. ফল ও ছায়াযুক্ত বড়ো গাছকে আশ্রয় করতে হয়। ফল যদি দৈবাৎ না-ও পাওয়া যায়, ছায়া তো আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
  • ১৪৯. বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
  • ১৫০. বলবানের সঙ্গে যুদ্ধ হল হাতির পায়ের সঙ্গে যুদ্ধের মতো অর্থাৎ দলিত মথিত হয়ে যেতে হবে।
  • ১৫১. বস্ত্রহীন অলংকার, ঘৃতহীন ভোজন, স্তনহীন নারী এবং বিদ্যাহীন জীবন ব্যর্থ।
  • ১৫২. বাঘ আর হাতিতে পূর্ণ বন বরং ভালো, তেমনি ভালো বনের মধ্যে ঘর, সেখানে পাকা ফল আর জল তো খাওয়া চলে, তৃণ শয্যায় শতচ্ছিন্ন কম্বল থাকলেও ক্ষতি নেই, কিন্তু স্বজনদের মধ্যে ধনহীন জীবন বৃথা।
  • ১৫৩. বার্ধক্যে পত্নী বিয়োগ, জ্ঞাতির হাতে ধন, এবং পরাধীন ভোজন- পুরুষের এই তিন বিড়ম্বনা।
  • ১৫৪. বালকও যদি যুক্তিপূর্ণ কিছু বলে তবে তা মন দিয়ে শুনবে।
  • ১৫৫. বিবেকবান ব্যক্তিকে আশ্রয় করে গুণেরা আরও মনোজ্ঞ হয়ে ওঠে, যেমন স্বর্ণখচিত হয়ে রত্ন আরও শোভা পায়।
  • ১৫৬. বিক্রমই রাজাদের সম্পদ।
  • ১৫৭. বিচক্ষণ ব্যক্তি বর্জন করবে- কুদেশ, কুবৃত্তি, কুভার্যা, কুনদী, কুদ্রব্য ও কুভোজন।
  • ১৫৮. বিদ্বান সকল গুণের আধার, আর অজ্ঞজনের কেবলই দোষ। তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
  • ১৫৯. বিদ্যাকে ধরে থাকে অভ্যাস, কুলকে ধরে থাকে চরিত্র। গুণেই শিষ্টের পরিচয়। ক্রোধের প্রকাশ দৃষ্টিতে।
  • ১৬০. বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না। রাজা কেবল নিজদেশেই সমাদৃত, বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
  • ১৬১. বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ- তা দিয়ে সে গুহ্য অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না।
  • ১৬২. বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
  • ১৬৩. বিদ্যার মতো বন্ধু নাই, ব্যাধির মতো শত্রু নাই। সন্তানের মতো স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
  • ১৬৪. বিদ্যার্থী, সেবক, পথিক, ক্ষুধার্ত, ভয়ার্ত, ভাণ্ডারী ও দ্বারপাল- এই সাতজন ঘুমিয়ে থাকলে তাদের জাগিয়ে দেবে।
  • ১৪৮. ফল ও ছায়াযুক্ত বড়ো গাছকে আশ্রয় করতে হয়। ফল যদি দৈবাৎ না-ও পাওয়া যায়, ছায়া তো আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
  • ১৪৯. বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
  • ১৫০. বলবানের সঙ্গে যুদ্ধ হল হাতির পায়ের সঙ্গে যুদ্ধের মতো অর্থাৎ দলিত মথিত হয়ে যেতে হবে।
  • ১৫১. বস্ত্রহীন অলংকার, ঘৃতহীন ভোজন, স্তনহীন নারী এবং বিদ্যাহীন জীবন ব্যর্থ।
  • ১৫২. বাঘ আর হাতিতে পূর্ণ বন বরং ভালো, তেমনি ভালো বনের মধ্যে ঘর, সেখানে পাকা ফল আর জল তো খাওয়া চলে, তৃণ শয্যায় শতচ্ছিন্ন কম্বল থাকলেও ক্ষতি নেই, কিন্তু স্বজনদের মধ্যে ধনহীন জীবন বৃথা।
  • ১৫৩. বার্ধক্যে পত্নী বিয়োগ, জ্ঞাতির হাতে ধন, এবং পরাধীন ভোজন- পুরুষের এই তিন বিড়ম্বনা।
  • ১৫৪. বালকও যদি যুক্তিপূর্ণ কিছু বলে তবে তা মন দিয়ে শুনবে।
  • ১৫৫. বিবেকবান ব্যক্তিকে আশ্রয় করে গুণেরা আরও মনোজ্ঞ হয়ে ওঠে, যেমন স্বর্ণখচিত হয়ে রত্ন আরও শোভা পায়।
  • ১৫৬. বিক্রমই রাজাদের সম্পদ।
  • ১৫৭. বিচক্ষণ ব্যক্তি বর্জন করবে- কুদেশ, কুবৃত্তি, কুভার্যা, কুনদী, কুদ্রব্য ও কুভোজন।
  • ১৫৮. বিদ্বান সকল গুণের আধার, আর অজ্ঞজনের কেবলই দোষ। তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
  • ১৫৯. বিদ্যাকে ধরে থাকে অভ্যাস, কুলকে ধরে থাকে চরিত্র। গুণেই শিষ্টের পরিচয়। ক্রোধের প্রকাশ দৃষ্টিতে।
  • ১৬০. বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না। রাজা কেবল নিজদেশেই সমাদৃত, বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
  • ১৬১. বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ- তা দিয়ে সে গুহ্য অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না।
  • ১৬২. বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
  • ১৬৩. বিদ্যার মতো বন্ধু নাই, ব্যাধির মতো শত্রু নাই। সন্তানের মতো স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
  • ১৬৪. বিদ্যার্থী, সেবক, পথিক, ক্ষুধার্ত, ভয়ার্ত, ভাণ্ডারী ও দ্বারপাল- এই সাতজন ঘুমিয়ে থাকলে তাদের জাগিয়ে দেবে।
  • ১৮৪. ভবিতব্যতা যেমন বুদ্ধিও ঠিক তেমনি হয়, কর্মধারাও তেমনি, সহায়তাও তেমনি।
  • ১৮৫. ভাতের চেয়ে দশগুণ পিঠে, পিঠের চেয়ে দশগুণ দুধ, দুধের চেয়ে দশগুণ মাংস, মাংসের চেয়ে দশগুণ ঘি (পুষ্টি দেয়)।
  • ১৮৬. ভৃত্যকে পরীক্ষা করবে কাজে নিযুক্ত করে, কোনও অঘটন ঘটলে চিনবে স্বজনকে, বিপদে চিনবে বন্ধুকে, পত্নীকে চিনবে ধনক্ষয় হলে।
  • ১৮৭. ভেবেচিন্তে যে কাজ করে, তার শ্রী চিরস্থায়ী।
  • ১৮৮. ভোগবাসনায় বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়।
  • ১৮৯. ভ্রমণে রাজা, ব্রাহ্মণ, যোগীর সম্মান, কিন্তু এই ভ্রমণেই নারীর বিনাশ।
  • ১৯০. মনের বাসনা কার সবটা পূর্ণ হয়? সমস্তই দৈবের অধীন, তাই সন্তোষকে আশ্রয় করাই শ্রেয়।
  • ১৯১. মনের সংকল্প প্রকাশ করবে না, সংকল্পিত কাজের কথা অন্যে জানতে পারলে সে কাজ সফল হয় না।
  • ১৯২. মাংসাশী, মদ্যপায়ী এবং অরজ্ঞানহীন মূর্খ- এই সব পুরুষাকার পশুর দ্বারা এই পৃথিবী ভারাক্রান্ত।
  • ১৯৩. মিত ভোজনেই স্বাস্থ্যলাভ হয়।
  • ১৯৪. মূর্খ শিষ্যের উপদেশে, দুষ্ট স্ত্রীকে পালনে এবং শত্রুদের কূটচক্রে পণ্ডিত বিনষ্ট হয়।
  • ১৯৫. মূর্খত্ব কষ্টকর, যৌবন কষ্টকর সন্দেহ নেই, কিন্তু পরগৃহে বাস সব চেয়ে কষ্টকর।
  • ১৯৬. মূর্খের কাজ অবাঞ্ছিত হবে, তা নিয়ে বেশি ভেবে লাভ নেই।
  • ১৯৭. মৃগয়ায় যে আসক্ত তার ধর্ম ও অর্থ দুই-ই নষ্ট হয়।
  • ১৯৮. মেঘের মতো জল নাই, আত্মার মতো বল নাই, চোখের মতো তেজ নাই, অন্নের মতো প্রিয় নাই।
১৯৯. মেধাবী এবং বাকপটু, প্রাজ্ঞ, পরের মন বোঝায় যিনি দক্ষ, যিনি ধীর এবং ঠিক যা বলা হয়েছে তা-ই বলেন, তিনিই দূত হবার যোগ্য।

এই বিজ্ঞ ও বাস্তবজ্ঞান-সম্পন্ন পণ্ডিতের সমাজ, সংসার, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি ইত্যাদি সম্পর্কিত নীতিকথাগুলি (আজ আড়াই হাজার বছর পড়েও) গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেনি। আজও তা ‘চাণক্য-শ্লোক’ নামে ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। কথাগুলি যে চাণক্যের তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না, অথচ কথাগুলি আমাদের খুবই পরিচিত।
উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু।
ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, কারণ তারা আবার বেড়ে যেতে পারে।
একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে।
একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়, তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কুল ধন্য হয়। কর্কশ কথা অগ্নিদাহের চেয়েও ভয়ঙ্কর। গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না গৃহে যার মা নেই, স্ত্রী যার দুর্মুখ তার বনে যাওয়াই ভাল, কারণ তার কাছে বন আর গৃহে কোনও তফাৎ নেই। চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না, যন্ত্রে ইক্ষু নিপিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না, যে সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও সে চরিত্রগুণ ত্যাগ করে না। তিনটি বিষয়ে সন্তোষ বিধেয়: নিজের পত্নীতে, ভোজনে এবং ধনে। কিন্তু অধ্যয়ন, জপ, আর দান এই তিন বিষয়ে যেন কোনও সন্তোষ না থাকে। দুর্বলের বল রাজা, শিশুর বল কান্না, মূর্খের বল নীরবতা, চোরের মিথ্যাই বল। দুষ্টা স্ত্রী, প্রবঞ্চক বন্ধু, দুর্মুখ ভৃত্য এবং সসর্প-গৃহে বাস মৃত্যুর দ্বার, এ-বিষয়ে সংশয় নেই। নানাভাবে শিক্ষা পেলেও দুর্জন সাধু হয় না, নিমগাছ যেমন আমূল জলসিক্ত করে কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও কখনও মধুর হয় না। পাঁচ বছর বয়স অবধি পুত্রদের লালন করবে, দশ বছর অবধি তাদের চালনা করবে, ষোল বছরে পড়লে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করবে। পুত্রকে যাঁরা পড়ান না, সেই পিতামাতা তার শত্রু। হাঁসদের মধ্যে বক যেমন শোভা পায় না, সভার মধ্যে সেই মূর্খও তেমনি শোভা পায় না। বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়। বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ, তা দিয়ে সে গুহ্য-অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না। বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়? বিদ্যার চেয়ে বন্ধু নাই, ব্যাধির চেয়ে শত্রু নাই। সন্তানের চেয়ে স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই। বিষ থেকেও অমৃত আহরণ করা চলে, মলাদি থেকেও স্বর্ণ আহরণ করা যায়, নীচজাতি থেকেও বিদ্যা আহরণ করা যায়, নীচকুল থেকেও স্ত্রীরত্ন গ্রহণ করা যায়। অকর্মারা সদাই ক্ষুধার্ত। অনেকে চারটি বেদ এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করলেও আত্মাকে জানে না, হাতা যেমন রন্ধন-রস জানে না। অভ্যাসহীন বিদ্যা, অজীর্ণে ভোজন, দরিদ্রের সভায় বা মজলিশে কালক্ষেপ, এবং বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা বিষতুল্য। ইন্দ্রিয়ের যে অধীন তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয় (চাচার বিষয়ে কিছু বলেছেন নাকি?? ) একা একা তপস্যা, দুইয়ে মিলে পাঠ, তিনে মিলে গান, চারে মিলে ভ্রমণ, আর পাঁচে মিলে (করলে) ক্ষেতের কাজ। বহুতে মিলে করা চলে যুদ্ধ। এমনিতে কেউ কারও বন্ধু নয়, কেউ কারও শত্রু নয়, কারণেই শত্রু-মিত্র হয়ে থাকে। কবিরা কি না দেখে, স্ত্রীলোকেরা কি না করে, মদ্যপেরা কি না কল্পনা করে, কাকেরা কি না খায়? কুয়োর জল, বটের ছায়া, যৌবনবতী স্ত্রী এবং ইটের তৈরি বাড়ি শীতকালে উষ্ণ এবং গ্রীষ্মকালে শীতল।
কূলের স্বার্থে একজনকে ত্যাগ করবে, গ্রামের স্বার্থে কূলকে ত্যাগ করবে, জনপদের স্বার্থে গ্রামকেও ত্যাগ করবে, আর নিজের স্বার্থে পৃথিবীকেও ত্যাগ করবে।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রিকা, সাইট, ব্লগ থেকে সংগ্রহ করে একত্র করা হয়েছে বলে এর সোর্স দেয়া গেল না।


Tuesday, August 27, 2019

The Art of Storytelling: Easy Steps to Presenting an Unforgettable Story

The Art of Storytelling: Easy Steps to Presenting an Unforgettable Story
1. Select a Story
2. Push through the story
3. Envision the scene with present-day feelings and concerns
4. Tell the story from the view of someone at the scene
5. Establish the stories
central truth
one
6. Find a memory hook
7. Tell a story within a story
8. Plan your first words
9. Know how your story ends
10. Research the facts
11. Eliminate needless details
12. Add description to the story
13. Include audience participation
14. Practice with an Audience
15. Teach these steps to others
Seven Storyteller Tools
Tool #1: Imagination-you have to see it
Tool #2: Facial Expressions
Tool #3: Body Movement
Tool #4: The voice - different voices, pauses, etc.
Tool #5: The Pace-the flow of the story, not too slow or too fast
Tool #6: Nervousness: turning weakness into a strength
Tool: 7: Confidence -practice with a mic or in front of an audience

গীতার অধ্যায় ১৮

অধ্যায় ১৮


               অষ্টাদশ অধ্যায়টি গীতার চূড়ান্ত অধ্যায়।  এই অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে সন্ন্যাস, ত্যাগ এবং তায়াগের মধ্যে পার্থক্য বলেছিলেন, তা ত্যাগ বা আত্মসমর্পণ।  তিনি পরামর্শ দেন যে আমাদের আত্মসমর্পণ করা উচিত, বা ত্যাগ করা উচিত, কেবল পুরষ্কার এবং কর্মের ফল, এবং কর্ম নিজেই নয়।  তিনি প্রকৃতির বৈশিষ্ট্য অনুসারে তিন ধরণের কর্ম, তিন ধরণের জ্ঞান, তিন প্রকার বুদ্ধিমত্তা এবং তিন ধরণের অধ্যবসায় বা প্রচেষ্টা সম্পর্কে এবং পাশাপাশি তিন ধরণের সুখ সম্পর্কে বলেছেন।

              তিনি ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং নিম্ন বর্ণের স্ব-স্বভাবের জন্মের গুণাবলী ও কর্তব্যও ব্যাখ্যা করেছেন।  তিনি কর্মের যোগ, সুবোধ উপলব্ধি, উপলব্ধি এবং ব্রহ্মের, সর্বোচ্চ নিষ্ঠার, কীভাবে দুর্দশা ও ঝামেলা কাটিয়ে উঠতে পারেন এবং অর্জুনকে চূড়ান্ত উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন যে তিনি সমস্ত কিছু ছেড়ে চলে যান এবং কেবল তাঁরই শরণাপন্ন হন,  ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি তাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি দেবেন, তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেছেন।


                                                                   অধ্যায়

              অর্জুন কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করেছেন: প্রভু, আমি সন্যাস ও তায়াগ সম্পর্কে জানতে চাই।  এই দুটির মধ্যে পার্থক্য কী;  দয়া করে আমাকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করুন।

             শ্রীকৃষ্ণ ব্যাখ্যা করেছেন: শোনো পার্থ, সন্ন্যাস ত্যাগ;  এটি স্বার্থপর বাসনা দ্বারা পরিচালিত সমস্ত ক্রিয়াকলাপ ত্যাগ করা।

             তায়াগা আত্মসমর্পণ;  এটি হ'ল সমস্ত ফলকে ছেড়ে দেওয়া, এটি সমস্ত ক্রিয়াকলাপের সমস্ত পুরষ্কার প্রদান।

             সন্ন্যাসে থাকাকালীন ক্রিয়া নিজেই ত্যাগ করা হয়;  তায়াগায় এটি ফল, এটি কর্মের পুরষ্কার, তা ত্যাগ করা হয়, না ক্রিয়া নিজেই।

             কিছু পন্ডিত, বিদ্বান ব্যক্তিরা মনে করেন যে ক্রিয়াটি নিজেই এটির ত্রুটি এবং কলুষের মধ্যে বহন করে এবং তাই, পদক্ষেপকে কলঙ্কিত হিসাবে বিবেচনা করে, এটি ছেড়ে দেওয়া উচিত, এটি ত্যাগ করা উচিত।

               অন্যান্য পন্ডিতরা মনে করেন যে ত্যাগ, তপস্যা ও দানশীলতার কাজ কখনও ত্যাগ করা উচিত নয়।  এবার টাইগা বা আত্মসমর্পণ সম্পর্কে সত্য শুনুন যা তিন ধরণের of

              ত্যাগ, কৃপণতা ও দানশীলতার মতো ক্রিয়াকলাপগুলি কখনই ত্যাগ করা উচিত নয় কারণ এগুলি তাদের বুদ্ধিমানদের শুচি করে।  তবে এই ক্রিয়াকলাপগুলিও কোনও সংযুক্তি ছাড়াই এবং এই জাতীয় ক্রিয়াকলাপগুলির ফলের পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করে সম্পাদন করা উচিত।  এটি আমার বিবেচিত এবং চূড়ান্ত দর্শন।

            করার মতো কোনও পদক্ষেপ কখনও ত্যাগ করা উচিত নয়।  কারওরই নির্ধারিত ও নির্ধারিত দায়িত্ব, কারওর স্বাভাবিক কর্তব্য এবং কর্মকে কখনই ত্যাগ করা উচিত নয়।  অজ্ঞতার কারণে এ জাতীয় ক্রিয়াকলাপ চালানোকে তামাসিক তায়াগা বলা হয়।

            যে ব্যক্তি তার নির্ধারিত দায়িত্ব ত্যাগ করে কারণ তার কাজটি করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে, বা এটি করতে গিয়ে শারীরিক ব্যথা বা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, এ জাতীয় তায়াগা প্রকৃতির রাজসিক এবং এই জাতীয় আত্মসমর্পণ থেকে সে তায়াগ থেকে কোনও লাভ পায় না।

            কিন্তু যে ব্যক্তি তার নির্ধারিত কাজটি করে, এটি তার নির্ধারিত দায়িত্ব মনে করে যে এটি করা তার ধার্মিক আচরণের অংশ, এবং যে ক্রিয়াকলাপের সাথে সমস্ত সংযুক্তি ত্যাগ করে তেমনি সেই ক্রিয়াকলাপের ফল বা পুরষ্কারকেও ছেড়ে দেয়  এই জাতীয় তায়াগাকে সাত্ত্বিক বলা হয়।

             বুদ্ধিমান ব্যক্তি যে আত্মসমর্পণ করে, যার সমস্ত সন্দেহ এবং সমস্ত বিভ্রান্তি বিশ্রাম পেয়েছে, এবং যার প্রকৃতি সাত্ত্বিক, সে সর্বদা সত্ত্বগুণে বাস করে।  সে খারাপ কাজকে তুচ্ছ করে না, সৎকর্মের সাথে তার কোন অনুষঙ্গও নেই।

           পুরোপুরি কাজ করা মূর্ত ব্যক্তির পক্ষে অসম্ভব, তবে যে ফল এবং তার কর্মের পুরস্কারটি সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করে, তাকে ত্যাগী, ত্যাগী বলা হয়।

            যাঁরা মৃত্যুর পরেও জীবদ্দশায় তাদের কর্মের ফল সমর্পণ করেন নি, তারা তাদের কর্মের ফল পেতে বাধ্য, যা তিন ধরণের হবে: আনন্দদায়ক, অপ্রীতিকর এবং মিশ্রিত, যা আংশিক আনন্দদায়ক এবং আংশিকভাবে অপ্রীতিকর;  এবং এই ফলগুলিই তাদের পুনর্জন্মের কারণ হয়ে ওঠে।

               কিন্তু যাঁরা তাদের কর্মের ফল ছেড়ে দিয়েছেন, মৃত্যুর পরেও ফল পান না, তাঁরা কর্ম থেকে মুক্তি পান এবং ফলস্বরূপ বন্ধনের ফলে এবং তারা জন্ম ও মৃত্যুর এই চক্র থেকে বেরিয়ে আসে, তারা হয়ে যায়  বারবার জন্ম এবং মৃত্যু থেকে মুক্ত।

            সাংখ্য মতবাদ অনুসারে কাজ করার পাঁচটি কারণ রয়েছে।  একটি হ'ল কাজের জায়গা।  দুই, যে কাজের কর্তা।  তিন, কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্থানগুলি।  চতুর্থত, কাজটি করার সাথে জড়িত প্রচেষ্টা এবং পঞ্চম, প্রভিডেন্স বা ,শ্বর, যিনি সমস্ত কিছুকে সম্ভব করেছেন এবং কে এই সব করছেন।

         যিনি, তাঁর শরীর, বা মন দিয়ে, বা তাঁর বক্তব্য সহ, যে কোনও কাজ করেন, যথাযথ বা অনুপযুক্ত, কেবলমাত্র এই পাঁচটি উপাদানের ফলস্বরূপ, এই পাঁচটি কারণ, সমস্ত একসাথে অভিনয়।

           কিন্তু যে ব্যক্তি তার নিস্তেজ এবং নিম্ন বুদ্ধি, তার অজ্ঞতা এবং তার অহংকারের কারণে বিশ্বাস করে যে তিনিই একমাত্র কর্তা, তিনি অজ্ঞ, এবং কাজের সঠিক ফর্মটি তিনি দেখতে পান না।

            যে ব্যক্তি অহংকারের এই অনুভূতি রাখে না যে সে একাকী করিয়াছে, এবং যে বুঝতে পারে যে সমস্ত ক্রিয়াকলাপের মধ্যে প্রভিডেন্টেরও একটি হাত রয়েছে, যার বুদ্ধি কর্মের ফলের সাথে জড়িত নয়, তিনি এই সমস্ত লোককে হত্যা করার সময়,  তবুও সে তাদের হত্যা করে না এবং তার কৃতকর্মের কারণে সে দাসত্ব করতে পারে না।

            যে কারণগুলি একজন ব্যক্তিকে ক্রিয়াতে অনুপ্রাণিত করে সেগুলি হ'ল তিনটি: জ্ঞান, জ্ঞানের লক্ষ্য এবং কর্তা যে জানে।

             যে কারণগুলি কর্মের ভিত্তি গঠন করে এবং ক্রিয়াটি সম্ভব করে তোলে সেগুলিও তিনটি: সংস্থান, ক্রিয়া এবং ক্রিয়া সম্পাদক।

            সঙ্খ্য মতবাদে ইঙ্গিত হিসাবে, জ্ঞান, কর্ম এবং করণকারীকেও তিন প্রকারে পৃথক করা হয়েছে, প্রকৃতির তিনটি গুণ, সত্যগুণ, রাজোগুন এবং তমোগুনা অনুসারে।

            যে জ্ঞানের দ্বারা কোনও ব্যক্তি সৃষ্টির বৈচিত্র্যে অন্তর্নিহিত একতা দেখেন তা হ'ল সাত্ত্বিক বা খাঁটি এবং ভাল জ্ঞান।

              যদিও স্পষ্টতই বিভাজ্য এবং সমস্ত প্রাণীর মধ্যে পৃথকভাবে উপস্থিত, তিনি লর্ডের অনির্বচনীয় কর্তৃত্ব এবং সার্বভৌমত্বকে সমস্ত প্রাণীতে এক এবং এক হিসাবে দেখেন।  তিনি কেবলমাত্র creationশ্বরের সৃষ্টির একতা দেখেন এবং Godশ্বরকে সমস্ত জীব এবং সমস্ত সৃষ্টিতে সমান দেখেন।

             জ্ঞান, যে বিভিন্ন রূপের কারণে, এবং বিভিন্ন আকারের কারণে এবং জীবের বৈচিত্র্যের কারণে, সেগুলি পৃথক হিসাবে দেখায়, রাজসিক জ্ঞান।  এতে তিনি প্রভুর অনির্বচনীয় কর্তৃত্ব এবং সার্বভৌমত্বকে মানুষের মধ্যে বিভক্ত দেখতে পেয়েছেন, যার ফলস্বরূপ তিনি তাদের মধ্যে পার্থক্য ও বৈষম্য দেখান।

           যে জ্ঞান দ্বারা কোনও ব্যক্তি সত্যকে বোঝে না, যা সংকীর্ণ এবং সীমাবদ্ধ, এবং যে কোনও কারণকে তার কারণ ও প্রভাব বিবেচনা না করেই একক কর্ম হিসাবে বিবেচনা করে, এবং সমস্ত কিছুর শেষ হিসাবে, যেমন জ্ঞান তামাসিক  এটি জ্ঞান নয় তবে অজ্ঞতা।

           ধর্মগ্রন্থে যে কর্ম নির্ধারিত হয়েছে, যা কারওর স্বভাব অনুসারে এবং যা সংযুক্তি ব্যতীত, বিদ্বেষ ছাড়াই এবং ফল বা পুরষ্কারের প্রত্যাশা ব্যতিরেকে করা হয়, এ জাতীয় ক্রিয়া সাত্ত্বিক বা শুদ্ধ।

            ফলের আকাঙ্ক্ষা, প্রচণ্ড প্রচেষ্টা এবং অহংকার সহকারে যে কর্মটি করা হয় তা হ'ল রাজসিক কর্ম।
 
             এবং অজ্ঞতাবশতঃ হিংস্রতা সহকারে, ক্ষতি করার জন্য, অ্যাকশন করার ক্ষমতার কথা চিন্তা না করে এবং অ্যাকশনের কারণে ভবিষ্যতের দাসত্বের কথা চিন্তা না করে যে কর্মটি করা হয় তা হ'ল তামাসিক ক্রিয়া।

           যে কর্ম সম্পাদনকারী অহং ব্যতিরেকে, যিনি সংযুক্তিহীন, যিনি উত্সাহ এবং ধৈর্য পূর্ণ, এবং যিনি ভারসাম্য বজায় রাখেন, এবং সাফল্য এবং ব্যর্থতায় একই, এবং যারা তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত বা বিভ্রান্ত হন না, তিনি এমন কাজ করেন is  একজন সাত্ত্বিক কর্তা

           যে কর্মী আবেগ এবং ক্রোধ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়, যে তার শ্রমের ফল পেতে আগ্রহী, যে লোভী, প্রকৃতির দ্বারা হিংস্র, কে নাপাক, এবং যে উত্সাহিত, এবং বিভ্রান্ত, উভয়ই আনন্দ ও দুঃখ দ্বারা উদ্বিগ্ন such  একজন কর্তা রাজসিক কর্তা is

          এবং যে কাজটি ভারসাম্যহীন, যিনি বস্তুবাদী, হঠকারী, কে প্রতারক, যে অন্যকে অপমান করে, যে ঘৃণা করে, ঝামেলা করে, যে বিলম্ব করে চলে, এবং ক্রিয়া বন্ধ করে দেয়, তেমসীক তমসীক।

           এখন প্রকৃতির তিনটি বৈশিষ্ট্য অনুসারে বুদ্ধি এবং অধ্যবসায়ের বিষয়ে শুনুন, যা আমি আপনাকে পৃথকভাবে এবং বিস্তারিতভাবে বলব।

          ক্রিয়া এবং নিষ্ক্রিয়তার মধ্যে পার্থক্য বোঝার যে বুদ্ধি, কর্মের পক্ষে মূল্যবান এবং কর্মের পক্ষে মূল্যবান নয়, আমাদের কী ভয় করা উচিত, এবং আমাদের কী ভয় করা উচিত নয়, কোনটা বাঁধে এবং কী মুক্ত করে, এই ধরনের বুদ্ধি সাত্ত্বিক, এটি শুদ্ধ  এবং ভাল.

          যে বুদ্ধি কেবল আংশিকভাবে ভাল এবং খারাপের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে, ন্যায়পরায়ণতা এবং অধর্মের মধ্যে কাজ করার মতো মূল্য এবং কাজের মধ্যে মূল্যহীন, যেমন বুদ্ধি রাজসিক, এটি আবেগপূর্ণ এবং অসম্পূর্ণ।

          এবং যে বুদ্ধি অজ্ঞতা এবং অন্ধকারে ডুবে আছে, যা মন্দকে ভাল এবং খারাপকে খারাপ হিসাবে বিবেচনা করে, অধার্মিককে ধার্মিক হিসাবে এবং ধার্মিককে অধার্মিক হিসাবে বিবেচনা করে, যে অধর্মকে ধর্ম, এবং ধর্মকে অধর্ম হিসাবে বিবেচনা করে  , এটি সর্বদা ভুল দিকের দিকে নিবদ্ধ থাকে এবং সর্বদা ভুল এবং বিপরীত পথে চলে, এ জাতীয় বুদ্ধি তামাসিক, এটি অন্ধকার এবং মন্দ।

           দৃ determination়তা ও সংকল্পবদ্ধ দৃ and় সংকল্প এবং যার দ্বারা একজন মনকে রাখে, জীবনকে শ্বাস দেয় এবং সমস্ত ইন্দ্রিয়ের ক্রিয়াকলাপকে কেন্দ্র করে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখে, এইরকম দৃ ,়তা, এই অধ্যবসায়টি হ'ল সাত্ত্বিক, উত্তম এবং শুদ্ধ।

         যে সংকল্প দ্বারা কোনও ব্যক্তি দৃ a়ভাবে তার ধর্ম, তার কর্তব্য, তার সম্পদ, তার ইচ্ছা, তার কর্ম এবং সেই ক্রিয়াগুলির ফলের সাথে দৃ attached়রূপে সংযুক্ত থাকে, তার মধ্যে আটকে থাকে, এইরকম দৃ .়তা, এ জাতীয় অধ্যবসায় রাজসিক, আবেগপূর্ণ এবং অসম্পূর্ণ।

           এবং দৃ determination় সংকল্প যার দ্বারা অজ্ঞানপুষ্ট ব্যক্তি ঘুম, ভয়, শোক, নিষ্ঠুরতা, হতাশা এবং অহঙ্কার ত্যাগ করে না এবং তাদের মধ্যে আটকে থাকে, এইরকম দৃ determination়তা, এই ধরণের অধ্যবসায়টি হ'ল তামাসিক, অন্ধকার এবং অপরিষ্কার।

          এবার পার্থ, তিন রকম আনন্দ শুনুন।  আত্মার স্পষ্ট উপলব্ধি থেকে যে আনন্দটি আসে, যার মধ্যে দীর্ঘ অনুশীলনের মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তি আনন্দিত হয় যার দ্বারা তার সমস্ত দুঃখ শেষ হয়, এ জাতীয় আনন্দ সাত্ত্বিক যা শুরুতে বিষের মতো, তবে শেষ পর্যন্ত এটি অমৃতের মতো।

             ইন্দ্রিয়ের বস্তুগুলি উপভোগ করে ইন্দ্রিয় থেকে যে আনন্দ আসে তা হ'ল রাজসিক আনন্দ, যা শুরুতে অমৃতের মতো এবং শেষ পর্যন্ত বিষের মতো।

              এবং সেই আনন্দটি যা শুরুতে এবং শেষদিকে আত্মাকে সন্দেহ এবং বিভ্রান্তিতে রাখে, তা হ'ল তামাসিক এবং ঘুম, আলস্য, অজ্ঞতা এবং অসাবধানতার ফলস্বরূপ।

              স্বর্গের দেবগণ সহ তিনটি জগতে প্রকৃতির এই তিনটি গুণাবলী থেকে মুক্ত কেউ নেই, যার এই তিনটি বৈশিষ্ট্য নেই: সত্ত্বগুণ, রাজোগুন এবং তমোগুন।

             ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং নিম্ন বর্ণের সকলেরই নিজ নিজ স্বভাব অনুসারে গুণাবলি রয়েছে।  তাদের সম্পর্কে শুনুন।

            ব্রাহ্মণদের প্রাকৃতিক গুণাবলী হ'ল: নম্রতা, শান্তিপূর্ণ স্বভাব, আত্মনিয়ন্ত্রণ, তপস্যা এবং কঠোরতা, শুদ্ধি, ধৈর্য এবং ধৈর্য, ​​সত্যবাদিতা, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা, ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়ন এবং ধর্মে বিশ্বাস, ধার্মিকতায়।

          ক্ষত্রিয় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হ'ল নেতৃত্ব, সাহস, শক্তি, অধ্যবসায়, দক্ষতা এবং দক্ষতা, যুদ্ধ থেকে পালানো নয়, এবং উদার এবং দানশীল মনোভাব।

            বৈশ্যদের স্বাভাবিক কর্তব্য হ'ল কৃষি, পশুপালন ও বাণিজ্য।  নিম্ন বর্ণের স্বাভাবিক কর্তব্য দায়িত্ব পালন করা।

           প্রত্যেকে তার স্বাভাবিক এবং নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে উপলব্ধি অর্জন করে।  এখন কীভাবে একজনের প্রাকৃতিকভাবে, নিজের নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করে, কোনও ব্যক্তি কীভাবে উপলব্ধি অর্জন করতে পারে সে সম্পর্কে শুনুন।

         যে কারও ধর্ম দ্বারা বা নিজের নেক আচরণের দ্বারা স্বভাব দ্বারা আদেশিত কর্তব্য সম্পাদন করা সেই পরমাত্মার, সেই পরম আত্মার, যাহার দ্বারা সমস্ত জীব জন্মেছে, এবং যিনি সমস্ত সৃষ্টিকে পরিবেশন করেন, উপাসনা করার মতো।

          অপূর্ণভাবে সম্পাদন করা সত্ত্বেও একজনের স্বাভাবিক কর্তব্য অন্যের কর্তব্য সম্পাদনের চেয়ে অনেক বেশি ভাল।  যে ব্যক্তি নিজের প্রাকৃতিক কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করে সে কখনও পাপ করতে পারে না।

            অতএব, কারও কখনও হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, কারও উচিত কখনও ত্যাগ করা উচিত নয়, কারও স্বাভাবিক কর্তব্য হওয়া উচিত, যদিও এতে কিছু ত্রুটি বা ত্রুটি থাকতে পারে, কারণ আগুন যেমন ধোঁয়ায় isাকা থাকে, তেমনি প্রতিটি কর্তৃত্বেও কিছু ত্রুটি থাকে, বা  কিছু অসম্পূর্ণতা বা অন্যটি।

           যে ব্যক্তির বুদ্ধি সর্বদা অপরিবর্তিত থাকে, যার মধ্যে কোন ইচ্ছা থাকে না এবং যে আত্মাকে নিজের আত্মায় নিয়ন্ত্রণ করে, সে ত্যাগের মধ্য দিয়ে সেই সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে যায়, সেখানে পৌঁছে সে সমস্ত কর্ম থেকে মুক্তি পায়।

           উপলব্ধি অর্জনের পরে, কীভাবে একজন ব্রহ্মকে অর্জন করেন, পরম, যা চূড়ান্ত, সমস্ত জ্ঞানের সর্বোচ্চ পয়েন্ট, এখন আমি আপনাকে সে সম্পর্কে বলব।

            পূর্ণ এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে ঝাঁকুনি দেওয়া, নিজেকে দৃ control়ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা, শব্দ এবং অন্যান্য সমস্ত ইন্দ্রিয় এবং তাদের বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করা, এবং আকর্ষণ, সংযুক্তি এবং বিদ্বেষ ত্যাগ করা, নির্জন স্থানে বাস করা, ভীষণভাবে খাওয়া, খাওয়া কিন্তু সামান্য, নিজের বক্তব্য রাখা, নিজের  শরীর এবং কারও মন নিয়ন্ত্রণে থাকে, বৈরাগ্য ও বিচ্ছিন্নতার আশ্রয় প্রার্থনা করে, নিজের অহংকার, কারও শক্তি, কারও গর্ব, কারো গৌরব, কারো রাগ এবং কারও সম্পত্তি ত্যাগ করে;  এই সমস্ত বিষয় ছেড়ে দেওয়া, এবং বিশ্বাস করা ও বিশ্বাস করা যে তাঁর কোন কিছুরই মালিক নেই, যে বিশ্বাসের সাথেই তাঁর কোনও কিছুর উপর মালিকানা নেই, এবং নির্মল বিবেক ও চেতনা হয়ে উঠলে তিনি ব্রহ্মের সাথে পরম পরম্পরায় এক হয়ে যাওয়ার উপযুক্ত হন।

             এবং যখন সে ব্রহ্মের সাথে পরম পরম হয়ে এক হয়ে যায় এবং নির্মল আত্মায় পরিণত হয়, তখন তার কোনও দুঃখ হয় না এবং তার কোনও ইচ্ছাও থাকে না।  সমস্ত প্রাণীকে সমান হিসাবে বিবেচনা করে তিনি আমার পরম ভক্তি অর্জন করেন।

             এবং আমার প্রতি তাঁর এই নিবেদনের মধ্য দিয়ে তিনি সত্যে জানতে পেরেছেন যে আমি কে এবং আমার সীমাটি কী।  তারপরে, আমাকে আমার আসল রূপে জেনে তিনি আমার মধ্যে প্রবেশ করলেন।

              আমার আশ্রয়ে আসা, যদিও তিনি সর্বদা সব ধরণের কাজে নিযুক্ত থাকেন, তবুও আমার অনুগ্রহ ও করুণার মধ্য দিয়ে তিনি চিরন্তন, অমর এবং পরমেশ্বরূপ লাভ করেন।

             নিজেকে আমার মধ্যে সম্পূর্ণরূপে একীভূত করা, আপনার সচেতন মন দিয়ে আপনার সমস্ত ক্রিয়াকলাপ আমার কাছে উত্সর্গ করা, জ্ঞানের যোগে আশ্রয় নেওয়া, আপনার চিন্তা সবসময় আমার উপর রাখুন।

            আপনার চেতনা সর্বদা আমার উপর স্থির করা, আমার অনুগ্রহে আপনি সমস্ত বাধা এবং সমস্ত অসুবিধা অতিক্রম করবেন।  তবে, যদি আপনার মিথ্যা অহংকারের কারণে, আপনি আমার কথা শোনেন না, তবে আপনি নষ্ট হয়ে যাবেন।

          যদি আপনার মিথ্যা অহংকার এবং আপনার ভ্রান্ত ধারণার কারণে, আপনি যদি মনে করেন যে আপনি এই যুদ্ধটি লড়বেন না, তবে আপনি দুঃখের সাথে ভুল করছেন;  কারণ আপনার নিজস্ব প্রকৃতিই আপনাকে যুদ্ধে লড়াই করতে বাধ্য করবে।

          সন্দেহের কারণে, আপনি যে কাজটি করতে চান না, যে যুদ্ধ আপনি করতে চান না, আপনি যে যুদ্ধটি করতে চান না, সেই কাজটি আপনিই করবেন, সেই যুদ্ধটি আপনি লড়াই করবেন, এমনকী ইচ্ছা না করেও।  আপনি অসহায় হয়ে এগুলি করবেন কারণ আপনার নিজস্ব প্রকৃতি আপনাকে এই কাজটি করতে বাধ্য করবে এবং আপনি প্রতিরোধ করতে পারবেন না।

          প্রভু সমস্ত মানুষের হৃদয়ে বাস করেন এবং তাঁর শক্তির মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণ করেন;  সে তাদের এমনভাবে ঘুরিয়ে দেয় যেন তারা কোনও মেশিনে চাপানো ছিল।

         আপনার পুরো দেহ এবং প্রাণ দিয়ে আপনার সমস্ত জীবকে নিয়ে সেই মহান প্রভুর আশ্রয়ে যান into  তাঁর অনুগ্রহে আপনি চূড়ান্ত শান্তি এবং সর্বোচ্চ বাসস্থান লাভ করবেন।

          এইভাবে, আমি আপনাকে এই গোপন জ্ঞানটি বলেছি, যা সমস্ত গোপন বিষয়গুলির মধ্যে সবচেয়ে গোপনীয় বিষয়;  এবং যা সমস্ত জ্ঞানের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞান।

           এগুলি সম্পর্কে চিন্তা করুন, ওজন করুন এবং এটি খুব সাবধানতার সাথে বিবেচনা করুন, এ সম্পর্কে চিন্তা করুন এবং তারপরে আপনার ইচ্ছামত কাজ করুন।

            এখন আমার চূড়ান্ত গোপন শব্দগুলিও শুনুন, যা সবচেয়ে গোপন এবং রহস্য পূর্ণ।  কারণ আপনি আমার কাছে প্রিয়, আমি আপনাকে কেবল এটিই বলব যা আপনার পক্ষে ভাল।

            আমার উপর আপনার মন স্থির করুন।  আমার ভক্ত হন।  আমার জন্য কোরবানি।  আমাকে সালাম।  আমাকে পূজা করো.  এটি করে আপনি অবশ্যই আমার কাছে পৌঁছে যাবেন।  আমি আপনাকে এই প্রতিশ্রুতি কারণ আপনি আমার খুব প্রিয়।

          সমস্ত ক্রিয়া, সমস্ত কর্তব্য, সমস্ত ধারণা, সমস্ত মতামত এবং সমস্ত ধারণা ত্যাগ এবং ছেড়ে দিন।  সবকিছু ছেড়ে দিন, এবং কেবল আমার মধ্যে আশ্রয় নিন।  দুঃখ করো না.  আমি তোমাকে মুক্তি দেব;  আমি তোমাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি দেব।

          পার্থকে মনে রাখবেন, এই গোপন জ্ঞান অবশ্যই তাকে কখনই দেওয়া উচিত নয়, যিনি তপস্যা করেন নি, জীবনে কোন কৃপণতা করেন নি, যার কথা শোনার মতো বিশ্বাস নেই, যার প্রতি আমার বিশ্বাস ও বিশ্বাস নেই, বা যে আমাকে ঘৃণা করে।

           যে কেউ আমার ভক্তদের এই সর্বোচ্চ রহস্যের শিক্ষা দেয়, সে আমার প্রতি নির্ভেজাল ভক্তি প্রদর্শন করে এবং নিঃসন্দেহে তিনিই আমার কাছে পৌঁছে যাবেন।

            যে ব্যক্তি আমার কাজ করে তার চেয়ে এই পৃথিবীতে পুরুষদের মধ্যে আমার আর কেউ প্রিয় নয়, তার চেয়ে আমার চেয়ে প্রিয় আর কেউ থাকবে না।

          আর যে কেউ আমাদের এই পবিত্র ও খাঁটি কথোপকথন অধ্যয়ন করে, যে কেউ এটি পড়বে, আমি বুঝতে পারি যে সে জ্ঞানের ত্যাগের সাথে আমার উপাসনা করে।

          এবং যে ব্যক্তি আমাদের এই পবিত্র ও নির্ভেজাল কথোপকথনটি সম্পূর্ণ বিশ্বাস, নিষ্ঠা ও বিশ্বাসের সাথে এবং ঘৃণা ছাড়াই শুনবে, সেও মুক্তি পেয়েছে এবং খাঁটি আত্মার মানুষের সুখী অঞ্চলে পৌঁছে যায়।

          পার্থ, আপনি কি পুরো একাগ্রতা এবং মনোযোগ দিয়ে এই সব শুনেছেন?  আপনার সমস্ত সন্দেহ, আপনার অজ্ঞতা এবং আপনার মায়া কি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে?

          অর্জুন জবাব দিলেন: প্রভু, আপনি যা বলেছেন তা আমি অত্যন্ত মনোযোগ ও একাগ্রতার সাথে শুনেছি।  আপনার অনুগ্রহ এবং দয়া সহকারে এবং সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে, আমার সমস্ত সন্দেহ দূর করা হয়েছে;  আমার অজ্ঞতা এবং আমার মায়া ধ্বংস হয়ে গেছে।  আমার স্মৃতিও আমার কাছে ফিরে এসেছে এবং আমি শান্ত এবং রচিত হয়েছি।  আমি আমার দায়িত্ব পালন করব এবং এই যুদ্ধ করব।


              এখানে ভগবান কৃষ্ণ এবং যুবরাজ অর্জুনের মধ্যে সংলাপ শেষ হয়েছে।


          এর পরে, সঞ্জয় ধৃতরাষ্ট্রকে বলেছেন: মহাশয়, এইভাবে, আমি দু'জন মহান কৃষ্ণ এবং অর্জুনের মধ্যে এই সবচেয়ে দুর্দান্ত সংলাপ শুনেছি, যা শুনে আমার চুল শেষ।  Yasষি ব্যাসের কৃপায় আমি এই গোপন যোগটি যোগব্যায়াম ভগবান কৃষ্ণ নিজেই শুনতে পেলাম।

         স্যার, কেশ্বা ও অর্জুনের মধ্যে এই সবচেয়ে দুর্দান্ত এবং সবচেয়ে পবিত্র কথোপকথনটিকে বারবার মনে করে আমি পরিতোষে নিমজ্জিত।  এবং যখনই আমি প্রভু হরির সেই চূড়ান্ত এবং বিস্ময়কর রূপটি স্মরণ করি, তখন আমি একেবারে বিস্মিত ও রোমাঞ্চিত হয়েছি through

         যেখানেই যোগের প্রভু, যোগেশ্বর কৃষ্ণ এবং যেখানেই ধনুকটি চালিত তীরন্দাজ অর্জুন সেখানে সেখানে সর্বদা গৌরব, বিজয়, মঙ্গল, দৃ sound় নীতি ও ধার্মিকতা থাকবে।  এটি আমার দৃ firm় এবং দৃ strong় বিশ্বাস।



                                                             অষ্টাদশ অধ্যায় শেষ


                                                               ভগবদ গীতার সমাপ্তি


                                                     ওম শান্তি শান্তি ওএম

গীতার অধ্যায় ১৭

অধ্যায় ১৭
          এই অধ্যায়ে ভগবান কৃষ্ণ প্রকৃতির তিনটি বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে তিন ধরণের বিশ্বাস, তিন ধরণের খাদ্য, তিন ধরণের তপস্যা এবং তপস্যা এবং তিন ধরণের দান সম্পর্কে বলেছেন।  তিনি আম, তাত এবং শ্যাট এই তিনটি শব্দ সম্পর্কেও বলেছেন


                                                                     অধ্যায়

              অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করেছেন: প্রভু, এই সমস্ত লোকেরা যারা ধর্মগ্রন্থের মূল নীতি অনুসরণ করে না, তবুও তারা পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে ত্যাগ স্বীকার করে, তাদের অবস্থা কী?  তাদের বিশ্বাস কি সাত্ত্বিক, রাজসিক নাকি তামাসিক?

              ভগবান কৃষ্ণ ব্যাখ্যা করেছেন: শোনো পার্থ, প্রাণীদের বিশ্বাস তাদের প্রকৃতি, সাত্ত্বিক, রাজসিক বা তামসিক অনুসারে according  ব্যক্তি যেমন হয়, তেমনি তাঁর বিশ্বাসও।  এই বিস্তারিত শুনুন।

              সাত্ত্বিক লোকেরা Godশ্বরের বিভিন্ন রূপের উপাসনা করে, রাজসিক শক্তি ও wealthশ্বর্যের দেবতাদের উপাসনা করে, আর তামাসিক প্রেত ও প্রেতদের উপাসনা করে।

              লোকেরা যাঁকে বাধা দেয় এবং প্রদর্শন করে, যারা অহঙ্কার ও লালসা দ্বারা পরিপূর্ণ, এবং যারা কেবল জিনিস অর্জনের আকাঙ্ক্ষায় প্ররোচিত এবং গুরুতর শাস্তি দ্বারা অনুমোদিত নয় এমন তপস্যা করে, এই ধরনের লোকরা তাদের বোকামির কারণে,  কেবল তাদের নিজস্ব উপাদানগুলির উপাদান সংগ্রহকেই সমস্যা করে না, তারা আমার মধ্যেও বাস করে in  এই জাতীয় লোকদেরকে রাক্ষসী প্রকৃতির বলে বিবেচনা করুন।

              প্রত্যেক ব্যক্তি যে খাবার খায় সেগুলিও তিন প্রকারের: সাত্ত্বিক, রাজসিক বা তামসিক, যেমন ত্যাগ, কৃপণতা ও দানশীলতা।  আমি এখন তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত বলব।

               যে খাবারগুলি জীবনকাল বাড়ায়, জীবনশক্তি, স্বাস্থ্য, পরমানন্দ, ভালবাসা, স্নেহ এবং উত্সাহ, এই জাতীয় খাবারগুলি সাত্ত্বিক এবং সেগুলি সাত্ত্বিক স্বভাবের কাছে প্রিয়।

              যে খাবারগুলি তিক্ত, তীক্ষ্ণ, তীক্ষ্ণ, নোনতা, খুব গরম, মশলাদার এবং শুকনো, সেগুলি যা জ্বালাতন করে এবং ফলে দুঃখ, শোক এবং অসুস্থতার সৃষ্টি হয়, এ জাতীয় খাবারগুলি রাজসিক এবং এগুলি রাজসিক স্বভাবের দ্বারা পছন্দ হয়।
         
               যে খাবারগুলি অনিবার্য, সেগুলি নষ্ট হয়, পচা হয়, যেগুলি বাসি, স্বাদহীন এবং অপরিষ্কার, এই জাতীয় খাবারগুলি তামাসিক এবং সেগুলি তামাসিক প্রকৃতির কাছে খুব প্রিয়।

               এখন আমি বলি, কৃপণতা এবং দাতব্য সম্পর্কে বলব।

              কুরবানি যা ধর্মগ্রন্থের মূল অনুসারে রয়েছে;  এটি তাদের দ্বারা সম্পাদিত হয় যারা কোনও পুরষ্কারের প্রত্যাশা করে না, এবং যা এই বিশ্বাসের সাথে সম্পন্ন করা হয় যে ত্যাগ স্বীকার করা একটি নিয়মিত ও ন্যায়সঙ্গত কর্তব্য, এই জাতীয় ত্যাগটি সাত্ত্বিক ik

               ত্যাগটি পুরষ্কারের প্রত্যাশায় বা অনুষ্ঠানের খাতিরে সম্পাদিত হয়েছিল, এই জাতীয় ত্যাগটি রাজসিক।

              এবং যে ত্যাগটি বিশ্বাস ব্যতীত এবং বিধিবিধান অনুসরণ না করে করা হয়, যেখানে কোনও মন্ত্র পাঠ করা হয় না, যেখানে কোনও খাবার বিতরণ করা হয় না, এবং যেখানে সভাপতির পুরোহিতকে অর্থ প্রদান করা হয় না, তেমনি কোরবানি হ'ল তামাসিক।

           দেবগণের উপাসনা, গুরুদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান, শিক্ষকদের, ব্রহ্মের সন্ধানকারীদের এবং অন্যান্য জ্ঞানীদের জন্য;  বিশুদ্ধতা, সরলতা, ব্রহ্মচারিতা ও অহিংসতা;  এটি শরীরের তপস্যা, দেহের তপস্যা হিসাবে পরিচিত।

            মনের শান্তি, ভদ্রতা, নীরবতা, প্রকৃতির বিশুদ্ধতা, স্ব-নিয়ন্ত্রণ এবং মনের নিয়ন্ত্রণ, এটি মনের তীক্ষ্ণতা, মনের তপস্যা হিসাবে পরিচিত।

            সত্য, প্রেমময় এবং প্রশংসনীয় কথা বলা এবং অন্যকে আঘাত করা বা অপমান করা এমন কথা না বলা বা অন্যদের অপছন্দ করা শব্দ এবং ধর্মগ্রন্থের নিয়মিত পড়া ও অধ্যয়ন, এগুলি বক্তৃতার কঠোরতা, কথার তপস্যা হিসাবে পরিচিত।

            যদি এই তিনটি তপস্যা, এই তিনটি তপস্যা, তা হ'ল: দেহের কৃপণতা, মনের কৃপণতা এবং বক্তৃতার কৌতূহল, যদি এই তিনটিই সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে করা হয় এবং কোনও পুরষ্কারের প্রত্যাশা ছাড়াই সুষম ব্যক্তির দ্বারা হয়  মন, তাহলে সেই তপস্যা, সেই তপস্যাটি সাত্ত্বিক, এটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘস্থায়ী।

          যদি তপস্যা বা তপস্যাটি সম্মান, স্বীকৃতি এবং খ্যাতি অর্জনের জন্য করা হয় বা প্রদর্শনের জন্য করা হয় তবে এ জাতীয় তপস্যা, এ জাতীয় তপস্যা রাজসিক, এটি অস্থির এবং অস্থায়ী এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

         এবং যদি তপস্যা বা তপস্যাটি খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে, মূর্খভাবে, নিজেকে একটি বিরাট সমস্যায় ফেলে এবং যা অন্যের ক্ষতি করার জন্য করা হয়, তেমনি তপস্যা তমাসিক, অন্ধকার এবং অপরিষ্কার।

           যে ব্যক্তির কাছ থেকে প্রত্যাবর্তনের কোন প্রত্যাশা নেই তাকে দান করা সেই দানটি হৃদয় থেকে এই অনুভূতি সহকারে দেওয়া হয় যে দাতব্য দান একটি নিয়মিত এবং সীমাবদ্ধ কর্তব্য;  এবং দাতব্য যোগ্য ব্যক্তিকে উপযুক্ত সময়ে, যথাযথ সময়ে এবং উপযুক্ত স্থানে প্রদান করা হয়, যেমন দাতব্য সাত্ত্বিক, এটি খাঁটি এবং আদিম।

         যে দাতব্য প্রত্যাশার সাথে বা ভবিষ্যতের লাভের প্রত্যাশায় দেওয়া হয় এবং যা প্রদান করা ঝামেলা ও দুর্দশার কারণ হয়, এ জাতীয় দাতব্যতা রাজসিক, এটি আবেগপূর্ণ এবং দোষযুক্ত।

          অনুগ্রহযোগ্য ব্যক্তিকে প্রদত্ত দাতব্য সংস্থাটি অনুপযুক্ত সময়ে, অনুপযুক্ত স্থানে, খুব চিন্তাভাবনা না করে এবং অবজ্ঞার সাথে এই জাতীয় দাতব্য সংস্থা তামাসিক, এটি অপবিত্র এবং অকেজো।

          এইউএম, ট্যাট, স্যাট, এই তিনটি শব্দ ব্রহ্মের প্রতীক, পরম বোঝা যায়।  অনাদিকাল থেকে বেদ, ব্রহ্মের সন্ধানকারী এবং ত্যাগের দ্বারা এগুলি অর্পিত হয়।

            সুতরাং, ব্রহ্মের জ্ঞানীরা সর্বদা শাস্ত্রে বর্ণিত ত্যাগ, তপস্যা ও দান-খয়রাতের কর্মসূচী এএম উচ্চারণ করে শুরু করেছিলেন।

          পুরষ্কারের প্রত্যাশা ছাড়াই, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ছাড়াই, লোকেরা ট্যাট শব্দটি উচ্চারণ করে ত্যাগ, তপস্যা ও দানশীলতার বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন ও শেষ করেছিল।

         স্যাট শব্দটি সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, এবং এটি সত্য, শুভেচ্ছার এবং কল্যাণের জন্য এবং খাঁটি, কর্তৃত্বমূলক এবং অসামান্য কাজ ও কর্মের জন্য ব্যবহৃত হয়।

          দৃ firm়, দৃ sacrifice় এবং ত্যাগ, তাত্পর্য এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানে অবিচল, তাকে স্যাটও বলা হয়, এবং একইভাবে, এই যে কোনও ক্রিয়াকলাপ এবং Godশ্বরের পক্ষে যে কোনও ক্রিয়াকলাপ করা হয়, তাকে স্যাটও বলা হয়।

        তবে বিশ্বাস ব্যতীত যে কোন ত্যাগ, বিশ্বাস ব্যতিরেকে কোন তপস্যা বা তপস্যা করা, বিশ্বাস ব্যতীত যে কোন ক্রিয়াকলাপ বা কর্ম, বিশ্বাস ব্যতীত কোন দান;  আসলে এই সমস্ত, এবং আরও কিছু, বিশ্বাস ছাড়াই করা হয়েছে, এগুলিকে বলা হয় আসাত, অনার্থ্র।  এবং অসাত, অনত্রুথ এই জীবনে, এই পৃথিবীতে, পরের জগতে বা that বিষয়টির জন্য, অন্য কোনও জগতে মোটেই কোনও লাভ দেয় না।


                                                          সপ্তদশ অধ্যায়ের সমাপ্তি


                                                   ওম শান্তি শান্তি ওএম

গীতার অধ্যায় ১৬

অধ্যায় ১৬

                  এই অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ divineশ্বরিক, ভাল ও পুণ্যযুক্ত বৈশিষ্ট্য এবং রাক্ষসী, দুষ্কর্মী ও মন্দ গুণাবলী বর্ণনা করেছেন;  এবং এই গুণাবলী ফলাফল;  তিনি পৈশাচিক বৈশিষ্ট্যগুলি বিশদে বর্ণনা করতে চলেছেন।  তিনি জাহান্নামের তিনটি দরজা সম্পর্কে কথা বলেছেন: ইচ্ছা, ক্রোধ এবং লোভ এবং আমাদের যে কোনও মূল্যে এড়াতে হবে।  তিনি আরও বলেছিলেন যে আমাদের দায়িত্ব নির্ধারণ করার জন্য, আমাদের কী করা উচিত, এবং আমাদের কী করা উচিত নয় তা নির্ধারণ করার জন্য আমাদের অবশ্যই সবসময় শাস্ত্রের কর্তৃত্বের উপর নির্ভর করতে হবে।


                                                                              অধ্যায়

              শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন: শোনো পার্থ, এই পৃথিবীতে দুই প্রকারের প্রাণীর জন্ম হয়;  যাঁরা ভাল ও গুণী গুণের অধিকারী, divineশী প্রকৃতিযুক্ত এবং মন্দ ও দুষ্ট গুণের অধিকারী, রাক্ষস প্রকৃতির।

              Divineশী স্বভাবের গুণাবলী হ'ল নির্ভীকতা, মনের বিশুদ্ধতা, কর্মের যোগের ভারসাম্যপূর্ণ প্রয়োগ এবং জ্ঞান, দান, আত্মনিয়ন্ত্রণ, ত্যাগ সম্পাদন, ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়ন, কঠোরতা এবং সততা, অহিংসা, সত্য, অনুপস্থিতি  ক্রোধ, ত্যাগ, শান্তি, অন্যের মধ্যে ত্রুটি খুঁজে না পাওয়া, মমত্ববোধ, লোভের অনুপস্থিতি, স্বভাবের মাধুরী, কোমলতা, সম্মান, অটলতা, ক্ষমা, প্রগা ,়তা, ধৈর্য এবং ধৈর্য, ​​বিশুদ্ধতা এবং ঘৃণা, হিংসা এবং অহংকারের অনুপস্থিতি।

            রাক্ষস প্রকৃতির মানুষগুলিতে, অহঙ্কারী, অহঙ্কার, অত্যধিক অহংকার, কঠোরতা, নিষ্ঠুরতা এবং ভণ্ডামির বৈশিষ্ট্যগুলি বিশেষত দেখা যায় এবং তারা আধিপত্য বিস্তার করে।

            Divineশিক গুণগুলি পরিত্রাণের দিকে পরিচালিত করে, আর পৈশাচিক গুণগুলি দাসত্বের দিকে পরিচালিত করে।  পার্থ, আপনার উদ্বেগ বা ভয় দরকার নেই কারণ আপনি divineশিক গুণাবলীতে জন্মগ্রহণ করেছেন।

          Divineশিক গুণাবলী বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে;  এখন শয়তান বৈশিষ্ট্যযুক্ত লোকদের সম্পর্কে শুনুন।

             পৈশাচিক গুণাবলী সম্পন্ন লোকেরা না কর্মের পথ জানেন না ত্যাগের পথও জানেন।  তাদের মধ্যে কোন শুদ্ধতা নেই, কোন ভাল আচরণ নেই এবং তাদের মধ্যে সত্যও পাওয়া যায় না।

             তারা বিশ্বাস করে যে পৃথিবী মিথ্যা, এর কোনও ভিত্তি নেই এবং এর কোন Godশ্বর নেই।  তারা বলে যে পৃথিবী Godশ্বরের কাছ থেকে উদ্ভূত হয় নি, কেবল লালসা ও আকাঙ্ক্ষার ফলস্বরূপ।

              দৃ point়তার সাথে এই দৃষ্টিকোণটি অবলম্বন করুন, নিম্ন বুদ্ধিমান এবং অল্প বুদ্ধিমান এই লোকেরা, বিশ্বের ধ্বংস আনার জন্য সর্বদা সহিংসতা করতে প্রস্তুত থাকে।

             অদম্য কামনা-বাসনা এবং আকাঙ্ক্ষার কবলে, এবং অহঙ্কার, ভণ্ডামি, অহঙ্কার এবং অত্যধিক অহঙ্কার পূর্ণ বোকামির কারণে এবং মিথ্যা দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করে তারা অশুচি সমাধান ও দুষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে।

             তারা অগণিত উদ্বেগের মধ্যে ভারাক্রান্ত থাকে, যা উদ্বেগগুলি কেবল তাদের মৃত্যুর সাথেই শেষ হবে।  তারা তাদের আকাঙ্ক্ষার পরিপূর্ণতাটিকে সর্বোচ্চ লক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করে এটিকে সবকিছু হিসাবে বিবেচনা করে এবং মনে করে যে এর বাইরে আর কিছু নেই।

              ক্রোধ ও অভিলাষের কবলে, তাদের আকাঙ্ক্ষা পরিপূরণের জন্য এবং সম্পদ ও সম্পত্তি জড়ো করার জন্য তারা শত ইচ্ছার জালে জড়িয়ে পড়ে তারা ভুল ও বেআইনী উপায় অবলম্বন করে।

            রাক্ষসী প্রকৃতির ব্যক্তি মনে করেন: “আমি আজ এটি অর্জন করেছি, এই ইচ্ছাটিও আমি আজ পূরণ করব।  এটি আজ আমার, এবং ভবিষ্যতে আরও সম্পদ এবং সম্পত্তি আমার হবে।  এই শত্রুটিকে আজ আমার দ্বারা হত্যা করা হয়েছে, এবং অন্যান্য শত্রুরাও আমার দ্বারা হত্যা করা হবে।  আমি ধনী এবং আমি উচ্চ বংশোদ্ভূত।  কে আছে আমার সমান?  আমি কুরবানি করব, আমি সদকা করব, আমি আনন্দ উপভোগ করব ”অজ্ঞতা ও বিভ্রান্তির কারণে তারা এ জাতীয় কথা বলে।

          তাদের চিন্তাভাবনাগুলির কারণে, অজ্ঞতা এবং বোকামির জালে আটকে এবং কেবল তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলি পূর্ণ করার দিকে মনোনিবেশ করার কারণে তারা মূর্খ, অশুচি নরকের মধ্যে পড়ে।

           অহংকার, শক্তি, অহংকার, লালসা ও ক্রোধের কবলে এই ঘৃণ্য লোকেরা তাদের পাশাপাশি অন্যদের মধ্যে থাকতেও আমাকে তুচ্ছ করে।

           এই অযৌক্তিক, নিষ্ঠুর, নিষ্ঠুর এবং ঘৃণ্য কাজকর্মের ঘৃণ্য কাজগুলি, আমি অস্তিত্বের নীচের স্তরে জন্মের সাথে মিশে থাকি এবং এগুলি জন্ম ও মৃত্যুর চক্রে রাখি।

            অনিষ্ট, রাক্ষসী জন্মে আটকে থাকা, এই বোকা লোকেরা, এমনকি অন্তহীন জন্ম ও মৃত্যুর পরেও, আমার কাছে পৌঁছায় না, তবে আরও গভীর হয়ে জাহান্নামের নিম্ন অঞ্চলে পড়ে যায়।

              তিনটি দরজা রয়েছে যা আত্মাকে নরকের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়: ইচ্ছা, ক্রোধ এবং লোভ।  যে কোনও মূল্যে এগুলি এড়ানো উচিত।

              যে কেউ এই তিনটি প্রবেশদ্বার এড়াতে সক্ষম, যে সেগুলির থেকে পরিষ্কারভাবে চালিত হতে পারে, সে ইচ্ছা, ক্রোধ এবং লোভ থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং তারপরে সে কেবল সেই কাজ করে যা আত্মার পক্ষে মঙ্গলজনক এবং কল্যাণকর these  মোক্ষ লাভ করে।

             কিন্তু যে শিক্ষা, ধর্মগ্রন্থ এবং ধর্মগ্রন্থের বিধিগুলিকে প্রত্যাখ্যান করে এবং কেবল তার আকাঙ্ক্ষা অনুসারে কাজ করে, সে না উপলব্ধি পায়, না সে সুখ পায় না, না সে মুক্তি লাভ করে।

             সুতরাং, পার্থ, যা করা উচিত এবং কী করা উচিত নয় তা নির্ধারণ করার জন্য, শাস্ত্রের কর্তৃত্বের উপর সর্বদা নির্ভর করুন এবং স্বীকার করুন এবং আপনার সমস্ত কর্ম করুন, আপনার সমস্ত কাজ করুন এবং আপনার সমস্ত দায়িত্ব পালন করুন  শাস্ত্রে বিধি বিধান।


                                                      ষোলতম অধ্যায়ের সমাপ্তি


                                                 ওম শান্তি শান্তি ওএম

গীতার অধ্যায় ১৫

অধ্যায় ১৫

                 এই অধ্যায়ে ভগবান কৃষ্ণ একটি ডুমুর গাছের আকারে মানব জীবনের বর্ণনা দিয়েছেন।  Godশ্বর এবং সত্তা বর্ণনা করা হয়।  প্রভু শ্বর এই বিশ্বের জীবন।  তিনি সকলের পরমেশ্বর।
                                                                             অধ্যায়

                  শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন: পার্থ, মানুষের জীবন অবিনাশী ডুমুর গাছের মতো।  জীবনবৃক্ষের শিকড়গুলি উপরের দিকে এবং এর শাখা নীচের দিকে থাকে।  এর পাতাগুলি হ'ল বেদ এবং যিনি এই জীবনের এই গাছের প্রকৃত রূপটি জানেন, তিনি বেদের জ্ঞানী এবং তিনি জীবনের রহস্য এবং রহস্যগুলি জানতে পারেন।

                  এই জীবনের গাছের ডালগুলি উপরের এবং নীচে বিস্তৃত এবং প্রকৃতির তিনটি গুণ দ্বারা এগুলি পুষ্ট হয়।  ইন্দ্রিয়ের অবজেক্টগুলি হ'ল এর কুঁড়ি এবং এই গাছের শিকড় নীচে ছড়িয়ে পড়েছে, পুরুষদের জগতে সমস্ত দিকে।  এই শিকড়গুলি এমন ক্রিয়া যা মানবকে দৃ to়ভাবে বিশ্বের সাথে আবদ্ধ করে, যার ফলস্বরূপ;  তার বার বার জন্ম নিতে হবে।

                  এই গাছের প্রকৃত রূপটি পুরুষদের এই পৃথিবীতে দেখা যায় না;  না এর উত্স, না শেষ, না এখনও এর উত্স দেখা যায় না।

                   জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পেতে এই শক্তিশালী শিকড় গাছটি কাটা দরকার।  বিচ্ছিন্নতার দৃ ax় কুঠার দিয়ে, জীবনের এই গাছটিকে তার মূল থেকে কাটা উচিত, এবং তারপরে সেই অনন্ত পথের সন্ধান করা উচিত, যাঁর দ্বারা জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং ফিরে না আসে going  দুনিয়া।

                   একজনকে সেই পরমাত্মার, এই পৃথিবীর আত্মার আশ্রয় নেওয়া উচিত, যা থেকে জীবনের প্রাচীন ধারাগুলি উদ্ভূত হয়েছিল এবং যা এই পুরো সৃষ্টির উত্স এবং উত্স।

                   সেই লোকেরা যারা মনের অহংকার ও মায়া কাটিয়ে উঠেছে, যারা এই দু'টি থেকে নিজেকে মুক্তি দিয়েছে, যারা সংযুক্তির কলুষকে বশীভূত করেছে, যারা সর্বদা তাদের আত্মায় থাকে, তাদের আত্মায় থাকে, যারা দ্বৈততা, বিভ্রান্তি এবং বুঝতে পেরেছে  দুঃখ এবং সুখ সম্পর্কে সন্দেহ এবং এগুলি কাটিয়ে উঠেছে এবং যাদের সমস্ত আকাঙ্ক্ষার অবসান ঘটেছে, তারা সেই অনন্ত অবস্থানে পৌঁছেছে যা সূর্য, চাঁদ এবং আগুনের চেয়ে অনেক উজ্জ্বল;  কোন অবস্থায় একবার পৌঁছেছে, এই পৃথিবীতে আর ফিরে আসতে হবে না।  এটি আমার সুপ্রিম স্টেট।  এটাই আমার সুপ্রিম আবাস।

                    আমার অনর্থক অস্তিত্বের একটি অতি ক্ষুদ্র অংশটি সর্বদা জীবনে ফিরে আসে এবং এই পৃথিবীতে প্রাণ ফিরে আসে, এটি পাঁচটি ইন্দ্রিয় এবং ষষ্ঠ মনকে আকর্ষণ করে যা প্রকৃতিতে অবস্থিত।

                  যখন প্রভু কোনও দেহ গ্রহণ করেন, বা যখন তিনি দেহ ত্যাগ করেন, তখন তিনি ইন্দ্রিয় ও মনকে তাঁর সাথে গ্রহণ করেন, যেমন বাতাস তাদের স্থানগুলি থেকে সুগন্ধি এবং সুবাসকে সরিয়ে নিয়ে যায়।

                  কান, নাক, চোখ, ত্বক এবং জিহ্বার পাঁচটি জ্ঞান ইন্দ্রিয়ের পাশাপাশি মনকে ব্যবহার করে তিনি ইন্দ্রিয়গুলির জিনিসগুলি উপভোগ করেন।

                  আত্মা যখন প্রভুর আকারে কোনও দেহ ছেড়ে চলে যায়, বা যখন এটিতে থাকে বা যখন ইন্দ্রিয়ের সাথে এবং প্রকৃতির গুণাবলীর সংস্পর্শে আসে তখন তা তাদের উপভোগ করে, তারপরে এই সমস্ত সময় বিভ্রান্ত হয়  এবং অজ্ঞেরা, নিজের মধ্যে থাকা ভগবান আত্মাকে দেখতে পাচ্ছেন না, তবে যাঁরা জ্ঞানের চোখ খুলেছেন, তাঁরা একাই তাঁকে দেখতে সক্ষম।

                 কেবলমাত্র যোগী যারা যোগের চর্চায় পুরোপুরি নিযুক্ত এবং যারা যোগ সাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা পরম আত্মাকে নিজের মধ্যেই দেখতে পেয়েছেন তবে অজ্ঞ এবং অনিজ্ঞানীরা চেষ্টা করেও চেষ্টা করেছেন, পরমকে দেখতে পাচ্ছেন না  আত্মা নিজেদের মধ্যে

                  সূর্যের আলো যা পৃথিবীকে আলোকিত করে এবং উষ্ণ করে তোলে কেবল আমার আলো যেমন চাঁদের আলো এবং উজ্জ্বলতা।

                 মানুষের জগতে বিস্তৃত, আমার জীবনকে ক্ষমতা দিয়ে আমি সমস্ত প্রাণকে জীবন দান করি, এবং পুষ্টিকর হয়ে উঠি, চাঁদ দিচ্ছি, আমি সমস্ত গাছপালা এবং bsষধিগুলিকে পুষ্ট করি।

                আগত এবং বহির্গামী শ্বাসের সাথে মিশ্রিত করা, হজমের আগুনে পরিণত হয়ে আমি সমস্ত ধরণের খাবার হজম করতে সহায়তা করি।

               আমি সকলের অন্তরে বাস করি  আমার কাছ থেকে স্মৃতি, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা আসে।  আমি সন্দেহগুলিও ধ্বংস করি এবং ঘাটতি দূর করি।

               সত্য সত্য, আমি বেদ মাধ্যমে পরিচিত হয় যে এক।  আমি বেদ জ্ঞান, এবং জ্ঞান।  আমি বেদের রচয়িতা, এবং আমিই বেদের জ্ঞানী।

             এই পৃথিবীতে দুই ধরণের প্রাণীর জন্ম হয়, সেই বিনাশী, যার পরিণাম অবশ্যই আসবে এবং অবিনাশী, যার পরিণতি কখনই আসে না।  দৈহিক জগতের সমস্ত প্রাণী ধ্বংসযোগ্য, আর পরিবর্তনহীন আত্মা অবিনাশী।

           কিন্তু এই উভয় নাশী ও অবিনাশী উভয়ের বাইরে, পরম আত্মা নামে আরও একটি পরমাত্মা।  সেই পরম আত্মা পরমেশ্বর হিসাবে তিন জগতকে পরিবেশন করে এবং তাদের লালন-পোষণও করে।  আমি সেই পরম আত্মা।

             যেহেতু আমি বিনাশযোগ্য এবং অবিনশ্বর উভয়কেই ছাড়িয়েছি, কারণ আমি নষ্ট ও অবিনাশী উভয়ের amর্ধ্বে, আমি সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।  অতএব, এই পৃথিবীতে, আমি পুরুষোত্তম, সর্বোচ্চ ব্যক্তি হিসাবে স্বীকৃত।

            যে কেউ, নিঃসন্দেহে আমাকে পুরুষোত্তম হিসাবে সর্বোচ্চ ব্যক্তি হিসাবে জানেন, তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি সমস্ত কিছু জানেন এবং তিনি আমার সমগ্র দেহ এবং সমস্ত প্রাণ দিয়ে আমার উপাসনা করেন।

              পার্থ, আমি আপনাকে এই গোপন জ্ঞান এবং প্রজ্ঞাটি বলেছি, কোন ব্যক্তি জ্ঞানী হয়ে ওঠে, তার সমস্ত কর্তব্য এবং কর্ম সমাপ্ত হয়, সে অমরত্ব লাভ করে এবং পরিত্রাণ লাভ করে, তিনি পরম স্থিতি লাভ করেন।
                                                          পঞ্চদশ অধ্যায়ের সমাপ্তি
                                                       ওম শান্তি শান্তি ওএম

গীতার অধ্যায় ১৪

অধ্যায় ১৪


                এই অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে প্রকৃতির তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলেছেন: সত্ত্বগুণ, আলোক ও মঙ্গল, রজনোগুন, অগ্নি এবং আবেগ, এবং তমোগুন, অন্ধকার এবং মন্দ, এবং এগুলি থেকে কী ফলাফল হয় তা সম্পর্কে।  তিনি যারা গুণাবলী অতিক্রম করেছেন তাদের গুণাবলী সম্পর্কেও বলেছেন, যারা তিনটি গুণাবলীর riseর্ধ্বে উঠেছেন।


                                                                               অধ্যায়

               ভগবান কৃষ্ণ বলেছেন: পার্থ, আমি আপনাকে সেই জ্ঞান সম্পর্কে বলব যা পরম জ্ঞান, কোন knowingষি এবং উপলব্ধি করে এই জগতের উপরে উঠেছিল এবং পরিত্রাণ লাভ করেছিল, পরমেশ্বর লাভ করেছিল।

               এই জ্ঞানের সমর্থন নিয়ে এবং আমার মতো হয়ে ওঠা, তারা না সৃষ্টির শুরুতে জন্মগ্রহণ করে, না সৃষ্টি যখন শেষ হয়, যখন দ্রবীভূত হয় তখন তারা মারা যায় না।

               গ্রেট প্রকৃতি হ'ল আমার গর্ভ, যার মধ্যে আমি এমন বীজ ফেলে দিয়েছি যার দ্বারা সমস্ত প্রাণী এবং জিনিস জন্মগ্রহণ করে, যার মাধ্যমে সমস্ত সৃষ্টি সৃজিত হয়।

               সর্বদা এবং যেখানেই হোক না কেন, যে কোনও গর্ভে এবং যে কোনও গর্ভে যে কোনও জন্ম হয়, মহান প্রকৃতিই তাদের উত্স গর্ভ, এবং আমিই বীজ দেব।

              সত্ত্বগুণ, আলোক ও মঙ্গল, রজনোগুন, অগ্নি এবং আবেগ এবং তমোগুনা, অন্ধকার ও মন্দ;  প্রকৃতির দ্বারা জন্মগ্রহণ করা এই তিনটি বৈশিষ্ট্য এবং এগুলিই অনন্ত দেহকে দেহের সাথে আবদ্ধ করে।

              এর মধ্যে সত্ত্বগুণ খাঁটি এবং নির্দোষ বা দাগহীন।  এটি হালকা উত্পাদন করে এবং পাপী ক্রিয়াকলাপ থেকে একজনকে মুক্তি দেয়।  এমনকি জ্ঞান অহংকার ও সুখের গর্বের কারণেও সত্ত্বগুণ বাঁধে।

             রাজোগুনা আবেগ, বাসনা এবং সংযুক্তিকে জন্ম দেয় to  এটি কর্মের মাধ্যমে এবং কর্মের ফল এবং পুরষ্কারের জন্য আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে আবদ্ধ হয়।

             তমোগুনা অন্ধকার ও অজ্ঞতার ফলস্বরূপ এবং একটিকে বিভ্রান্তির মধ্যে রাখে।  এটি অসাবধানতা, অলসতা এবং ঘুমের সাথে আবদ্ধ।

            সত্ত্বগুণ একজনকে পরমানন্দ ও সুখের সাথে জড়িত করে, আবেগ ও ক্রিয়ায় রজনোগুন এবং তমোগুন জ্ঞান, বিভ্রান্তি এবং ফলশ্রুতি ও অলসতার ফলে।

            সময়ে সময়ে, যুগে যুগে, তিনটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটির প্রাধান্য থাকে এবং অন্যগুলি দুর্বল হয়ে যায়।

             রাজগুণ ও তমোগুনকে দুর্বল করে সত্ত্বগুণকে প্রাধান্য দেয়, রাজোগুন সত্ত্বগুণ ও তমোগুনকে দুর্বল করে রাখে এবং একইভাবে তমোগুন সত্ত্বগুণ ও রাজোগুনকে দুর্বল করে রাখে।

           যখন জ্ঞানের আলো, যখন পুণ্য, যখন বৈষম্যের শক্তি, এবং বিবেকবোধ যখন কোনও ব্যক্তির সমগ্র সত্ত্বা ও ইন্দ্রিয়কে বিস্তৃত করে তোলে, তখন বুঝতে হবে সাত্বগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এটি প্রাধান্য পেয়েছে।

            লোভ যখন, যখন ক্রিয়াকলাপ, যখন ইচ্ছা, অস্থিরতা এবং অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা কোনও ব্যক্তির মধ্যে উপস্থিত হয়, তখন বুঝতে হবে যে রাজোগুন বাড়ছে এবং এটি আধিপত্য বিস্তার করে।

              যখন আলোর অভাব হয়, যখন কোনও ব্যক্তির মধ্যে মন্দ, অযত্নতা এবং মায়া দেখা দিতে শুরু করে, তখন এটি বুঝতে হবে যে তমোগুনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এটি প্রাধান্য পেয়েছে।

              শোনো পার্থ, দেহের মৃত্যুর পরে আত্মা কোথায় যাবে তার উপর নির্ভর করে তাঁর মৃত্যুর সময় ব্যক্তির মধ্যে প্রকৃতির প্রভাব রয়েছে।

              সত্ত্বগুণে কর্তৃত্ব হলে মৃত্যু ঘটে;  তার আত্মা পরমকে জানার বিশুদ্ধ জগতে যাবে, সেখানেই এটি জন্মগ্রহণ করবে।

              যদি রাজোগুনের আধিপত্য ঘটে তখন মৃত্যু ঘটে, তবে তার আত্মা কর্মের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ লোকদের মধ্যে জন্মগ্রহণ করবে এবং তমোগুনের আধিপত্যের পরে যদি মৃত্যু ঘটে তবে তার আত্মা অজ্ঞ ও বোকা লোকদের নিম্ন স্তরে জন্মগ্রহণ করবে।

             সাত্ত্বিক কর্মের ফল উত্তম ও শুদ্ধ;  রাজসিক কর্মের ফল হ'ল দুঃখ, অন্যদিকে তামাসিক কর্মের ফল অজ্ঞতা এবং নিস্তেজতা।

             সত্যগুণ থেকে জ্ঞান জন্মে, রজনোগুন থেকে লোভ আসে, এবং তমোগুন থেকে আসে অজ্ঞতা, অসাবধানতা ও বোকামি।

             যারা সত্ত্বগুণে অবস্থিত তারা উদ্ধার ও পরমেশনের দিকে upর্ধ্বমুখী হন।  রাজোগুনার লোকেরা পৃথিবীতেই মাঝখানে থাকে এবং তমোগুনার লোকেরা সর্বদা অনিষ্ট ও ঘৃণ্য কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে এবং জাহান্নামে পড়ে যায়।

             যখন কেউ বুঝতে পারে যে প্রকৃতির এই তিনটি গুণাবলী বাদে অন্য কোন আমলকারী নেই, এবং যখন তিনি এই তিনটি গুণাবলীর চেয়েও বড় এবং বৃহত্তর একটিকেও জানেন তখন কেউ আমার রূপের কাছে পৌঁছে যায়, তখন একজন আমার মতো হয়ে যায়।

               যখন কোনও মানুষ প্রকৃতির তিনটি গুণাবলীর aboveর্ধ্বে উঠে যায়, যখন সে সমস্ত দেহ থেকে জন্মে সাত্বগুণ, রাজোগুন এবং তমোগুনকে অতিক্রম করে, তখন সে জন্ম ও মৃত্যু, বৃদ্ধ বয়স ও দুঃখ থেকে মুক্ত হয় এবং তারপরে সে অনন্ত জীবন লাভ করে।

              অর্জুনের কৌতূহল জাগ্রত হয়, তিনি আরও জানতে চান এবং শ্রীকৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করেন: প্রিয় প্রভু, আমরা কীভাবে সেই ব্যক্তিকে চিনতে পারি যে প্রকৃতির তিনটি গুণাবলীর aboveর্ধ্বে উঠে গেছে?  তার আচরণ কীভাবে এবং সে তিনটি গুণাবলীর বাইরে কীভাবে যায়?

            ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে ব্যাখ্যা করেছেন: পার্থ, যে ব্যক্তি প্রকৃতির তিনটি গুণাবলীর personর্ধ্বে উঠে এসেছেন তিনি হলেন, যখন আলোক, সংযুক্তি এবং মায়া তার মধ্যে থাকে, তখন তিনি সেগুলিকে মন্দ হিসাবে বিবেচনা করেন না এবং যখন এগুলি চলে যায়, বা  যখন তারা অনুপস্থিত থাকে, তখন তিনি তাদের কামনা করেন না বা তাদের অনুসরণ করেন।

           তিনি সর্বদা সন্তুষ্ট হন, তিনি সর্বদা আকাঙ্ক্ষার হাত থেকে মুক্ত থাকেন, গুণাবলীর খেলাধুলায় তিনি তার সমস্ত ক্রিয়াকলাপ দ্বারা প্রভাবিত হন না, তিনি শান্ত থাকেন, নিঃসন্দেহে এবং উদগ্রীব থাকেন এবং তিনি বুঝতে পারেন যে এটি কেবল সেই বৈশিষ্ট্যই যা কাজ করে এবং অন্য কেউ নয়  , এবং এটি জেনে তিনি স্থির, অবিচল ও শান্ত দাঁড়িয়ে আছেন।

          এ জাতীয় দুঃখ ও আনন্দকে একই বলে বিবেচনা করে।  তিনি সর্বদা তাঁর আত্মায়, তাঁর আত্মায় প্রতিষ্ঠিত হন।  তিনি কাদা, পাথর, রত্ন, হীরা, স্বর্ণ ও রৌপ্যের মধ্যে পার্থক্য করেন না;  তিনি এই সমস্ত একই বিবেচনা।  তিনি ভাল এবং খারাপ জিনিস, ভাল মন্দ পরিস্থিতি এবং পরিস্থিতি একই হিসাবে বিবেচনা করে।

             তিনি ধৈর্যশীল;  তিনি প্রশংসায়, দোষে, সম্মানে ও অসম্মানেও সমান।  তিনি একইভাবে বন্ধুদের সাথে এবং শত্রুদের সাথে আচরণ করেন।  তিনি সমস্ত ক্রিয়া ত্যাগ করেছেন তেমনি এই ক্রিয়াগুলির পুরষ্কারও দিয়েছেন।

                যেমন একটি মহান।  তিনিই সেরা, এবং কথিত আছে যে তিনি গুণাবলীর aboveর্ধ্বে উঠেছিলেন, গুনস, প্রকৃতির বৈশিষ্ট্যকে অতিক্রম করেছেন।

          যে ব্যক্তি দোলাচল না করে এবং সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে আমার সেবা করে সে তিনটি গুনের ওপরে উঠে যায়;  তিনি তিনটি গুণকে অতিক্রম করেন এবং পরমেশ্বরের কাছে পৌঁছান।

           এবং যেহেতু আমি আবাসস্থল, তাই আমি অমর, অবিনাশী ব্রহ্ম এবং অনন্ত ধর্মের, অনন্ত ধার্মিকতার এবং পরম সুখের বাসিন্দা, যিনি সম্পূর্ণ নিষ্ঠা, বিশ্বাস ও আনুগত্যের সাথে আমার উপাসনা ও সেবা করেন,  সে তিনটি গুণাবলীর aboveর্ধ্বে উঠে আমার কাছে আসে।
                                                         চতুর্দশ অধ্যায়ের সমাপ্তি
                                                      ওম শান্তি শান্তি ওএম

গীতার অধ্যায় ১৩

অধ্যায় ১৩
                  ত্রয়োদশ অধ্যায়ে ভগবান কৃষ্ণ কর্মের ক্ষেত্র সম্পর্কে, কর্মক্ষেত্রের জ্ঞানদাতা, আত্মা, আত্মা এবং পদার্থ সম্পর্কে, প্রকৃতি, জ্ঞান ও অজ্ঞতা সম্পর্কে, পরব্রহ্ম, পরম এবং পরিত্রাণের বিষয়ে বলেছেন।


                                                                অধ্যায়

                   অর্জুন কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করলেন: কেশব, ক্ষেত্র কী, এবং ক্ষেত্রজ্ঞ কী?  জ্ঞান কী এবং সেই জ্ঞানের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য কী?

                  শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে ব্যাখ্যা করেছেন: পার্থ, এই দেহটি ক্ষেত্র, এটি সেই ক্ষেত্র যেখানে সমস্ত ক্রিয়া হয় এবং যেখানে সেই ক্রিয়াগুলির পুরষ্কার কাটা হয়।  এটি প্রকৃতি এবং বিষয়ও।

            তিনি, যিনি মাঠ এবং ক্ষেত্রের কাজ সম্পর্কে সত্য জানেন, তিনি ক্ষেত্রের জ্ঞানী, ক্ষেত্রজ্ঞ নামে পরিচিত।

            সমস্ত ক্ষেত্রগুলিতে, আমাকে সমস্ত ক্ষেত্রের জ্ঞানী হিসাবে জানেন।

           মাঠের জ্ঞান সম্পূর্ণরূপে বুঝতে এবং ক্ষেত্রের জ্ঞানদাতা, উভয়কেই বোঝা, আমার দ্বারা সত্য জ্ঞান হিসাবে বিবেচিত।

                  এখন আমি আপনাকে সংক্ষিপ্তভাবে বলব ক্ষেত্রটি কী, এটি কী ধরণের, কোথা থেকে এসেছে, এর পরিবর্তনগুলি কী, ক্ষেত্রের জ্ঞানী কে এবং তাঁর ক্ষমতাগুলি।

                 প্রাচীন Sষিগণ বিভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে ক্ষেত্র এবং এর জ্ঞান সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন এবং এগুলি প্রাচীন শাস্ত্রেও বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে।

                   সংক্ষেপে, এর বিভিন্ন সংশোধনীর সাথে ক্ষেত্রের বিভিন্ন অংশ হ'ল:

                  পাঁচটি মৌলিক উপাদান, যা পৃথিবী, জল, আগুন, বাতাস এবং আকাশ,

                   দশটি ইন্দ্রিয় অঙ্গ, যার মধ্যে পাঁচটি জ্ঞানের অঙ্গ - চোখ, কান, নাক, জিহ্বা এবং ত্বক,

                  পাঁচটি হ'ল ক্রিয়াকলাপের অঙ্গ- বাকের অঙ্গ, লোকচোখের জন্য অঙ্গ, লোভের জন্য অঙ্গ, মলত্যাগের অঙ্গ এবং প্রজন্মের অঙ্গ।

                   পাঁচটি ইন্দ্রিয়-রূপ, গন্ধ, স্বাদ, স্পর্শ এবং শব্দের বস্তু,

                    এবং এছাড়াও, অহং, বুদ্ধি এবং প্রকৃতির তিনটি বৈশিষ্ট্য Sat সত্যবগুন, রাজোগুন এবং তমোগুনা, একটি প্রকাশ্য রূপে,

                   মন, আকাঙ্ক্ষা, ঘৃণা;  শারীরিক শরীর, ধৈর্য;  এবং ধৈর্য

                      এই সমস্ত একসাথে ক্ষেত্র গঠন।

                   এবং জ্ঞান হ'ল: অহংকার এবং অহংকারের অনুপস্থিতি, ছলনার অভাব, অহিংসা, ক্ষমা, ধৈর্য এবং ধৈর্য, ​​মনের সরলতা এবং বাক্য,

                শিক্ষককে ভক্তি ও বিশ্বাস, দেহ ও মন উভয়ের বিশুদ্ধতা, স্থিরতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ, ইন্দ্রিয়ের বস্তু থেকে হতাশার বিচ্ছিন্নতা এবং বিচ্ছিন্নতার সাথে শিক্ষকের সেবা করা,

                  অহংকারীর অনুপস্থিতি, "আমি," "আমার" এর অনুভূতি পুত্র, কন্যা, স্ত্রী এবং বাসস্থানের প্রতি কোনও সংযুক্তি নয়, আকর্ষণের অনুপস্থিতি, একই রকম আনন্দদায়ক এবং অপ্রীতিকর অবস্থায় রয়েছে,

                    আমার প্রতি অবিচ্ছিন্ন নিষ্ঠা, এবং যা কিছু হোক না কেন আমার ধ্রুবক উপাসনা।

                নির্জন জায়গায় বাস করা, এবং মানুষের ভিড় দূরে সরিয়ে রাখা।

                    ক্রমাগত নিমগ্ন এবং শোষিত হয়ে আত্মার জ্ঞানে রয়েছি।

                    প্রতিটি উপাদানে প্রভুকে সন্ধান করা, এবং সর্বত্র তাঁকে দেখতে।

                     এটি সমস্তই সত্য জ্ঞান এবং যা কিছু এর বিপরীতে এবং সমস্ত কিছু অজ্ঞতা।

                এখন আমি আপনাদের বলব যে কোনটি জ্ঞানযোগ্য এবং জেনে রাখা কোনটি, পরম সুখ লাভ করে, একজনই পরম মুক্তি লাভ করে।

           এটি পরব্রহ্ম, পরম, যা শুরু না করেই, যা চিরন্তন ও চিরন্তন।  এটি সত্য এবং অবাস্তব, বাস্তব এবং অবাস্তব beyond

               এর হাত পা, মাথা, মুখ, চোখ এবং কান সর্বত্র রয়েছে, সমস্ত দিকে মুখ করে।

                সমস্ত বস্তু এবং সমস্ত কিছুর বিস্তৃতি, এটি বিশ্বে বাস করে।

               এটিতে সমস্ত ইন্দ্রিয়ের বৈশিষ্ট্য এবং গুণাবলী রয়েছে এবং তবুও এটি তাদের ছাড়াও রয়েছে।

                এটি অপরিবর্তিত রয়েছে এখনও এটি সমস্ত সমর্থন করে।  এটি কোনও বৈশিষ্ট্য ছাড়াই, তবুও এটি সমস্ত বৈশিষ্ট্য উপভোগ করে।

               এটি সমস্ত অ্যানিমেট এবং নির্জীব বস্তুগুলির ভিতরে, চলমান এবং অচলিত এবং এটি তাদের বাইরেও রয়েছে।

                এটি চলাফেরা করে, এবং এটি নড়ে না।  এটি এত সূক্ষ্ম যে এটি জানা যায় না।  এটি খুব দূরে এবং এখনও এটি খুব কাছাকাছি।

                এটি অবিভাজ্য, তবুও এটি উপস্থিত সমস্ততে বিভক্ত বলে মনে হয়।

                এটি বোঝা উচিত, এটি সকলকে লালন ও পুষ্টি জোগায়, এগুলি তাদের ধ্বংস করে এবং আবার নতুন করে এনে দেয়, তাদের আবারও নতুন জীবন দেয়।

               এটি আলোর আলো।  এটি অন্ধকারের বাইরে এবং এটি অন্ধকারকেও দূর করে।

              এটি জ্ঞান এবং এটি জ্ঞানের অবজেক্ট এবং এটি জ্ঞানের লক্ষ্যও।

               এটি সকলের অন্তরে বাস করে।

                এইভাবে ক্ষেত্র, জ্ঞান এবং জ্ঞানের বস্তুটি সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়েছে।

              যে কেউ এটি বুঝতে পারে, সে আমার মর্যাদা অর্জনে সক্ষম হয়।

               এটিকে খুব ভালভাবে বুঝতে পারুন যে আত্মা এবং প্রকৃতি উভয়ই শুরু না করেই, এবং এও বুঝতে পারছেন যে সমস্ত সৃষ্টির মধ্যেও সমস্ত ত্রুটি, এবং তার মধ্যেও সমস্ত ভাল গুণাবলীর জন্ম সেই প্রকৃতিরই।

               প্রকৃতি পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া সমস্ত কিছুর কারণ।  সমস্ত প্রাণীর দেহ তথা ইন্দ্রিয়গুলি সমস্তই প্রকৃতির জন্ম।

            সমস্ত ক্রিয়াকলাপ, সমস্ত ক্রিয়াকলাপ এবং এই সমস্ত ক্রিয়া ও ক্রিয়া করার মাধ্যম এবং এজেন্সি প্রকৃতির কারণেই।

              কিন্তু প্রাণীদের জীবদ্দশায় সুখ ও দুঃখের অভিজ্ঞতা আত্মার আত্মার কারণে।

               প্রকৃতিতে অবস্থিত, আত্মা প্রকৃতির বৈশিষ্ট্যগুলি অনুভব করে, এটি তাদের উপভোগ করে।  এই বৈশিষ্ট্যগুলির সাথে এটি সংযুক্তি যা মানুষের জন্য ভাল বা খারাপ শ্রেণির জন্মের কারণ।

              তবে শরীরে আরও একটি সুপরিচিত উপভোগকারী রয়েছেন, যিনি হলেন প্রভু, সাক্ষী, তিনিই অনুমোদন দেন, যিনি সমর্থন করেন, উপভোগ করেন, তিনি মহান পালনকর্তা, পরমাত্ম বলে ডাকে।

              যিনি, এইভাবে আত্মা এবং বিষয়, আত্মা এবং প্রকৃতি তাদের গুণাবলী সহ জানেন, তিনি বর্তমানে কোন পদক্ষেপই রাখেন না কেন, তিনি আর জন্মগ্রহণ করবেন না।

             কেউ ধ্যানের মাধ্যমে নিজের মধ্যে প্রভুকে দেখার চেষ্টা করেন, কেউ জ্ঞানের মাধ্যমে, আবার কেউ তাঁকে নিঃস্বার্থ কর্মের যোগ দিয়ে দেখার চেষ্টা করেন।

             তবে আরও অনেকে আছেন, যারা ধ্যান, জ্ঞান এবং নিঃস্বার্থ কর্মের এই পথগুলি জানেন না।  এ জাতীয় লোকেরা আমার সম্পর্কে জ্ঞানী ও জ্ঞানবানদের কাছ থেকে শুনে এবং বিশ্বাস করে এবং যা শুনেছিল তাতে বিশ্বাস করে তারা আমার উপাসনা শুরু করে এবং আমার এই ইবাদতের মাধ্যমে তারাও মৃত্যুকে অতিক্রম করে।

             পার্থ, এটি বুঝতে পারুন যে এই পৃথিবীতে যা কিছু জন্মগ্রহণ করে, প্রাণবন্ত বা নির্জীব, চলমান বা অচলিত, আত্মা এবং বিষয়গুলির মিলনের ফলেই আত্মা ও প্রকৃতির মিলনের ফলেই জন্মগ্রহণ করে, কারণ এই দু'জনের যোগদানের কারণে।

              যে ব্যক্তি একই আত্মা, একই আত্মা, প্রতিটি বস্তুতে বাস করে এবং সেই বস্তুর উপরে বিনষ্ট হয় বা ধ্বংস হয়, যে আত্মাকে, আত্মাকে ধ্বংস হয়ে দেখছে না, সে সত্যই দেখে, সে সত্যকে দেখে।

              যেহেতু তিনি সর্বত্র প্রভু .শ্বরকে একই রূপে দেখেন, তাই তিনি নিজের দ্বারা নিজের পক্ষে কোনও ঝামেলা সৃষ্টি করেন না, এবং তারপরে তিনি পরমেশ্বর হয়ে ওঠেন, তিনি মুক্তি লাভ করেন।

              যে ব্যক্তি দেখেন যে সমস্ত ক্রিয়া এবং ক্রিয়াগুলি কেবলমাত্র দেহ দ্বারা সম্পন্ন হয়, যা প্রকৃতির দ্বারা জন্মগ্রহণ করে এবং যে এটি আত্মা, আত্মা ক্রিয়া সম্পাদনকারী নয়, সে সত্যই জানে এবং সে সত্যই বুঝতে পারে।

             যখন তিনি এটি বুঝতে পেরেছেন যে, যদিও সমস্ত কিছু পৃথক পৃথক বলে মনে হয় তবুও তারা সেই একেই কেন্দ্রীভূত হয়, যার কাছ থেকে পুরো সৃষ্টিটি উদ্ভূত হয় এবং ছড়িয়ে পড়ে, যার কাছ থেকে এই পুরো বিস্তৃতি ঘটে, তখন তিনি পরম পরাক্রান্তকে লাভ করেন।

              কারণ পরমাত্মা, পরমাত্মা শুরু না করেই অনিবার্য, গুণাবলিহীন, দোষহীন, গুণাবলিহীন, অতএব, যদিও তিনি দেহে থাকেন, তবুও তিনি কোনও কাজ করেন না, কোনও ক্রিয়াও করেন না, এবং না  তিনি কোন কাজের সাথে যুক্ত, না তিনি কোন কাজ বা কোনও কাজের দ্বারা আবদ্ধ।

             সমস্ত বিস্তৃত বায়ুমণ্ডল যেমন তার সূক্ষ্মতার কারণে কোনও কিছুর সাথে বা কোনও বস্তুর সাথে জড়িত হয় না, তেমনি কোনও কিছুর সাথে আটকেও যায় না, তেমনি, দেহ-বাসিন্দা, আত্মা, আত্মাও করেন না  মৃতদেহের সাথে সংযুক্ত থাকুন, এটি দখলকৃত মৃতদেহের সাথে আটকা পড়ে না।

            যেমন একটি একক সূর্য পুরো বিশ্বকে আলোকিত করে, ঠিক তেমনিভাবে মাঠের প্রভু তাঁর পুরো ক্ষেত্র আলোকিত করেন।

             এইভাবে, সেই সমস্ত লোকেরা, যারা তাদের জ্ঞানের চোখ দিয়ে ফিল্ড এবং এর জ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য জানেন, যারা উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম এবং যারা সমস্ত প্রাণীকে কীভাবে মুক্তি দিতে পারে তার উপায়, পদ্ধতিও জানেন know  প্রকৃতি থেকে, তারা অবশ্যই সেই জ্ঞান দিয়ে সর্বোচ্চ লক্ষ্য অর্জন করে।


                                                              ত্রয়োদশ অধ্যায়ের সমাপ্তি
                                                          ওম শান্তি শান্তি ওএম

গীতার অধ্যায় ১২

অধ্যায় ১২

                দ্বাদশ অধ্যায়ে, শ্রীকৃষ্ণ একটি ব্যক্তিগত Godশ্বরের উপাসনা সম্পর্কে বলেছেন, রূপ ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে, এবং ব্রহ্মের পূজা সম্পর্কে, পরম, যিনি রূপ ও গুণাবলী ছাড়াই আছেন;  এবং এই জাতীয় উপাসনার ফল।  তিনি তাঁর বিভিন্ন ভক্তের বর্ণনাও দিয়েছেন।


                                                                 অধ্যায়

          অর্জুন কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করেছেন: প্রভু, সেই ভক্ত যারা সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও নিষ্ঠার সাথে আপনার প্রকাশিত রূপের উপাসনা করেন এবং অন্য যে গুণহীন, সেই নিরপেক্ষ, নিরাকার, অবিনাশী ব্রহ্মের উপাসনা করেন, তাদের মধ্যে কোনটি যোগে আরও দক্ষ।

           শ্রীকৃষ্ণ জবাব দিলেন: পার্থ, যারা আমার মনকে আমার প্রকাশ্য রূপে প্রয়োগ করেন এবং পরম বিশ্বাস ও নিষ্ঠার সাথে আমার উপাসনা করেন, এগুলিকে আমি যোগে আরও দক্ষ বলে বিবেচনা করি।

             যারা তাদের সমস্ত ইন্দ্রিয়কে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন করে, অবিচ্ছিন্নভাবে, কোনও বিড়বিড়তা ছাড়াই, একক পয়েন্ট একাগ্রতার সাথে এবং সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও নিষ্ঠার সাথে অদৃশ্য ব্রহ্মের উপাসনা করেন, যিনি মন এবং বুদ্ধির বাইরে, সমস্ত বিস্তৃত, কে অবর্ণনীয় এবং যিনি  সর্বদা একই, যিনি স্থায়ী, অস্থাবর, নিরাকার এবং সব পরিস্থিতিতে একই, তারাও অন্যদের মতো আমার কাছে কেবল পৌঁছে যায়।

            তবে যারা অবিচ্ছিন্ন উপাসনা করেন তাদের অসুবিধা প্রকৃতপক্ষে খুব দুর্দান্ত, কারণ অবিশ্বাস্যর লক্ষ্যটি মূর্তপ্রাপ্তদের পক্ষে অর্জন করা খুব কঠিন।

              যে সমস্ত লোক আমার কাছে তাদের সমস্ত ক্রিয়াকলাপ আমাকে পেশ করে, প্রকাশ্য প্রভু গুণাবলীর সাথে এবং যারা সর্বদা আমার উপর ধ্যান করে, পুরোপুরি বিশ্বাস এবং নিষ্ঠার সাথে আমার উপাসনা করে, যারা সর্বদা তাদের সমস্ত চিন্তা আমার উপর মনোনিবেশ করে, আমি দ্রুত তাদের এই সীমাবদ্ধ থেকে মুক্তি দিই এবং  সীমিত বিশ্ব, যা মৃত্যুর দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়।

              সুতরাং, পার্থ, আপনার মন এবং বুদ্ধি কেন্দ্রীভূত করুন এবং তাদের উভয়ই আমার কাছে সমর্পণ করুন।  এর পরে, নিঃসন্দেহে, আপনি আমাকে অর্জন করবেন।

              আপনি যদি আপনার মন এবং বুদ্ধি কেন্দ্রীভূত করতে অক্ষম হন এবং এগুলি আমার কাছে আত্মসমর্পণ করতে অক্ষম হন তবে আমার কাছে পৌঁছানোর জন্য আপনার মন এবং বুদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অভ্যাসের অভ্যাসের পদ্ধতি অবলম্বন করুন।

              আপনি যদি এটি করতে অক্ষম হন তবে আমার সেবা করুন, আমার সেবা করুন, আপনার সর্বোচ্চ লক্ষ্য হিসাবে এবং কেবল আমার জন্য কাজ করুন।  শুধুমাত্র আমার জন্য কাজ করে আপনি মুক্তি পাবেন।

               আপনি যদি এটি করতেও অক্ষম হন তবে আপনার মন এবং বুদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে আমার কাছে আসুন, আমার আশ্রয়ে আসুন, এবং পুরষ্কারগুলি ছেড়ে দিন, ফলগুলি ছেড়ে দিন, আপনার সমস্ত ক্রিয়াকলাপ।

              জ্ঞান অভ্যাস বা অনুশীলনের চেয়ে উত্তম, জ্ঞানের সাথে ধ্যান করা, জ্ঞানের চেয়েও ভাল এবং এ জাতীয় ধ্যানের চেয়েও ভাল, ত্যাগ করা, সমস্ত ফল, কর্মের সমস্ত পুরষ্কারকে বঞ্চিত করা, কারণ এ জাতীয় ত্যাগের সাথে  , শান্তি এবং প্রশান্তি অবিলম্বে আসে।

              যে ব্যক্তি কাউকে ঘৃণা করে না, যে সকলকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসে, যিনি সমবেদনাশীল, অহংকার এবং সংযুক্তি থেকে মুক্ত, যিনি দুঃখে এবং সুখে একই থাকেন, যিনি ধৈর্যশীল, সর্বদা সন্তুষ্ট, যিনি নিজেকে বজায় রাখেন, তার সাথে  মন এবং তার ইন্দ্রিয়গুলি, নিয়ন্ত্রণে থাকা, কে দৃ resolve় সংকল্পবদ্ধ, কে দৃ determination় সংকল্পবদ্ধ, এবং যিনি আমার মন এবং বুদ্ধি উভয়কেই আমার কাছে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করেছেন, আমার এইরকম ভক্তি আমার কাছে অত্যন্ত প্রিয়।

              যে কারও জন্য দুঃখের কারণ নয় এবং যে অন্যের দুঃখে বিস্মিত হয় না;  কে জগতকে ভয় পায় না, এবং বিশ্ব যাদের ভয় করে না, আমার এইরকম ভক্ত আমার কাছে প্রিয়।

              যিনি কারও কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করেন না, যিনি ভিতরে এবং বাইরে শুদ্ধ, কর্মে দক্ষ, কে উদ্বেগ থেকে মুক্ত এবং যিনি তার কোনও কর্মের প্রতিদান পেতে কোন প্রয়াস করেন না, তিনিই আমার এই ভক্ত প্রিয়  আমাকে.

               যে ব্যক্তি সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট হয় না, যে ঘৃণাও করে না বা কামনা করে না, যে ভাল ও মন্দ উভয়ই কাজ ত্যাগ করে এবং এইভাবে আমার উপাসনা করে, আমার এইরকম ভক্ত আমার কাছে প্রিয়।

            যে বন্ধু এবং শত্রুদের মধ্যে সম্মান ও অসম্মানে, উত্তাপে এবং শীতে, দুঃখে এবং সুখে, প্রশংসায় ও দোষে একই থাকে;  যিনি সকল পরিস্থিতিতেই অকারণে রয়েছেন, যিনি সংযুক্তি থেকে মুক্ত, যিনি তাঁর কথা ও তাঁর বক্তব্যকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন এবং যে তাঁর পথে যা আসে তাতে সন্তুষ্ট হন, যার কোনও বাসস্থানের সংযুক্তি নেই, এবং যার বুদ্ধি স্থির থাকে, যেমন ভক্ত  আমার মধ্যে আমার প্রিয়।

            তবে সেই ভক্তরা আমার নিকট প্রিয়, যারা পুরো বিশ্বাসের সাথে আমাকে তাদের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হিসাবে গড়ে তুলেছে, আমার সাথে পুরোপুরি যোগদান করে এবং আমার দ্বারা উপরে বর্ণিত চিরন্তন জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে পুরোপুরি অনুসরণ করে।


                                                       দ্বাদশ অধ্যায়ের সমাপ্তি
                                                   ওম শান্তি শান্তি ওএম